• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

সৌদি থেকে এ পর্যন্ত খালি হাতে ফিরেছে ২১ হাজার ১১৭ কর্মী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ নভেম্বর ২০১৯

বছরজুড়েই সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশি শ্রমিকরা খালি হাতে ফিরছেন। ফিরে আসা শ্রমিকদের হতাশা আর চাপা ক্ষোভে ডুবে আছে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর। চলতি মাসের প্রথম দিন থেকেই কর্মীদের ফেরার সংখ্যাটি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। সর্বশেষ গত বুধবার রাতে সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি ৮০৪ বিমানে আরো ৯৬ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর সৌদি থেকে খালি হাতে ফিরে আসা কর্মীর সংখ্যা দাঁড়াল ২১ হাজর ১১৭-এ।

চলতি মাসের ১ তারিখে ১০৪ জন, ২ তারিখে ৭৫ জন, ৩ তারিখে ৮৫ জন, ৪ তারিখে ৬১ জন ও  ৬ তারিখে ৯৬ জন ফিরেছেন। এর আগে গত ৫ অক্টোবর ১২০ জন, ২৭ অক্টোবর ১৬০ এবং ৩১ অক্টোবর ১৫৩ কর্মী ফিরেছেন। বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সৌদি থেকে ২০ হাজার ৬৯২ কর্মী দেশে ফিরেছেন। এ পরিসংখ্যানে যুক্ত হলো নভেম্বরের আরো ৪২১ জন। এরা সবাই ফিরেছেন, একেবারে খালি হাতে, নিঃস্ব হয়ে।

অনেকের গায়ে ছিল কোম্পানির পোশাক, কারো পায়ে ছিল না স্যান্ডেলও। অনেকে পুরনো পোশাক ছাড়া সঙ্গে করে আর কোনো কাপড় আনতে পারেননি। সৌদি আরবের রাস্তায়, দোকানে ধরপাকড়ের কবলে পড়ে এসব বাংলাদেশি শ্রমিক এক কাপড়েই দেশে ফিরেছেন। আকামা (সৌদির রেসিডেন্স পারমিট) বৈধরাও এ ধরপাকড় অভিযানে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে দেশে ফিরছেন।

বুধবার রাতে ফেরাদের একজন হলেন কিশোরগঞ্জের তোফাজ্জল। জানান, সৌদিতে যাওয়ার খরচই জোগাড় করতে পারেননি তিনি। মাত্র আড়াই মাস আগে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। এর মধ্যেই ধরপাকড়ে পড়ে তাকে ফিরতে হলো। গত তিন বছর ধরে সেদেশে চাকরি করছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহিউদ্দিন। সম্প্রতি সাড়ে ১৮ হাজার রিয়াল (প্রায় চার লাখ টাকা) দিয়ে আকাম নবায়নও করেছিলেন। তবু ধরপাকড়ের শিকার হয়ে শূন্যহাতে ফিরতে হলো তাকে।

মহিউদ্দিনের মতোই অভিযোগ গাজীপুরের মো. হান্নান মিয়ার। বলেন, গত ১৫ বছর ধরে সেদেশে ছিলাম। আমার আকামা রয়েছে। ওখানের অধিবাসীরা আমাকে চেনে। এর পরও রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে আমাকে এক কাপড়ে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আকামা দেখিয়েছিলেন কি না জানতে চাইলে বলেন,  দেখিয়েছিলাম, কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। সৌদি পুলিশ তাদের ভুল স্বীকার করে না।

কর্মক্ষেত্র থেকে সৌদি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে দেশে ফিরেছেন নোয়াখালীর জয়নাল, ময়মনসিংহের আলম, জামালপুরের সবুজ মিয়া, বরিশালের মামুনসহ আরো অনেকে। তাদের অনেকেই জমি, ভিটেমাটি বিক্রি করে প্রায় নিঃস্ব হয়ে সৌদিতে গিয়েছিলেন। যাওয়ার খরচ জোগাড় করার সময়ও পেলেন না তারা। তার আগেই ফিরতে হয়েছে তাদের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads