• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
হাওর বিষয়ে বর্ষসেরা লেখক সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশের খবরের এস এম মুকুল

ফাইল ছবি

জাতীয়

হাওর বিষয়ে বর্ষসেরা লেখক সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশের খবরের এস এম মুকুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বর্ষায় দিগন্ত বিস্তৃত অথৈ জলরাশি, শুকনায় ফসল আর চট্টনের সবুজ চারণভূমি। প্রকৃতির অসামান্য এই চারণভূমির নাম হাওর। হাওরের সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশের খবরের আর্থসামাজিক সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ বর্ষসেরা লেখক সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশের খবরের জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক এস এম মুকুল।

গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে তাকে এই সম্মাননা জানায় হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক। হাওরাঞ্চলকে দেশবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত করা, হাওরপাড়ের মানুষের সমস্যা, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ এবং হাওরের উন্নয়ন সম্ভাবনাকে তুলে ধরার লক্ষ্যে হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক একটি সামাজিক সংগঠন হিসেবে কাজ করছে। সংস্থাটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা হাওরের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে হাওরবাসীদের একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে চাই। তিনি বলেন, হাওরের উন্নয়নে এখন সরকারের সুনজর রয়েছে। তবে আমরা মনে করি কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়নই যথেষ্ট নয়, হাওরের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে। আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে একটি প্ল্যাটফর্ম দরকার, হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক সেই কাজটিই করবে।

অনুষ্ঠানে প্রকাশনা উৎসব কমিটির আহ্বায়ক মো. আজিজুল হক বাংলাদেশের খবরকে জানান, হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক’-এর মুখপত্র বার্ষিক ম্যাগাজিন ‘হাওরের হালচাল’-এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। ‘হাওরের হালচাল’ ম্যাগাজিনের প্রথম সংখ্যা প্রকাশনাকে স্মরণীয় করে রাখতেই হাওরের হালচাল ২০২০-এর প্রকাশনা উৎসব ও হাওর পদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এটাই আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। অনুষ্ঠানে হাওরের শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদকে ‘হাওররত্ন-২০২০’ পদক,  হাওর সমাজসেবায় কিংবদন্তি সমাজসেবক ও ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম স্যার ফজলে হাসান আবেদকে ‘হাওরবন্ধু-২০২০’ পদক, হাওর সাংবাদিকতায় অসামান্য অবদান রাখায় প্রবীণ সাংবাদিক, কলাম লেখক ও বিশ্লেষক হাসান শাহরিয়ারকে ‘হাওরবন্ধু-২০২০’ পদক, হাওরে নারী ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদান রাখায় মিঠামইন উপজেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান আলহাজ আছিয়া আলমকে ‘হাওরকন্যা-২০২০’ পদক এবং কৃষি-অর্থনীতি বিশ্লেষক ও কলাম লেখক এবং বাংলাদেশের খবরের সাংবাদিক এস এম মকুলকে ‘হাওরের হালচাল’ ম্যাগাজিনের ‘বর্ষসেরা লেখক-২০২০’ পদক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সম্মাননা পদক হিসেবে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

সংস্থাটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এবারই আমরা প্রথম আয়োজন করেছি। তাই আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আগামী বছর থেকে আয়োজনকে আমরা আরো সমৃদ্ধ করব।

উল্লেখ্য, লেখক এস এম মুকুল বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় উপসম্পাদকীয়তে লেখেন। তিনি ২০০৬ সাল থেকে হাওরের উন্নয়ন সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে লিখে আসছেন। পদক প্রদান অনুষ্ঠানে লেখকের অনুভূতি প্রকাশ করে এস এম মুকুল হাওরের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকারের প্রতি সুপারিশ উপস্থাপন করে বলেন, হাওরের ফসল রক্ষায় স্থায়ী ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, একফসলি নির্ভরতা থেকে হাওরের কৃষকদের ফিরিয়ে আনতে হবে। অকাল বন্যার কবল থেকে হাওরের কৃষকদের বাঁচাতে আরো কম সময়ে উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করতে হবে, হাওর এলাকার উপযোগী কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন করতে হবে, বর্ষাকালীন ৬ মাস হাওরবাসীর জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে, কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করতে হবে, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা প্রসারে শিক্ষক ও চিকিৎসকদের আবাসিক ব্যবস্থা এবং বিশেষ ভাতা বরাদ্দসহ হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সর্বোপরি হাওরের ধান, মাছ, পাখি, হিজল-করচের প্রাকৃতিক বেষ্টনী সৃষ্টি করার পাশাপাশি হাওরের মাটি ও পানি নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন।

এস এম মুকুল বলেন, হাওর এখন সরকারের নজরে এসেছে। হাওর পর্যটন ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে হাওরের উন্নয়নে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের এই উন্নয়ন পরিকল্পনাকে হাওরের স্বকীয়তা বজায় রেখে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে হাওরবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বানে হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্কেও এই উদ্যোগ নতুন দিগন্তের সূচনা করল। তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, হাওর ও জলাভূমি অধিদপ্তর নামে সরকারের একটি সংস্থা রয়েছে। দুঃখজনক হলেও হাওরের উন্নয়নে এই সংস্থাটির কাজ সম্পর্কে হাওরের জনগণ অবহিত নন। এজন্য হাওর অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্কের মতো ফোরামের প্রয়োজনীয়তা অনিবার্য।

উল্লেখ্য, লেখক এস এম মুকুল এর আগে বাংলাদেশে পোল্ট্রি শিল্পের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তর লেখালেখির মাধ্যমে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে পোল্ট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৭ অর্জন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের সুযোগ্য পুত্র কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুল মজিদ খান, সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা; মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আছিয়া আলম; ইটনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান; অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জেমস; মুক্তিযুদ্ধের ফেরিওয়ালাখ্যাত ড. নুজহাত চৌধুরী, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেজ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা হাসান আবেদ, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার) পিপিএম (বার)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মো. আবদুল হক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads