• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

একুশ আগস্ট মঞ্চে গ্রেনেড ছোড়েন ইকবাল

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ইকবাল হোসেন (ইকবাল) গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্বীকার করেছেন, সেদিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে তিনিই গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছিলেন।

দীর্ঘ বছর পালিয়ে থাকার পর গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

গ্রেপ্তারের পর র‍্যাবকে ইকবাল জানান, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের নির্দেশে তিনি গ্রেনেড হামলায় জড়ান। হামলার পর আত্মগোপণে গিয়ে কখনো নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক আবার কখনো রিক্সার মেকানিক্স হিসেবে ছদ্মবেশে জীবনধারণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, ম্যানুয়াল পাসপোর্টের সুযোগ নিয়ে ভিন্ন পরিচয়ে বিদেশে চলে যান তিনি। গত বছরের শেষের দিকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

আসামিদের নজরদারীর ধারাবাহিকতায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) দেওয়া তথ্যমতে র‍্যাব গোয়েন্দা শাখার সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ আভিজানিক দল জঙ্গি ইকবালকে গ্রেপ্তার করে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

গ্রেপ্তার পলাতক জঙ্গি ইকবালকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব ডিজি বলেন, এইচএসসি পাস ইকবাল স্কুল-কলেজে অধ্যায়নরত অবস্থায় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ইকবাল ১৯৯৪ সালে ঝিনাইদহের কেসি কলেজের ছাত্র সংসদে ছাত্রদলের নির্বাচিত শ্রেণি প্রতিনিধি ছিলেন। সে ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত কর্মজীবি হিসেবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে।

দেশে ফিরে ইকবাল আইএসডি ফোন ও অন্যান্য ব্যবসা করেন। এসময় সর্বহারা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে কোন্দলে জড়িয়ে যান। ২০০১ সালে স্থানীয় এক জঙ্গি সদস্যের মাধ্যমে তিনি হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশে (হুজিবি) যোগদান করেন। ২০০৩ সালে হুজিবি নেতা মুফতি হান্নানসহ শীর্ষ নেতাদের সান্নিধ্যে এসে প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। ২০০৪ সালে মুফতি হান্নানের নির্দেশে ঢাকায় আসেন এবং গোপন আস্তানায় অবস্থান করেন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মুফতি হান্নানের নির্দেশে সরাসরি অংশ নেন জানিয়ে র‍্যাব প্রধান বলেন, মুফতি হান্নান তাকে গ্রেনেড সরবরাহ করেছিলেন। হামলার সময় সরাসরি মঞ্চকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুঁড়েছিলেন তিনি। ঘটনার পররপরই তিনি আত্মগোপণে ঝিনাইদহে চলে যান। ঘটনার পর জঙ্গি ইকবালকে গ্রেপ্তার করতে একাধিক অভিযান পরিচালিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে তাকে গ্রেপ্তারে ঝিনাইদহের নিজ বাড়ি, গাজীপুর সাভারসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় র‍্যাব।

আত্মগোপনে থাকাকালীন ইকবাল নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক, রিক্সা মেকানিক্স হিসেবে ছদ্মবেশে জীবন-যাপন করেন। তাকে গ্রেপ্তারে ধারাবাহিক অভিযানের একপর্যায়ে সে প্রবাসে পাড়ি জমায়। ২০২০ সালের শেষের দিকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে তাকে দেশে পাঠায়।

এনএসআই এবং র‍্যাবের গোয়েন্দা শাথা জঙ্গি ইকবালের বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ অব্যাহ রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় জঙ্গি ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এত গুরুত্বপূর্ণ একজন আসামি কিভাবে বিদেশে পাড়ি জমান জানতে চাইলে র‍্যাব প্রধান বলেন, আমরা ধারনা করছি ২০০৮ সালে ম্যানুয়াল পাসপোর্টের সুযোগে ভিন্ননামে দেশ ছেড়েছিলেন তিনি। বিদেশে গিয়েও একাধিকবার নাম পরিবর্তন করেন ইকবাল।

২০০৪ সালের একুশে অগাস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সেই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারান আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী। আহত হন সাংবাদিকসহ দলটির অসংখ্য নেতাকর্মী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads