যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৯ সে.মি কমে বিপদসীমার ৯০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কমতে শুরু করলেও মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। বরং যমুনা নদী এখন সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। একদিকে তীরে আঘাত হানায় বসতভিটা বিলীনের পাশাপাশি তীররক্ষা বাঁধগুলোতে আঘাত হানছে অন্যদিকে যমুনার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহের কারণে হাজার হাজার বসতভিটা-ফসলী তলিয়ে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।
বসতভিটা ও বাঁধ ভাঙ্গনের আতঙ্ক আর বন্যাকবলিত হয়ে জেলার আড়াই লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে জীবনযাপন করছে। এছাড়ও বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনা খাবার ও পানিবাহিত রোগ দেখা দেয়ায় দুর্ভোগকে আরো কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। বন্যা কবলিতদের অভিযোগ, দুর্ভোগে থাকলেও স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বর তাদের খোঁজ নিচ্ছে না।
বিশেষ করে বন্যার কারণে চরাঞ্চলের অবস্থা আরো করুণ হয়ে পড়েছে। চরাঞ্চলে এক টুকরো জায়গা উচু না থাকায় সবাই পানির মধ্যেই বসবাস করছে। ঘরে চাল থাকলেও চুলো ও খড়ি ভিজে যাওয়ায় রান্না করে খেতে পারছে না। সবসময় পানিতে থাকায় হাত-পায়ে ঘাসহ পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। ঘরে শুকনো খাবার-বিশুদ্ধ পানিসহ ওষুধ থাকায় ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে চরম কস্টে দিনপাত করছে। এ অবস্থায় বানবাসী মানুষগুলো শুকনো খাবার ত্রান হিসেবে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন। আর বাঁধে আশ্রয় নেয়া মানুষগুলো কাঁথা-পলিথিন দিয়ে ঝুপড়ি ও খোলা আকাশে নীচের গরু-ছাগলের সাথে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এসব বন্যা কবলিতদের অভিযোগ, ত্রাণ তো দুরের কথা এতো কষ্টে থাকলেও জনপ্রতি কেউ খোঁজ নিতে আসছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবার প্রতি ১০ কেজি মোটা চাল দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। অনেক স্থানে এখনো কোন ত্রান সহায়তা পৌছেনি। অন্যদিকে, তীব্র প্রবল স্রোতের কারণে নদী তীর এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় তীরবর্তী মানুষ ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন জানান, বন্যা শুরুর পর থেকেই বন্যাকবলিত সব উপজেলার পানিবন্দী মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরন করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব বন্যা কবলিতরা ত্রাণ সামগ্রী পাবে।