• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ভাঙছে পদ্মা-মেঘানার দুই পাড়

ছবি: বাংলাদেশের খবর

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ভাঙছে পদ্মা-মেঘানার দুই পাড়

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৬ জুলাই ২০২০

বন্যার পানির তীব্র স্রোতে চাঁদপুরে মেঘনা নদীর বিভিন্নস্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে পদ্মা-মেঘনার ভাঙনে নদীর দুই পাড়ের প্রায় অর্ধশত বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ও পাশের আলুরবাজার ফেরিঘাট এলাকা। ভাঙন চলছে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নেও।

এছাড়া, চাঁদপুর শহররক্ষা বাঁধের পুরানবাজার হরিসভা এলাকাতে বাঁধে ধ্বস দেখা দেয়। কিন্তু, তীব্র স্রোতের কারণে এসব এলাকায় ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। বালুর বস্তা ফেলেও কোনো ভাবে রোধ হচ্ছে না ভাংগন। বিলিন হওয়ার পথে চাঁদপুর পুরান বাজার।

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ইব্রাহিমপুর ও পাশের আলুরবাজার ফেরিঘাট এলাকার স্থানীয়দের দাবি, কয়েকদিনের নদী ভাঙনে সেখানকার ছোট একটি বাজার ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) অস্থায়ী নৌ টার্মিনালের একাংশ নদীতে বিলিন হয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মান্নান বেপারি বলেন, ‘ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। কারণ, এই ভাঙনে কয়েক শ পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন।’

ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কাশেম খান বলেন, ‘২০১৬ সালে আলুরবাজার ফেরিঘাটের নৌ চ্যানেল ড্রেজিং করার পর থেকেই দক্ষিণ পাশের বিশাল এলাকাজুড়ে এ ভাঙন শুরু হয়। বর্ষা এলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। কয়েক দিনের ভাঙনে অনেক বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে রয়েছেন।’

ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

সদর উজেলার রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, ‘উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বন্যার কারণে পদ্মা নদীর ভাঙনে আমাদের ইউনিয়নের বাজারচর, লক্ষ্মীরচর ও জাহাজমারা এলাকায় শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু ভাঙন রোধে কেউই কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।’

চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি তমাল কুমার ঘোষ বলেন, ‘চাঁদপুরের পুরানবাজার এলাকায় প্রতি বছর মেঘনা তীব্র স্রোতে শহররক্ষা বাঁধের ব্লক ধ্বসে বসতবাড়ি, ধর্মীয় উপাসনালয়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ে। এ বছরও বর্ষার শুরু না হতেই ওই এলাকার বিভিন্নস্থানে ধস দেখা দিয়েছে। এ কারণে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তবে, এই ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ সেখানে বালিভর্তি বস্তা ফেলার কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাবুল আক্তার বলেন, ‘নদীর তীব্র স্রোতে চাঁদপুরের বিভিন্নস্থানে ভাঙন দেখা দেওয়ায় আমরা তা রোধ করতে তৎপর রয়েছি। তবে, বন্যার পানি বৃদ্ধি ও প্রচণ্ড স্রোতের কারণে শহররক্ষা বাঁধের হরিসভা এলাকার কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে ও ব্লক দেবে গেছে। বর্তমানে সেই বাঁধের ৯০ মিটার এলাকায় বালির বস্তা ফেলে ভাঙন রক্ষার কাজ চলছে।’

তবে অন্যান্য স্থানে এখনো কাজ শুরু করা যায়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads