• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

সব নিজের কব্জায় রাখতে চান ওয়াসার এমডি

পানযোগ্য পানি সরাসরি সরবরাহের নির্দেশ

  • সাইদ আরমান
  • প্রকাশিত ২১ অক্টোবর ২০১৯

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান সবকিছু একা করতে চান। সবকিছু তিনি নিজের কব্জায় রাখতে চান। ফলে নানা ধরনের বিচ্যুতি হচ্ছে এ সেবা সংস্থাটির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে। এ অবস্থায় সংস্থাটির কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা আনার পাশাপাশি এমডিকেও জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে ওয়াসার পানি যাতে সরাসরি পান করা যায় সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

গতকাল রোববার ওয়াসার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি। ওই বৈঠকে ওয়াসার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তারিত জানতে চেয়েছে কমিটি। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।   

সূত্র জানায়, বৈঠকে ঢাকা ওয়াসার অডিট রিপোর্ট, জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত পদক্ষেপ, সুপেয় পানি সরবরাহের বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ, ওয়াসার কার্যক্রম সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত অনিয়ম দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ বাংলাদেশের খবরকে গতকাল বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুম চলছে। ৬ মাস এই পরিস্থিতি থাকবে। তাই যেসব জায়গায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয় সেসব এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করতে এখনোই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে গত ১১ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে এসব উন্নয়ন প্রশ্নের মুখে পরে যখন ঢাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। মেট্রোরেল হচ্ছে, ওভারব্রিজ হচ্ছে। কিন্তু ঢাকা যখন পানির নিচে চলে যায় তখন আর সেটি থাকে না।

সাতবারের এই সংসদ সদস্য বলেন, এমডি সবকিছু একা করতে চান। উনি অভিজ্ঞ লোক এটা ঠিক। তিনি সব একা করতে চান বলে অনেকে বাধা তৈরি করে। একইভাবে স্থানীয় সরকার সচিবকেও বলা হয়েছে। সবার মধ্যে কাজ বণ্টন করে দিতে যাতে সবাই দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসে। সবাইকে দায়িত্ব না দিলে কাজে গতি আসবে না। দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়ে তাদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, ঢাকার পরিস্থিতি আগে আরো খারাপ ছিল। এখন গত কয়েক বছরে সেটি নাই। মানুষ এখন পানির জন্য মিছিল করে না। তবে সুপেয় পানির সংকট। কিন্তু পানি উৎস পর্যায়ে ভালো। সরবরাহ পর্যায়ে গিয়ে ঝামেলা তৈরি হচ্ছে। পাইপ লাইনে পানি যখন বাসাবাড়িতে যাচ্ছে এবং রিজার্ভ ট্যাংকির কারণে পানি সরাসরি পান করা যাচ্ছে না। ওয়াসাকে বলা হয়েছে, পানির ট্যাংকিং বাসাবাড়িতে ঠিকমতো পরিষ্কার করা হচ্ছে কি না তা তদারকি করতে। এ জন্য একটি বিশেষ টিম গঠন করতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বাসাবাড়ির পানির ট্যাংকি নির্ধারিত সময় পর পরিষ্কার করতে হবে। আমরা আবার বৈঠক করে এসব ফলোআপ করব। ঢাকায় এখন প্রায় দুই কোটি মানুষ বাস করে। ফলে চাহিদা বাড়ছে।

আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে গতকাল সংসদ ভবনে এ বৈঠকে কমিটির সদস্য ইসমাত আরা সাদেক, মো. মাহবুব-উল আলম হানিফ, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং মুহিবুর রহমান মানিক অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, ওয়াসার মাধ্যমে পাইপ লাইনে সরবরাহকৃত পানি মানুষ যাতে সরাসরি পান করতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কমিটি সুপারিশ করে। কমিটি ঢাকা শহরের যেসব জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় সেসব জায়গায় জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্ষার আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে।

সূত্রমতে, হাড়ে হাড়ে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ঢাকা ওয়াসা মাঝেমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিদিনের কার্যক্রম থেকে শুরু করে চলমান ও বাস্তবায়িত সব প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিয়োগ নিয়েও অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এমডির দেশে ও বিদেশি একাধিক ব্যাংক হিসাবের তথ্য মিলেছে। রয়েছে একাধিক বাড়ি ও জমি। এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এমডি নিজের পক্ষে সাফাই তুলে ধরে তথ্যগুলো ঠিক নয় বলে সংসদীয় কমিটিকে জানায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads