• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
চাঁদপুরে ৬ শতাধিক কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্থ

চাঁদপুরের রাজরাজস্বর ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল উড়িয়ে নিয়ে গেছে শতাধিক ঘর। খোলা আকাশের নিচে নারী ও শিশুরা।

ছবি : বাংলাদেশের খবর

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডব

চাঁদপুরে ৬ শতাধিক কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্থ

খোলা আকাশের নিচে শতাধিক পরিবার

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ নভেম্বর ২০১৯

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে চাঁদপুর সদর, হাইমচর ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৬’শ কাঁচা ঘর ও দুই হাজারের মতো গাছ উপড়ে পড়েছে। গাছ পড়ে এবং ঝড়ো হাওয়ায় হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলে ২শতাধিক ও সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে ৪ শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্থ হয়েছে। চরাঞ্চলের ঘরগুলোর টিন ও বেড়া বাতাসে উড়ে নদীতে গিয়ে পড়ে। হাইমচর ছোট লক্ষ্মীপুর গ্রামের আঃ ছোবহান (৫৫) নামে এক ব্যাক্তি গাছের ডালের নিচে পড়ে আহত হয়েছেন।

গতকাল রোববার (১০ নভেম্বর) বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এই তান্ডব চালায়। বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চাঁদপুর শহরসহ জেলার ৮উপজেলার অনেকাংশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছন্ন ছিল। সোমবার বিকেল পর্যন্ত এসব এলাকায় বিদ্যুত চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।

হাইমচর উপজেলায় ২শ তাধিক ঘর বাড়ী বিধ্বস্থ হয়েছে। ঝড়ো হাওয়ায় বহু পানের বোরজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌসি বেগম বলেন, প্রচন্ড বাতাসে হাইমচর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে হাওলাদার কান্দিতে ৩৮টিসহ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ঈশানবালা, মনিরপুরচর, গাজীপুর, নীলকমল, মাঝির বাজার, সাহেবগঞ্জ, চরকোড়ালিয়া, মাঝেরচর ও নতুন চরে প্রায় ২শতাধিক কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া সড়কে বহুগাছ ভেঙ্গে পড়ে। এসব গাছ তাৎক্ষনিক চাঁদপুর ও হাইমচর ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও স্থানীয়দের সহায়তায় কেটে অপসারণ করা হয়েছে।

এদিকে শহরের পুরাণ বাজার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৮ থেকে ১০টি বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েগেছে। শহরের কালিবাড়ী এলাকার গুয়াখোলা রোডে গাছের ডাল ভেঙ্গে বিদ্যুতের তারের উপরে পড়েছে এবং বিদ্যুতের তার ছিড়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।

সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, সকাল থেকে ঝড়ো হাওয়া থাকলেও বিকেল ৩টার পরে মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে গোয়ালনগর ও বলিয়ার চরে প্রায় বহু কাঁচা ও অস্থায়ীভাবে উঠানে ঘর ভেঙ্গে পড়েছে এবং এসব ঘরের টিনের চাল ও বেড়া বাতাসে উড়ে নদীতে গিয়ে পড়ে।

আজ সোমবার দুপরে চাঁদপুর সদর উপজেলার বিচ্ছিন্ন দূর্গম ইউনিয়ন রাজরাজস্বর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায় খোলা আকাশের নিচে শিশুদের নিয়ে না খেয়ে অবস্থান করছেন শতাধিক পরিবার। তাদেরকে তখনো পৌঁছিনে কোন ত্রাণ।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা মো. শোয়েব বলেন, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবের কারণে চাঁদপুরে বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে।

চাঁদপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. ইকবাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পড়ে বহু গাছপালা বিদ্যুতের তারের উপর পড়েছে। এসব গাছপালা কেটে অপসারণ করা হচ্ছে। এছাড়াও আমাদের জাতীয় গ্রীডে মেরামতের কাজ করার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি জানান জেলায় বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়ে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত লেগে যাবে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রমহান খান বলেন, হাইমচর উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে সরেজমিন দেখে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads