• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

জাতীয়

আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ মার্চ ২০২১

আজ ৮ মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ১৯৭৫ সাল থেকে প্রতি বছরের মতো এবারো বিশ্বব্যাপী পালিত হবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদ্যাপন করা হবে। নারী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য-‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’। মহামারীকালে বাংলাদেশের ডাক্তার, নার্স, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সব পর্যায়ের নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এ নারীরাই করোনাকে জয় করে নতুন সমতার বিশ্ব গড়ে তুলবেন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে জাতীয় উন্নয়নের মূলধারায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে নারী-পুরুষ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সভ্যতার উষালগ্ন থেকে সৃজনশীল ও উন্নয়নমূলক সকল কর্মকাণ্ডে পুরুষের পাশাপাশি নারীর ভূমিকা অগ্রগণ্য। সংবিধানের ১৯(৩) অনুচ্ছেদে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। নারীদের যথার্থ মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। বর্তমানে বাল্যবিয়ে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা, কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান মজুরি নিশ্চিত করা এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও বিপণনের সুবিধা প্রদান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া উন্নয়ন পরিকল্পনার নীতি, কর্মকৌশল ও বিধিবিধান হিসেবে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধিত ২০০৩), পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭, যৌতুক নিরোধ আইন-২০১৮ ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন-২০২০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি আমি আশা প্রকাশ করেন, দেশের টেকসই উন্নয়নে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই সহযাত্রী হিসেবে কাজ করবেন। মুজিববর্ষে নারী উন্নয়নে বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেওয়া বাণীতে বলেন, এ দেশের নারী-পুরুষের যৌথ প্রচেষ্টায় রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়ন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে। বিনির্মাণ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। বাস্তবায়িত হবে ডেল্টা প্ল্যান-২১০০। মুজিববর্ষে এই হোক আমাদের প্রত্যাশা।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৮ মার্চ (আজ) ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ উপলক্ষে বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।

 

নারী দিবস এলো যেভাবে

ঘটনাটি সেই ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি সুচ কারখানার নারী শ্রমিকরা দৈনিক শ্রম ১২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে আট ঘণ্টায় আনা, ন্যায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন।

আন্দোলন করার অপরাধে সে সময় গ্রেপ্তার হন বহু নারী। কারাগারে নির্যাতিত হন অনেকেই। তিন বছর পরে ১৮৬০ সালের একই দিনে গঠন করা হয় ‘নারী শ্রমিক ইউনিয়ন’। ১৯০৮ সালে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের কারখানার প্রায় দেড় হাজার নারীশ্রমিক একই দাবিতে আন্দোলন করেন। অবশেষে আদায় করে নেন দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার অধিকার।

১৯১০ সালের এ দিনে ডেনমাকের্র কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে জার্মানির নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই সারা বিশ্বে দিবসটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা শুরু করে। এর দুই বছর পর ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

নারী দিবস হচ্ছে সেই দিন, যেই দিন জাতিগত, গোষ্ঠীগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক-সব ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনভাবে নারীর অর্জনকে মর্যাদা দীেয়ার দিন।

এ দিনে নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসকে হমসরণ করে এবং ভবিষ্যতের পথ পরিক্রমা নির্ধারণ করে, যাতে আগামী দিনগুলো নারীর জন্য আরো গৌরবময় হয়ে ওঠে।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ক্রোড়পত্র প্রকাশ ও টক শোর আয়োজনসহ বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারের মাধ্যমে দিবসটি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads