• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

কবি, নাট্যকার, গীতিকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

সংরক্ষিত ছবি

মতামত

স্মরণ

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

  • প্রকাশিত ১৭ মে ২০১৮

কবি, নাট্যকার, গীতিকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ১৮৬৩ সালের ১৯ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সাহিত্যে তিনি ‘ডি এল রায়’ নামেও পরিচিত। পিতা সুকণ্ঠ গায়ক কার্তিকেয়চন্দ্র রায় ছিলেন কৃষ্ণনগরের দেওয়ান এবং মাতা প্রসন্নময়ী দেবী ছিলেন জমিদার অদ্বৈত প্রভুর বংশধর।

দ্বিজেন্দ্রলাল হুগলি কলেজ থেকে বিএ এবং প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ (১৮৮৪) পাস করেন। চাকরিসূত্রে সরকারি বৃত্তি নিয়ে কৃষিবিদ্যা শেখার জন্য লন্ডন যান— রয়েল অ্যাগ্রিকালচারাল কলেজ ও অ্যাগ্রিকালচারাল সোসাইটির এমআরএসি এবং এমআরএসএ উপাধি লাভ করেন। দেশে ফিরে তিনি দিনাজপুরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হন। স্বাধীনচেতা দ্বিজেন্দ্রলাল প্রজাদের স্বার্থে ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। এজন্য তাকে ইংরেজের রোষানলে পড়তে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা আছে তার ‘একঘরে’ (১৮৮৯) নামক পুস্তিকায়। তিনি ১৯০৫ সালে কলকাতায় ‘পূর্ণিমা মিলন’ নামে একটি সাহিত্যিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এটি তখনকার শিক্ষিত ও সংস্কৃতিসেবী বাঙালির তীর্থস্থানে পরিণত হয়।

দ্বিজেন্দ্রলাল কৈশোরেই কাব্যচর্চা শুরু করেন। ছাত্রজীবনে তার ‘আর্য্যগাথা’ (প্রথম ভাগ, ১৮৮২) এবং বিলেতে থাকাকালে ‘Lyrics of Ind’ (১৮৮৬) কাব্য প্রকাশিত হয়। তার কাব্যগ্রন্থে প্রহসন, কাব্যনাট্য, ব্যঙ্গ ও হাস্যরসাত্মক কবিতা প্রাধান্য পেয়েছে। পৌরাণিক, সামাজিক, ঐতিহাসিক সব ধরনের নাটক রচনায় তিনি অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছেন। স্বদেশি আন্দোলনের ফলে তার মধ্যে যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত হয়েছিল, তার ঐতিহাসিক নাটক ও কালজয়ী গানগুলোতে তার প্রতিফলন ঘটেছে। দ্বিজেন্দ্রলালের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ- আলেখ্য, ত্রিবেণী, ত্র্যহস্পর্শ, প্রায়শ্চিত্ত, পুনর্জন্ম ইত্যাদি। নাট্যগ্রন্থ— পাষাণী, সীতা, ভীষ্ম, পরপারে, বঙ্গনারী, তারাবাই, রানা প্রতাপসিংহ, মেবার-পতন, নূরজাহান, সাজাহান, যে গ্রন্থগুলোর আবেদন এখনো অফুরান।

বাংলা গানের আধুনিকীকরণে যে পঞ্চ গীতিকবি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন, দ্বিজেন্দ্রলাল তাদের অন্যতম। তার গান ‘দ্বিজুবাবুর গান’ বা ‘দ্বিজেন্দ্রগীতি’ নামে পরিচিত। তার রচিত জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গানগুলোর মধ্যে ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’, ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বাংলার সঙ্গীতাঙ্গনে একটি সুস্থ সঙ্গীতপরিমণ্ডল সৃষ্টিতে ডি এল রায়ের অবদান সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ১৯১৩ সালের ১৭ মে কলকাতায় তিনি মারা যান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads