• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

সেবা বাড়াতে হচ্ছে নতুন ইউনিট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

দেশের অভ্যন্তরীণ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা প্রধান দায়িত্ব হলেও এর বাইরে  নানামুখী কাজ করতে হয় পুলিশকে। একটা সময় মনে করা হতো পুলিশের কাজ হলো সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন। কিন্তু এখন তাদের দায়িত্ব ও কাজ ব্যাপক বিস্তৃত। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, মামলা নেওয়া, তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা, বিচার প্রক্রিয়ায় সহায়তা, ভিআইপি নিরাপত্তা ও প্রটোকল দিতে হয় এ বাহিনীকে। এ কারণে তারা বিভিন্ন ইউনিটে ভাগ হয়ে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে থাকে। সে বহরে এবার নতুন করে যোগ হচ্ছে মেডিকেল শিক্ষা ইউনিট, এয়ার উইংসহ আরো অনেক ইউনিট।

একটা সময় পুলিশ সদর দপ্তর, স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), সারদা পুলিশ একাডেমিসহ কয়েকটি ট্রেনিং সেন্টার, বিভাগ, মহানগর, জেলা ও থানা ইউনিট ছাড়া আর কোনো ইউনিট ছিল না। বর্তমানে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট ও ট্রাফিকসহ অনেক বড় ইউনিট রয়েছে পুলিশবাহিনীতে। সব মিলিয়ে পুলিশবাহিনীতে ইউনিট রয়েছে ১৭৭টি। রয়েছে হাইওয়ে, রেলওয়ে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল, নৌ, ট্যুরিস্ট, পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও স্পেশাল পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এসপিবিএন)। বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় সোয়া দুই লাখ। বাহিনীর আধুনিকায়নও এখন ঈর্ষণীয় পর্যায়ে। সাইবার অপরাধ দমনে পুলিশের সারা দেশের ইউনিটগুলোতে রয়েছে সাইবার সেকশন। পৃথক সাইবার থানা করারও চিন্তা-ভাবনা রয়েছে সরকারের। বিমানবন্দরকেন্দ্রিক গঠন করা হয় পুলিশের আলাদা ইউনিট।

ভালো কাজ করতে হলে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। তাই পুলিশের কনস্টেবল থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সবাই নিয়মিত প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন। সারা দেশেই অনেক ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। দেশের বাইরে গিয়েও প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। একই সঙ্গে জঙ্গিবাদ দমনের সফলতা জানাতে ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক দেশের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তাদের নিয়মিত সেসব দেশে যেতে হচ্ছে।

মানুষকে তাৎক্ষণিক সেবা দিতে করা হয়েছে ‘৯৯৯’ নামের ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস। পুলিশ সদর দপ্তরসহ প্রত্যেকটি ইউনিটে ফেসবুক পেইজ খুলে সাধারণ ভুক্তভোগী মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণ করে দ্রুত সেবা নিশ্চিত করছে পুলিশ। অসংখ্য ভুক্তভোগী এ দুটি মাধ্যমের সহযোগিতা নিয়ে আশানুরূপ সেবা নিচ্ছেন। রয়েছে বিডি পুলিশ হেল্প লাইন নামের অ্যাপস। জঙ্গি দমনের জন্য দ্রুত অ্যাকশনে যেতে রয়েছে সোয়াত নামের আলাদা কমান্ডো ইউনিট।

আন্তর্জাতিক পুলিশি সংস্থা ইন্টারপোলের সদস্য বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরে ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো নামে ইন্টারপোল সংক্রান্ত কাজ করে এই ইউনিট। বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা দেশের দাগি সন্ত্রাসীদের ধরতে এই শাখা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশে এখন অত্যাধুনিক ফরেনসিক বিভাগ, মানি লন্ডারিং, মানব পাচার, কল ডায়ালিং রেকর্ড (সিডিআর) সেকশন রয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে একেবারেই ক্লুলেস অনেক চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি সোহেল রানা বলেন, সময়ের প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষায়িত সেবা দিতে বিভিন্ন সময় পুলিশে ভিন্ন ভিন্ন ইউনিট যুক্ত হয়েছে। এসব ইউনিটের প্রত্যেকটি নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণসহ দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলাকে স্বাভাবিক ও বিনিয়োগবান্ধব রেখেছে। ফলে অর্থনৈতিকভাবে অন্যতম উদীয়মান দেশ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পথ বাংলাদেশের জন্য সহজ হয়েছে। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া পুলিশের সফলতাই বেশি। যেসব ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয়সহ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads