• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় ১২০৭৮ সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত: প্রতিমন্ত্রী

ছবি: বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় ১২০৭৮ সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত: প্রতিমন্ত্রী

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৮ মে ২০২০

ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসায় উপকূলের জেলাসমূহের নিচু ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের আগামীকাল মঙ্গলবার (১৯ মে) সকাল থেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

আজ সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাতে অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার শেষরাত থেকে বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। উপকূলের নিচু ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা, আপনারা আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবেন।’

এনামুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান উপকূলের দিকে ধেয়ে আসার প্রেক্ষাপটে ৫১ লাখ ৯০ হাজার মানুষের জন্য ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। গর্ভবর্তী নারী, নারী, প্রতিবন্ধী ও শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা দিতে হবে। এরপর অন্যরা। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরতদের জন্য খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা আমরা করেছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে মংলা ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আজকে সন্ধ্যার পর এটি সুপার সাইক্লোনে রূপ ধারণ করবে।

করোনা সংক্রমণের সময়ে প্রত্যেকটি আশ্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে উপকূলবর্তী সব জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আমার কথা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) মহামারির মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড়ের আশ্রয় নেওয়ার সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করছি। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আসবেন তাদের মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি মানুষকেও যাতে প্রাণ হারাতে না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি। যে সব মানুষ ঝুঁকিতে আছেন মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগেই তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হবে। অন্য যে কোনো দুর্যোগের তুলনায় এবার সব চেয়ে বেশি সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এনামুর রহমান বলেন, কেন্দ্রে যারা আশ্রয় নেবেন তাদের জন্য তিন হাজার ১০০ টন চাল, ৫০ লাখ নগদ টাকা, শিশু খাদ্য কিনতে ৩১ লাখ টাকা, গোখাদ্য কিনতে ২৮ লাখ টাকা এবং চার হাজার ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে।

সিভিল সার্জনদের নেতেৃত্বে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনীয় ওষুধসহ ওইসব টিম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ গেলে বিকল্প ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে বর্তমানে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সোমবার বিকাল তিনটায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

তিনি বলেন, এটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং দিক পরিবর্তন করে উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রাম এর মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষ রাত হতে ২০ মে বিকাল বা সন্ধ্যায় বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এনোমুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২০০ কিলোমিটার বা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে । ঘূর্ণিঝয় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে ।

এর আগে প্রতিমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় পূর্ব প্রস্তুতি ও করণীয় বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সমুহের সচিব ও সিনিয়র সচিব এবং উপকূলীয় জেলা সমূহের জেলা প্রশাসকদের সাথে অনলাইনে সভা করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads