• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

বাংলাদেশে জঙ্গি কর্মকাণ্ড কমেছে : যুক্তরাষ্ট্র

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৩ নভেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার গতি ও মাত্রা ধারাবাহিকভাবে কমেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেররিজম-২০১৮’ শীর্ষক বৈশ্বিক বার্ষিক জঙ্গিবাদবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়।

দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০১৮ সালের জঙ্গিবাদ পরিস্থিতি সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার গতি ও মাত্রা ধারাবাহিকভাবে কমেছে। যদিও পৃথক ঘটনায় একজন সেক্যুলার লেখক খুন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক গুরুতর আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়ে হামলা পরিকল্পনা নস্যাৎ, সন্দেহভাজন জঙ্গি নেতাদের গ্রেপ্তার, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরকদ্রব্য জব্দ করেছে। তবে জঙ্গিদের সফল বিচারের ক্ষেত্রে বিচারিক বাধা ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সফলতাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ম্লান করেছে বলে এতে অভিযোগ করা হয়েছে। জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গিদের ভূস্বর্গ হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে না দিতে বাংলাদেশ সরকার ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশ সরকার প্রায়ই হামলার জন্য স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে দায়ী করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে ২০১৫ সাল থেকে প্রায় ৪০টি হামলার দায় স্বীকার করেছে ভারতীয় উপমহাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠী আলকায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট (একিউআইএস) ও আইএস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে অনুসারী দলে টানতে ও নিজেদের মতাদর্শ ছড়িয়ে দিতে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করছে। আইএস এবং একিউআইএস তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনা, ভিডিও ও ওয়েবসাইটে বাংলাদেশি জঙ্গিদের উপস্থাপন করেছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, ২০১৮ সালেও বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় ছিল। আইনটিতে ২০১২ ও ২০১৩ সালে সংস্কার আনা হয়। ৫ এপ্রিল সরকার বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। 

ঢাকার বিশেষ আদালতে প্রথম মামলা হিসেবে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় সংশ্লিষ্ট ছয়জনের বিচার শুরু হয়। আইনি ও পদ্ধতিগত বেশকিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও বাংলাদেশ সন্দেহভাজন বিদেশি জঙ্গিদের অন্য অভিযোগে বিদ্যমান আইনেই গ্রেপ্তার করছে।

সীমান্ত ও প্রবেশ বন্দরে নিয়ন্ত্রণ জোরালো করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পদ্ধতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বহাল থাকলেও ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি জানিয়েছে তাদের মানের ৭৭ দশমিক ৪৬ শতাংশই পূরণ করে এটি। ২০১২ সালে সর্বশেষ জরিপের সময় থেকে এ মান ২৬ শতাংশ বেড়েছে। আইনপ্রয়োগ সংক্রান্ত তথ্য ইন্টারপোলের সঙ্গে ভাগাভাগি করলেও দেশটির কোনো সুনির্দিষ্ট ওয়াচলিস্ট নেই। এ ছাড়া তাদের কোনো মিথস্ক্রিয়ামূলক এপিআই সিস্টেম নেই।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটসহ বাংলাদেশ পুলিশের অন্য সব সংস্থা সন্দেহভাজন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান ও গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। এসব অভিযানে অনেক সন্দেহভাজন নিহত হয়েছে। অনেক সময় এগুলোকে ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘শুটআউট’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচির সঙ্গে বাংলাদেশ সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে এবং সংকট মোকাবেলা, প্রমাণ সংগ্রহের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। জঙ্গিবাদ দমনে জাতীয় কমিটি ইমাম ও মওলানাদের নিয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা কার্যক্রম চালাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। পুলিশও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনা সৃষ্টিতে ধর্মীয় নেতাদের সহযোগিতা নিচ্ছে। কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের সন্ধান ও তাদের সহিংস জঙ্গি পন্থায় জড়িয়ে পড়া ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads