• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
কলেজ কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা দেখতে তদন্ত কমিটি 

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

এমসি কলেজে গণধর্ষণ

কলেজ কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা দেখতে তদন্ত কমিটি 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০

সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো অব্যবস্থাপনা ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়। এই মামলায় আরো তিন আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল মঙ্গলবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামিরা হলেন, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫) এবং এজাহারের বাইরের দুই আসামি মো. আইনুদ্দিন (২৬) ও রাজন মিয়া (২৭)। গত সোমবার রাত ১২ টার দিকে অপর আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুমও গ্রেফতার হন।

জানা যায়, গতকাল দুপুর পৌনে ১২টায় আসামিদের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে আদালত চত্বরে হাজির করে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরাণ (র.) থানা পুলিশ। আসামিদের আদালতে তুলে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। শুনানি শেষে আদালত তিনজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি খোকন কুমার দত্ত বলেন, ‘আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’

এর আগে গত সোমবার একই মামলায় আরো তিন আসামি সাইফুর, অর্জুন ও রবিউলকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এখন পর্যন্ত এ মামলায় গ্রেপ্তার হলো সাত আসামি।

গত সোমবার রাত সাড়ে ১২টায় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন মামলার ৬ নম্বর আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুম। তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কানাইঘাট থানা পুলিশ।

যে আত্মীয়ের বাড়িতে মাসুম আশ্রয় নিয়েছিল, সেখান থেকে রাতের বেলা লুঙ্গি পরে পালাতে গিয়ে গোয়েন্দা জালে আটকা পড়েন তিনি। মাসুমের গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করেন কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দোহা। পলাতক আছেন তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক।অন্যদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় কোনোরূপ ঘাটতি ছিল কি-না তা সরেজমিনে তদন্তপূর্বক এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রেরণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

যাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে : পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা (আহ্বায়ক); উপ-পরিচালক (কলেজ), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চল, সিলেট (সদস্য); সহকারী পরিচালক (কলেজ-১), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা (সদস্য-সচিব)। তদন্ত কমিটির সদস্যরা বর্তমানে সিলেটে রয়েছেন।

এমসি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সালেহ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘গত সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) মো. শাহেদুল খবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা তদন্তের কাজে সিলেট আছেন।’

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক নারী। ছাত্রলীগের নয়জন কর্মী ওই নারীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।

পুলিশ রাতে ওই নারীকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করে।

ধর্ষণের শিকার তরুণীর স্বামী বাদী হয়ে গত শনিবার শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

অন্য আসামিরা হলেন, এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, অর্জুন লস্কর ও বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী রবিউল এবং তারেক আহমদ। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো তিনজনকেও আসামি করা হয়েছে।

আদালতের আদেশে গ্রেপ্তারকৃতদের ৫ দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

এই মামলায় এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিসহ এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এমসি কলেজের দুই দারোয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads