• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

জাতীয়

আন্দোলনে যাচ্ছেন কর্মচারীরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ অক্টোবর ২০২০

নবম পে-স্কেল (বেতন কাঠামো) ঘোষণা, চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়স বাড়ানোসহ সাত দফা দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা।

আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন ও বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদের নেতারা এসব দাবি তুলে ধরবেন। একই সঙ্গে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো. ওয়ারেছ আলী বলেন, ‘আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আমাদের বঞ্চনার জায়গা রয়েছে। দাবি আদায়ে শৃঙ্খলা রক্ষা করে আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করব। আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ, কালো ব্যাজ ধারণ, কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করব। আশা করি, সরকার আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’

তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর পরপর পে-স্কেল দেওয়ার কথা। অষ্টম পে-স্কেল ঘোষণার পর পাঁচ বছর হয়ে গেছে। আমরা নবম পে-স্কেল ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। বৈষম্য কমানোর জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবদ্দশায় ১০ ধাপের পে-স্কেল দিয়েছিলেন আমরা নবম পে-স্কেলটা ১০ ধাপের চাচ্ছি। এতে বৈষম্য কমবে। এখন সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত ১:১০-এর মতো। এটা অনেক বেশি।’

বৈষম্যের উদাহরণ দিতে গিয়ে কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি বলেন, ‘সচিবালয়ে পিওন থেকে হয় অফিস সহকারী, এরপর পদোন্নতি পেয়ে হয় এও-পিও (প্রশাসনিক কর্মকর্তা-ব্যক্তিগত কর্মকর্তা), যেটা দ্বিতীয় শ্রেণির। কিন্তু বাইরে এই সুযোগে নেই। স্বাধীন, সার্বভৌম দেশে এটা আমরা প্রত্যাশা করি না। এটা বড় ধরনের বৈষম্য।’

তিনি বলেন, ‘সচিবালয়ে যারা কাজ করেন তাদের স্পেশাল অ্যালাউন্স দেওয়া যেতে পারে। তাই আমরা সমতা আনতে অভিন্ন নিয়োগ বিধি চালু করার কথা বলছি। কর্মচারী যেখানেই চাকরি করুক সবার পদমর্যাদা এক হোক, পদোন্নতিও হোক একই নিয়মে।’

আউটসোর্সিং দাস প্রথার মতো একটা ব্যবস্থা বলে মন্তব্য করেন কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ওয়ারেছ আলী। তিনি বলেন, ‘সরকারের একটি দামি সম্পদ হচ্ছে গাড়ি, গাড়ি চালানোর চালক নেওয়া হচ্ছে আউটসোর্সিংয়ে মাধ্যমে। সে তো কোনো বাধ্যবাধকতার মধ্যেই নেই। সরকারের এই সম্পদ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নেওয়া জনবলকে উপযুক্ত বেতন দেয় না ঠিকাদাররা। তারা কিন্তু ঠিকই সরকারের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। তাই আউটসোর্সিং বাতিলের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’ বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ নিজামুল ইসলাম ভূঁইয়া মিলন বলেন, ‘শনিবার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আমরা আমাদের সাত দফা দাবি পেশ করব। দাবি আদায়ে আন্দোলন কর্মসূচিও ঘোষণা করব।’

সাত দফা দাবিতে যা আছে-

১. জাতীয় স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন করে ১০ ধাপবিশিষ্ট নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১:৫ হতে হবে। আগের মতো ১০০ শতাংশ পেনশন প্রথা পুনর্বহাল করতে হবে।

২. এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি চালুসহ সচিবালয়ের মতো সচিবালয়ের বাইরের সরকারি কর্মচারীদের পদ ও বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে। ব্লক পদধারীদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

৩. আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল করে এ পদ্ধতিতে নিয়োগ করা কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। বিভিন্ন দপ্তর প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। ডাক বিভাগের প্রার্থী প্রথা চালুসহ মাস্টাররোল ও অন্যান্য দপ্তরে কর্মরত মাস্টাররোল কন্টিজেন্ট ও ওয়ার্কচার্জ কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।

৪. সরকারি কর্মচারীদের আগের মতো তিনটি টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পুনর্বহাল করতে হবে। জীবনযাত্রার মান স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয় বিবেচনা করে পেনশনের হার ৯০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ ও গ্র্যাচুইটির হার এক টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকায় উন্নীত করতে হবে।

৫. নবম পে-স্কেল দেওয়ার আগ পর্যন্ত দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি বিবেচনা করে ৫০ শতাংশ মহার্ঘভাতা অবিলম্বে দিতে হবে।

৬. প্রশাসন ক্যাডারে কর্মচারীদের মতো ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের বিনা সুদে ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে।

৭. চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মতো অন্যান্য সকল দপ্তরে পোষ্য কোটা চালু করতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads