• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
উপড়ে পড়ছে যশোর-বেনাপোল সড়কের শতবর্ষী গাছ

ফাইল ছবি

জাতীয়

উপড়ে পড়ছে যশোর-বেনাপোল সড়কের শতবর্ষী গাছ

  • শহিদ জয়, যশোর
  • প্রকাশিত ১২ অক্টোবর ২০১৯

ঝড় নেই, নেই ভারি বৃষ্টিপাত। তারপরও রক্ষা করা যাচ্ছে না যশোর-বেনাপোল সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ শতবর্ষী গাছগুলো। সড়কটি সংস্কারের মধ্যেই রাস্তার ধারে এসব প্রাচীন গাছগুলো আচমকা উপড়ে পড়ছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শত শত যানবাহন। এ অবস্থায় সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শতবর্ষী দুই হাজারেরও বেশি গাছ কেটে যশোর-বেনাপোল সড়ক সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এ সিদ্ধান্তের পর এসব গাছ রক্ষায় সরব হয়ে ওঠে কতিপয় সুশীল সমাজের লোকজন ও পরিবেশবাদীরা। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। শুরু হয় সড়কের দুই পাশে গাছ রেখে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ। ফলে মহাসড়ক সংস্কারে ঝুঁকিতে পড়ে সড়কের শতবর্ষী গাছগুলো। সড়ক সংস্কার করতে গিয়ে পাশের মাটি কেটে সাড়ে তিন ফুট গভীর করার কারণে অধিকাংশ গাছের শিকড় কাটা পড়ে বলে পরিবেশবিদরা অভিযোগ করে আসছেন। এদিকে দিন যত যাচ্ছে ততই এই সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ গাছ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সড়কের তিন জায়গায় শতবর্ষী তিনটি গাছ উপড়ে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের ঝিকরগাছার অংশে হাজের আলী বাজারের কাছে একটি প্রাচীন রেইনট্রি গাছ উপড়ে পড়ে আছে। স্থানীয়রা জানান, আধামরা এ গাছটি গত দেড় সপ্তাহ আগে ভেঙে রাস্তার পাশে পড়ে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সড়কের পাশের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গাছটির মাটির নিচের শিকড় অক্ষত থাকলেও গোড়ার দিক থেকে পচে যাওয়ায় ভেঙে পড়ে। এ সময় কোনো ঝড়বৃষ্টি না হলেও বিকট শব্দ করে গাছটি মাটিতে ন্যুয়ে পড়ে।

সাহেব আলী নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, গত দেড় মাসে এই সড়কের তিনটি স্পটে এভাবে গাছ উপড়ে পড়েছে। এর মধ্যে গত মাসে নাভারন কলোনি বাজার, পায়রা বাজারের পুরন্দরপুরে ও চলতি মাসে হাজের আলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, এ সড়কে এরকম অন্তত ১০০ গাছ রয়েছে যা যেকোনো সময়ে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রমজান আলী নামে আরেকজন পথচারী বলেন, সড়ক সংস্কারের সময় ড্রিল-হ্যামার ও এসকেভেটর দিয়ে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির সময় অনেক গাছের শিকড় কাটা পড়েছে। পাশাপাশি গাছের গোড়াও নড়বড়ে হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে বড় গাছগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়া সড়কের দুই ধারের বিভিন্ন জায়গায় গাছ মরে শুকিয়ে গেছে। এসব গাছ যখন তখন ভেঙে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, সড়কের আশপাশের বিভিন্ন বাজারসংলগ্ন অনেক গাছের গোড়া ও ডাল শুকিয়ে গেছে। এ ধরনের গাছগুলোই এখন মানুষের জন্য আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। এসব মৃতপ্রায় গাছ দ্রুত অপসারণের দাবি জানান তিনি।

এদিকে সড়কের পাশের বাসিন্দারা ইতোমধ্যে এসব মৃতপ্রায় ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণের জন্য যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন। লিখিত আবেদনে তারা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এসব গাছ কেটে ফেলার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ওই সড়কের পাশের বাসিন্দাদের দেওয়া আবেদনের কথা সঠিক বলে জানান। তিনি বলেন, সড়কের পাশের ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের আবেদনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আমরা ইতোমধ্যে বন বিভাগের লোকজনের মাধ্যমে মরা গাছগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। এসব গাছ চিহ্নিত করার পর টেন্ডারের মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে অপসারণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads