• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

শিগগির মন্ত্রিপরিষদে উঠবে গণমাধ্যমকর্মী আইন

সাংবাদিকদের ছাঁটাই না করার জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শিগগিরই গণমাধ্যমকর্মী আইন মন্ত্রিপরিষদে উঠবে। এ আইনের মাধ্যমে টেলিভিশনসহ সব গণমাধ্যমকর্মীকে আইনি সুরক্ষার আওতায় আনা যাবে। তিনি বলেন, বছরের পর বছর কাজ করা একজন সাংবাদিককে হঠাৎ করে ছাঁটাইয়ের কাগজ ধরিয়ে দেওয়া সমীচীন নয়, আইনসম্মতও নয়। মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো সাংবাদিককে হঠাৎ করে ছাঁটাই করে তাদের বিপর্যস্ত অবস্থায় ফেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। ডিইউজে সভাপতি আবু জাফর সূর্যের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল ও মহাসচিব শাবান মাহমুদ।

ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে ওয়েজবোর্ড অন্তর্ভুক্তির দাবি প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ওয়েজবোর্ড গঠিত হয়েছিল প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য। ওয়েজবোর্ড পার্লামেন্টে পাস করা আইনের ভিত্তিতে গঠিত হয়। ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে আবার আইন প্রয়োজন। কিন্তু আমরা যে গণমাধ্যমকর্মী আইন করছি, তার মাধ্যমে টেলিভিশনসহ সব গণমাধ্যমকর্মীকে আইনি সুরক্ষার আওতায় আনা যাবে। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আমলে গণমাধ্যমকর্মীদের শ্রমিক বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, গণমাধ্যমকর্মী আইনে সেটি নিরসন করা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা শ্রমিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে সচিব কমিটির সভা হয়েছে। আরেকটি সভার পর আমরা সেটি মন্ত্রিসভায় নিতে পারব। আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সম্প্রচার আইনটি খুব সহসা আইন মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় হয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে আসবে। তখন আমরা সেটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করতে পারব। গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির সুরক্ষার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কাউকে যদি ছাঁটাই করতে হয় তাহলেও আইন মেনেই করতে হবে। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যাবেলা সাংবাদিকদের ছাঁটাইয়ের কাগজ ধরিয়ে দেওয়া যায় না। রাষ্ট্র সেটি অনুমোদন দেয় না। তিনি বলেন, একজন মানুষ যেখানে বছরের পর বছর কাজ করছে, তাকে হঠাৎ করে ছাঁটাইয়ের কাগজ ধরিয়ে দেওয়া সমীচীন নয়, আইনসম্মতও নয়। মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে কাউকে যে কোনো সময় এভাবে ছাঁটাই করবেন না। সাংবাদিকদের এভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ফেলা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। হঠাৎ করে যে কাউকে ছাঁটাই অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করা হয়েছে এবং টেলিভিশনের সিরিয়াল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যাদের বিজ্ঞাপন চলে যাচ্ছিল সেগুলো যাতে দেশীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলো পায়, সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনও যাতে না চলে যায় সে ব্যবস্থা নেওয়ায় এর সুফল প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া কিছুটা হলেও এখন পাচ্ছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় সাংবাদিকদের পক্ষে। আমি আপনাদের দৃষ্টিতে পুরো ক্যানভাসকে দেখার চেষ্টা করি। সব কাজ যে আমি করতে পারি তা নয়, এককভাবে সব কাজ করা সম্ভবও নয়, দায়িত্বে থাকলে আবার সবদিক চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমি আপনাদের পক্ষ হয়েই কাজ করার চেষ্টা করি।

আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার রায় তো আদালতের ব্যাপার। সরকারের এ বিষয়ে কোনো কিছু করণীয় নয়। এটি একান্তই আদালতের ব্যাপার। সাংবাদিকদের জাতির ও সমাজের বিবেক বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, তাদের লেখনীর মাধ্যমে সমাজের প্রকৃত চিত্র পরস্ফুিটিত হয়। তাদের লেখনীর মাধ্যমে সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার দিকনির্দেশনা পায়। একজন সাংবাদিক তার লেখার মাধ্যমে ভাষাহীনকে ভাষা দিতে পারে। যে কথা বলতে পারে না, তার পক্ষ থেকে একজন সাংবাদিক কথা বলতে পারে। যার কাছে ক্ষমতা নাই, একজন সাংবাদিক তার লেখার মাধ্যমে ক্ষমতাহীনকে ক্ষমতাবান করতে পারে। ডিইউজে’র নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, সেই নির্বাচনের মাধ্যমে ভালো কমিটি গঠিত হবে বলে আশা করি এবং তারা সাংবাদিকদের দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন এবং পেশাগত উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে কাজ করবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads