• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

মহামারীর এক বছর

হারিয়েছি অনেক, হারিনি আমরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ মার্চ ২০২১

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের মহামারীর এক বছর পূর্ণ হবে আজ সোমবার ৮ মার্চ। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনাকালে ঘটেছে নানা ঘটনা। অনেক গুণী ব্যক্তি ও বিশিষ্টজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই করোনাভাইরাস। স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি যেমন হয়েছে, আবার মানবসেবার নানা ধরনের দৃষ্টান্ত হয়েছে এই করোনাকালে, যা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

স্বপ্নদ্রষ্টাদের হারানোর শোক : দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে সচল করেছেন দেশের অর্থনীতি। মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন বিনির্মাণে গড়ে তুলেছেন অসংখ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান। সৃষ্টি করেছেন কর্মসংস্থান। দেশকে করেছেন সমৃদ্ধ। করোনার ছোবলে সেই স্বপ্নদ্রষ্টাদের হারিয়ে শোকে বিহ্বল সমগ্র জাতি। হ্যাঁ, করোনায় মারা যাওয়া বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কথা এগুলো। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত দেশে মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শীর্ষ ৩০ ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও শিল্পপতির মৃত্যু হয়েছে। করোনার কাছে হার মেনেছেন বাংলাদেশের অন্যতম বড় ব্যবসায়ীগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল, সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার, দেশের শীর্ষ সারির শিল্পপতি পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হাশেম, এস আলম গ্রুপের পরিচালক মোরশেদুল আলম এবং আকিজ ফুটওয়্যারের পরিচালক শেখ মোমিন উদ্দিনসহ অনেক শিল্পপতি। দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রথম প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন প্রিন্স গার্মেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তাসলিম আক্তার। গত বছরের ৯ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। গত বছর ৩০ মে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মো. ইমামুল কবির শান্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস, শান্তনিবাসের প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন। বেসরকারি হাসপাতাল পপুলারের চেয়ারপারসন তাহেরা খানম করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ১০ জুন মারা যান। গত বছরের ২৫ জুন শিল্পপতি হাসান জামিল সাত্তার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬৬ বছর বয়সে মারা যান দেশের চা শিল্পের খ্যাতিমান ব্যবসায়ী আফসার মঈন। একই মাসের ৭ তারিখে করোনা নিয়ে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আফসার মঈনের ভাই বিশিষ্ট শিল্পপতি আজমত মঈন।

শিল্পপতি হাসান জামিল সাত্তারও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ২০২০ সালের ২৫ জুন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ আগস্ট দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী আকিজ গ্রুপের পরিচালক শেখ মোমিন উদ্দিনের মৃত্যু হয়।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর করোনার কাছে হার মানেন চট্টগ্রামের শিল্পপতি হাসান মাহমুদ চৌধুরী। এ ছাড়া করোনাকালে মারা যান পোশাক খাতের ব্যবসায়ী অ্যাপারেল ফেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন মাহমুদ, বাংলাদেশ হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সদস্য সাদিক আহসান, বাংলাদেশ প্লাস্টিক রাবার সু মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও সাবেক এফবিসিসিআই সদস্য হাজি মো. মনসুর আলী, বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আলহাজ সিরাজ উদ্দিন দেওয়ান, বাংলাদেশ পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি হাজি নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ড্রেস মেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজি মো. আবদুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও সাবেক এফবিসিসিআই পর্ষদ সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ শের মোহাম্মদ, ন্যাশনাল কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. কামরুল হুসেন চৌধুরী (গোর্কি), বাংলাদেশ মনিহারি বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান, বাংলাদেশ মেটাল ওয়্যার অ্যান্ড ওয়্যারনেইলস মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সহসভাপতি মো. মোবারক হোসেন, রয়েল ট্রেডিং করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী বদরুল হুদা মুকুল, এফবিসিসিআইয়ের সদস্য মো. হাবিবুল্লাহ ও বাংলাদেশ পোদ্দার সমিতির সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সদস্য মো. বাচ্চু মিঞা, ইস্ট ওয়েস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ, রহমত গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ মোহাম্মদ আলী সরকার, এনএফকে টেক্সটাইলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, পার্ল প্রিনস বিডি লিমিটেডের চেয়ারম্যান তসলিম আক্তার। মারা যাওয়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরও আছেন আলী যাকের। অভিনেতা, মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেখানে প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয় ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি। তবে তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি। ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে তা ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয় ফিলিপাইনে।

বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের সর্বশেষ (৭ মার্চ) তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা আট হাজার ৪৬২ জন। আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৪ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন পাঁচ লাখ ৩ হাজার ৩ জন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। দেশে এখন পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৫২ জন। তার মধ্যে পুরুষ ২৩ লাখ ৫৫ হাজার ৪২৩ জন, নারী ১৩ লাখ ২৬ হাজার ৭২৯ জন। টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ৮২৫ জনের।

 

বিপর্যয়েও গ্রামীণ অর্থনীতির ভরসা

‘ভিনগ্রহ’ থেকে আসা এক ভাইরাসে স্থবির ছিল ২০২০ সাল। প্রাণঘাতী সেই ভাইরাস থেকে বাঁচতে সবাই যখন নিজ নিজ সুরক্ষা নিয়ে ব্যস্ত, ঠিক তখনই স্রোতের বিপরীতে হেঁটেছেন কেউ কেউ। এসব নিবেদিতপ্রাণের কারণে করোনাযুদ্ধে সফলতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। সবার মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দিতে, একইসঙ্গে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সদা মাঠেই ছিলেন তারা। তাদের কারণে দেশ খাদ্য সংকটে পড়েনি।

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন অধিদপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৯২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ২২ জন

 

নিরাপত্তার পাশাপাশি দায়িত্বও পালন করে পুলিশ

২০২০ সালের ১৪ জুলাই। করোনা আতঙ্কে সারা দেশের মানুষ যখন ঘরবন্দি তখন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ৭০ বছরের বৃদ্ধ সোবাহান আলীর জ্বর আর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে বৃদ্ধ বাবাকে উল্লাপাড়া পৌর বাস টার্মিনালে ফেলে যায় ছেলে। সেই সোবাহান আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ছেলের ভূমিকা পালন করেন স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা। শুধু ওই ঘটনা নয়, করোনাকালে এমন অনেক মানবতার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। করোনার আতঙ্কের সময় যখন দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ঘরবন্দি ছিলেন, ঠিক তখনই অন্যতম সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে রাজপথে ছিল পুলিশ।

 

চিকিৎসা থেকে দাফন

করোনার শুরুর দিকে কোনো মানুষ আক্রান্ত হলে তাকে পরিবারসহ সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হতো। কেউ তাদের পাশে দাঁড়াত না। আক্রান্ত রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ারও দাবি তোলেন অনেকে। আক্রান্তরা যখন পরিবার কিংবা সমাজের কারো সাহায্য পাচ্ছিলেন না, তখন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় পুলিশ। আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন তারা। প্রথমদিকে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যারা মারা যেতেন, তাদের অধিকাংশেরই মরদেহ পরিবার নিত না। এসব মরদেহের দাফন অথবা সৎকারের কাজ করে পুলিশ।

 

করোনায়ও সরব আকাশপথ

করোনায় একে একে বন্ধ হতে থাকে বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরগুলো। পাশাপাশি বন্ধ হতে থাকে এয়ারলাইনসগুলোর অপারেশন। একপর্যায়ে অনেক এয়ারলাইনসই দেউলিয়া হয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেয়। বেকার হয়ে পড়েন হাজার হাজার বিমানকর্মী। তবে এর মধ্যেও টিকে থাকে বাংলাদেশের এয়ারলাইনসগুলো। একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম।

 

তৎপর ছিল এয়ারলাইনসগুলো

চীনের গুয়াংজু রুটের ফ্লাইট বন্ধ না হওয়ায় করোনা সংকটের পুরোটা সময় বিরতিহীনভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। এখন পর্যন্ত চেন্নাইসহ আশপাশের দেশগুলো থেকে ১০০টির মতো বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে সংস্থাটি।

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও সৌদি আরব, লেবানন, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ প্রায় ১৫টি দেশে ফ্লাইট পরিচালনা করে প্রবাসীদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনেছে।

 

সক্রিয় ছিল দুর্নীতির দুষ্টচক্র

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থমকে যায় গোটা বিশ্ব। স্থবির হয়ে পড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য। লাখো মানুষকে হারিয়ে শোকে কাতর বিশ্ব যখন ঘুরে দাঁড়াতে ব্যস্ত, ঠিক তখন উল্টো ঘটনা ঘটে বাংলাদেশে। যে বিভাগের কাঁধে ভর করে সংকটময় এ মুহূর্ত উতরে যাওয়ার কথা, সেই স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বার বার জড়িয়েছে বিতর্কে। অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে দুদক পরিচালকসহ তিনজনকে। আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ ৮০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী।

দেশে করোনার রোগী শনাক্তের এক বছরের মধ্যে ঘটে গেছে মাস্ক কেলেঙ্কারি, করোনা টেস্ট জালিয়াতি, ত্রাণসামগ্রী আত্মসাতের মতো ঘটনা। কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই নকল মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ, ভুয়া করোনা রিপোর্ট দিয়ে স্বাস্থ্য খাতে শত কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে করোনার ভয় উপেক্ষা করে অভিযান চালাতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক)। অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে দুদক পরিচালকসহ তিনজনকে। আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ ৮০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী। দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৪১টি অভিযোগ অনুসন্ধান, ২৯৮টি মামলা এবং ১৬৬টি মামলার চার্জশিট দিতে সক্ষম হয়েছে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads