• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
শতবছরের রেকর্ড বৃষ্টি রংপুরে

সংগৃহীত ছবি

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

শতবছরের রেকর্ড বৃষ্টি রংপুরে

  • রংপুর ব্যুরো
  • প্রকাশিত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

টানা দশ ঘণ্টার বৃষ্টিতে রংপুর মহানগরীসহ জেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার অলিগলি পানিতে একাকার। বাদ যায়নি বাড়িঘরও। কোথাও কোমর পানি, আবার কোথাও হাঁটু পানি। নগরীর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার রাত ১০টা থেকে রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত ৪৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এমনটি গত একশ বছরেও হয়নি। এমন বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাত আরো দুএকদিন থাকবে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।

এদিকে রাতভর অবিরাম বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের একমাত্র অবলম্বন শ্যামা সুন্দরী ও কেডি ক্যানেল। ভেঙে পড়েছে নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা। নিষ্কাশন সুযোগ না থাকায় পানিতেই চলে যাতায়াত। নগরবাসী বলছেন ২৫-৩০ বছরেও এমন বৃষ্টিপাত দেখেননি। ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যাতেও এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি।

অন্যদিকে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ফায়ার সার্ভিস কাজ করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর নিচু এলাকাগুলোতে সবেচেয়ে বেশি পানি প্রবেশ করে। বেশিরভাগ রাস্তা ৩-৪ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরীর শাপলা চত্বর, হাজীপাড়া, চামড়াপট্টি, করণজাই রোড, সেনপাড়া, নিউ সেনপাড়া, আদর্শপাড়া, বাবুখাঁ, কামারপাড়া, জুম্মাপাড়া, কেরানীপাড়া, আলমনগর, হনুমানতলা, মুন্সিপাড়া, মুলাটোল আমতলা, গণেশপুর, বাবুপাড়া, লালবাগ কেডিসি রোড, বাস টার্মিনাল, শালবন, মিস্ত্রিপাড়া, কামাল কাছনা, মাহিগঞ্জ, কলাবাড়ি দর্শনা, মডার্ন মোড়, মেডিকেল পাকার মাথা, জলকর, নিউ জুম্মাপাড়া, খটখটিয়াসহ অন্তত শতাধিক পাড়া-মহল্লার অলিগলিসহ প্রধান সড়কে পানি ওঠেছে। নিচু এলাকার বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ছন্নছাড়া অবস্থায় আছে নগরবাসীর জীবন। নিজ বাড়িতে রান্না করতে না পারায় দুর্ভোগ উঠেছে চরমে। অধিকাংশ হোটেল বন্ধ থাকায় খাবার কিনে খেতেও হিমশিম খান অনেকেই।

অবিরাম বৃষ্টিতে বাড়ির ভেতরে পানি ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। বিভিন্ন স্থানে ভারি বর্ষণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষজন সহসাই পায়নি যাতায়াতের বাহন। মিললেও গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া।

জেলার তিস্তা, করতোয়া, ঘাঘট, যমুনেশ্বরী নদীবিধৌত নিম্নাঞ্চলে আবারও দেখা দেয় বন্যা। তিস্তার ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ভারি বর্ষণ ও আর বজ্রপাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কৃষি জমি, ফসল আর পুকুর-বিল তলিয়ে যায় পানিতে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, বৃষ্টি আরো দুএকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এভাবে বৃষ্টিপাত হলে নগরীর বেশিরভাগ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানিয়েছে, নগরীর পানি নিষ্কাশনের অন্যতম শ্যামা সুন্দরী ক্যানেল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তবে ক্যানেলের পানি কমে আসলে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে পানিবন্দি এলাকাগুলো থেকে পানি নেমে যাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads