• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সব কৌশল ব্যবহার করছি: কানাডা

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সব কৌশল ব্যবহার করছি: কানাডা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯

কানাডা শনিবার জানিয়েছে,  রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সাহায্য করতে তারা মিয়ানমারের নেতা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ নিজেদের এখতিয়ারে থাকা সব ধরনের কৌশল ব্যবহারের পাশাপাশি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোই প্রেফনটেইন রাজধানীর এক হোটেলে ‘বাংলাদেশ-কানাডা রিলেশনস: প্রোগনোসিস ফর পার্টনারশিপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমরা পুরোপুরি একমত যে এ সংকটের কারণ ও সমাধান রয়েছে মিয়ানমারে এবং এ জন্য সাহায্য করতে আমাদের এখতিয়ারে থাকা সব কৌশল ব্যবহার করছি।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখা পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মো. শহীদুল হক বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ককে এক ঝামেলামুক্ত সম্পর্ক হিসেবে আখ্যায়িত করেন, যা সব ক্ষেত্রে বিকাশ লাভ করছে।

হাইকমিশনার প্রেফনটেইন বলেন, উদ্বাস্তুদের সাহায্য ও স্বাগত জানানোর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে কানাডার এবং তাদের নাগরিকরা রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা কিসের মাঝে রয়েছেন সে বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের স্বাগত জানানো এবং তাদের জন্য সীমান্ত খুলে রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার যে অপরিসীম উদারতা দেখিয়েছে তা কানাডা উপলব্ধি করে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

হাইকমিশনার বলেন, এ সংকটে সাড়া দেয়া প্রথম দেশগুলোর একটি কানাডা এবং শীর্ষ মানবিক সহায়তাকারী হিসেবে তারা বহাল আছেন।

প্রেফনটেইন জানান, কক্সবাজারে সংকট-আক্রান্ত উদ্বাস্তু ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জরুরি চাহিদা পূরণের বিষয়টিকে তারা বিশেষ গুরুত্ব দেন।

এ সময় রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে কানাডার সহযোগিতার প্রশংসা করে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানান, শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের সাহায্য করার ক্ষেত্রেই নয়, সেই সাথে এ ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহির ক্ষেত্রেও কানাডা ব্যতিক্রমী অবদান রাখছে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে দেশটির সামরিক সহিংসতার ঘটনায় কানাডা সিনেটে খুব কঠোর প্রস্তাব পাসসহ ‘অতি সুস্পষ্ট’ পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এ সহিংসতায় নীরব থাকায় বেসামরিক নেতা অং সান সু চির সম্মানজনক কানাডিয়ান নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছে।

‘এটা খুব সুস্পষ্ট, খুব গুরুত্বপূর্ণ ও খুব উৎসাহজনক সিদ্ধান্ত,’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এটা মুখের কথার চেয়েও বেশি কিছু ছিল।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ২০১৭ সালের অক্টোবরে বব রিইকে মিয়ানমারে কানাডার বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেন। বব রিই রোহিঙ্গা সংকটের অন্তর্নিহিত কারণগুলো তুলে ধরে ২০১৮ সালের এপ্রিলে তার প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

রোহিঙ্গা নির্যাতনে জবাবদিহির বিষয়ে বব রিই খুব সরব ছিলেন জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব উল্লেখ করেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও কানাডা খুব নিবিড়ভাবে কাছ করছে এবং দ্য হেগে আগামী দিনগুলোতে দুই দেশ কীভাবে সবচেয়ে ভালো সহযোগিতা গড়ে তুলতে পারে তার সন্ধান চালাচ্ছে।

ড. ইফতেখারও তার বক্তব্যে বাংলাদেশকে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত করা রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে শুরু থেকেই কানাডার সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনে গত ১১ নভেম্বর দ্য হেগে মিয়ানমারের নামে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া।

ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষ থেকে করা এ মামলায় গাম্বিয়া মিয়ানমারের গণহত্যার আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করার ব্যবস্থা বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে জরুরিভাবে আদেশ দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছে।

আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এ মামলার শুনানিতে গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী আবুবাকার মারি তামবাদো এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি নিজ নিজ দেশের আইনজীবীদের নেতৃত্ব দেবেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রাখাইন রাজ্যে সামরিক অভিযান থেকে বাঁচতে কক্সবাজারে প্রবেশ করেছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads