• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ইতিহাস মাহাথিরকে কীভাবে স্মরণ করবে

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ

ইন্টারনেট

মতামত

ইতিহাস মাহাথিরকে কীভাবে স্মরণ করবে

  • তারেক শামসুর রেহমান
  • প্রকাশিত ২০ মে ২০১৮

মাহাথির মোহাম্মদ এখন আবারো মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। এর আগে চার চারবার তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছিলেন। কেননা তার তখন বয়স হয়েছিল। তিনি নয়া এক নেতৃত্বের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছিলেন। সেটা ছিল একটা ব্যতিক্রমী ঘটনা। সাধারণত তৃতীয় বিশ্বের নেতারা ক্ষমতা ছাড়তে চান না। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখতে চান। পাঠক নিশ্চয়ই স্মরণ করতে পারবেন জিম্বাবুয়ের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুগারের কথা। ৯৩ বছর বয়সে এসে তিনি গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেজি সাঈদের বয়সও ৯০। মালয়েশিয়ার বর্তমান যে রাজা মুহিবুদ্দিন তুয়ানকো আবদুল হালিম সুলতান বদলিশাহ, তার বয়স ৮৯। কুয়েতের আমির সাবাহ আল-জাবের আল সাবাহ, তার বয়স ৮৭। ৮৫ বছর বয়সে রাহুল ক্যাস্ট্রো ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন চলতি বছর মার্চে (কিউবা)। পল বিয়া, ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট, তার বয়সও ৮৫। সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান, তার বয়স ৯০ ছুঁই ছুঁই করছে। এ পরিসংখ্যান হয়ত আরো দেওয়া যায়। কিন্তু এদের সঙ্গে মাহাথিরের পার্থক্য অনেক জায়গায়। মাহাথির স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছিলেন। তার দেশের মানুষের কাছে তিনি ছিলেন পরমপূজনীয় এক ব্যক্তিত্ব। মালয়েশিয়ার তরুণ সমাজকে একটি স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। যে কারণে গেল সপ্তাহে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাতে তরুণ প্রজন্ম ব্যাপকভাবে তাকে সমর্থন করে। এই ৯২ বছর বয়সকে তরুণ প্রজন্ম গুরুত্ব দেয়নি। তারা মনে করেছে জীবনের শেষপ্রান্তে এসেও মাহাথির এখনো কিছু দিতে পারবেন। ১৫ বছর পর তার এই ফিরে আসা তাই সঙ্গতকারণেই অনেক প্রশ্নের জন্ম দেবে। কতদূর যেতে পারবেন মাহাথির এখন? বয়স কি তার কর্মস্পৃহাকে বেঁধে ফেলবে? ইতিহাসে কীভাবে চিহ্নিত হবেন তিনি এখন? একজন সংস্কারবাদী নেতা? একজন কট্টর শাসক?

যারা মাহাথির মোহাম্মদের লিখিত The Malay Dilemma পাঠ করেছেন, তারা দেখেছেন কীভাবে মালয় জাতীয়তাবাদী আদর্শকে ধারণ করে মাহাথির মালয়েশিয়ার এক অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। ১৯৭০ সালে বইটি প্রকাশিত হয়েছিল। একধরনের উগ্র মালয় জাতীয়তাবাদী আদর্শ প্রচারের কারণে (মালয়ীরা ভূমিপুত্র, মালয়ভাষা মালয়েশিয়ার একমাত্র ভাষা এবং এ ভাষা সবাইকে জানতে হবে, মালয়েশিয়ায় চীনা ব্যবসায়ীদের প্রভাব কমানো ইত্যাদি) তার নিজ  দল উমনো (ইউনাইটেড মালয়াস ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন) থেকে তিনি বহিষ্কৃতও হয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালের ১৩ মে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে যে দাঙ্গা সংঘটিত হয়েছিল (মালয় বনাম চীনা বংশোদ্ভূতদের মধ্যে), তার জন্য মাহাথিরকে দায়ী করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় রাজা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পর্যন্ত বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এসব ঘটনা এখন অতীত। সাধারণ মানুষ তার নেতৃত্বাধীন জোটকে বিজয়ী করায় এটা প্রমাণিত হলো তার প্রতি মানুষের এখনো সমর্থন আছে। মাহাথির মোহাম্মদের এই বিজয় নিঃসন্দেহে মালয়েশিয়ার রাজনীতির জন্য একটি বড় ঘটনা। তবে তার প্রধান কাজ এখন পিকেআর (পার্টি কেয়াদিলান রাকায়েত বা পিপলস জাস্টিস পার্টি) প্রধান আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে একটা স্থায়ী সমঝোতায় যাওয়া। ইতোমধ্যে রাজার ক্ষমা প্রার্থনা মঞ্জুর হয়েছে এবং আনোয়ার ইব্রাহিম মুক্তি পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আনোয়ার ইব্রাহিমই হবেন ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী। অথচ মাহাথির যখন এর আগে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে তিনি আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলেন। সমকামিতার অভিযোগ এনে তাকে তিনি জেলেও পাঠিয়েছিলেন। সেই আনোয়ারই কিনা এখন তার শত্রু থেকে মিত্র। আনোয়ারই জেলে থাকা অবস্থায় পাকাতান হারপানের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মাহাথির মোহাম্মদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। একসময় আনোয়ার ইব্রাহিম মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন সরকারে উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।

মাহাথির মোহাম্মদ এই ৯২ বছর বয়সে এসেও যে ‘সাহস’ দেখিয়েছেন, তাতে অবাক না হয়ে পারা যায় না। নিজেই বলেছেন ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি কিছু ভুল করেছিলেন। এই ভুল শোধরানো ও মালয়েশিয়াকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্যই তিনি আবারো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বটি নিতে চান। তিনি ভুল করেছেন- এই যে স্বীকারোক্তি, এই স্বীকারোক্তিকে মানুষ সেখানে সম্মান দেখিয়েছে। তার প্রতি মানুষ আস্থা রেখেছে। এর ফল নির্বাচনে তার জোটের বিজয়। তার জন্য বিষয়টি অত সহজ ছিল না। কেননা মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে বারিসান ন্যাসিওনাল জোটের (১০ দল) একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। দীর্ঘ ৬০ বছরের ওপর এই জোট ক্ষমতায়। উপরন্তু পুরনো সব দলই দশদলীয় এই জোটে আছে। যেমন উমনো বা ইউনাইটেড ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের পাশাপাশি রয়েছে মালয়েশিয়ান চাইনিজ অর্গানাইজেশন, মালয়েশিয়ান ইন্ডিয়ান কংগ্রেস, সারওয়াক ইউনাইটেড পিপলস পার্টি, সাবাহ ইউনাইটেড পার্টি। চীনা ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে স্বাধীনতার পর পরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এদের সহযোগিতা নিয়েই উমনো দীর্ঘ ৬০ বছর একটি জোট বা ফ্রন্ট গঠন করে ক্ষমতা পরিচালনা করে আসছিল। এরা যে নির্বাচনে হেরে যাবে, এটা ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। কিন্তু মাহাথির মোহাম্মদ এই অসম্ভব কাজটি সম্ভব করলেন।

এটা বলতে দ্বিধা নেই যে, মাহাথির মোহাম্মদ দেশটিকে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। তিনি আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার। গত ১৫ বছর তিনি সরকার পরিচালনার সঙ্গে ছিলেন না। অর্থনীতিও আগের মতো নেই। আঞ্চলিক তথা বিশ্ব রাজনীতিতেও পরিবর্তন এসেছে। এ অঞ্চলে চীনের যে প্রভাব বাড়ছে, সে ব্যাপারে তিনি অবহিত। তাই দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই মাহাথির বলেছেন চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচিকে তিনি সমর্থন করবেন। অর্থাৎ উন্নয়ন ধারাকে চীনা অর্থায়নে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি। মালয়েশিয়াকে একটি শিল্পোন্নত দেশে পরিণত করতে চান। আর তাই বলেছেন, মালয়েশিয়া হবে একটি রফতানিকারক দেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে তার নীতি কী হয়, তা এখন দেখার বিষয়। অতীতে তিনি এ অঞ্চলে মার্কিনি নীতির সমালোচনা করেছিলেন। মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগও তিনি একসময় নিয়েছিলেন। জাতিসংঘের আদলে মুসলিম বিশ্বের জন্য ‘একটি জাতিসংঘ’ গঠন করারও প্রস্তাব ছিল তার। মালয়েশিয়ায় উগ্র ইসলামপন্থিরা সক্রিয়- এ ব্যাপারে তার ভূমিকা কী হয়, সেটাও দেখার বিষয়।

মালয়েশিয়ায় এই যে পরিবর্তন, এই পরিবর্তনকে অনেকে ‘রাজনৈতিক সুনামি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। অনেকগুলো প্রশ্ন এখন সামনে আছে। কী হতে পারে মালয়েশিয়ায় এখন? কিংবা মাহাথির কি আবারো তার পূর্বের ক্যারিশমা দেখাতে পারবেন? নির্বাচনী প্রচারণায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাহাথির যে ডাক দিয়েছিলেন, তা সাধারণ মানুষ গ্রহণ করেছে। মানুষ বিশ্বাস করেছে যে, ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়, প্রধানমন্ত্রী (নাজিব রাজাক) নিজে দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন। Malaysian Development Berhad নামে একটি বিনিয়োগ সংস্থা গঠন করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাজিব রাজাক। ওই বিনিয়োগ সংস্থা থেকে ৭০০ মিলিয়ন ডলার নাজিব রাজাকের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের (জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট) বরাতে এই দুর্নীতির তথ্য উদঘাটিত হয়েছিল। এই তথ্য নাজিব রাজাককে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ফেলে দেয়। তিনি এর জবাব দিতে পারেননি। শুধু বলেছেন, এই অর্থ এক সৌদি যুবরাজ তাকে দিয়েছে। কিন্তু মানুষ ওটা বিশ্বাস করেনি। একসময় নাজিব রাজাক ছিলেন মাহাথিরের ভাবশিষ্য। ২০০৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। একসময় রাজাক যাকে গুরু মানতেন সেই মাহাথির মোহাম্মদই তার পতন ডেকে আনেন। প্রশ্ন একটাই, এখন কি মাহাথির দুর্নীতির অভিযোগে নাজিব রাজাককে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবেন? এ প্রশ্নটি উঠেছে যখন দেশত্যাগে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যদিও মাহাথির বলেছেন তিনি কোনো প্রতিশোধ নেবেন না। তবে তিনি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন! এর অর্থ পরিষ্কার। নাজিব রাজাককে এখন ওই ৭০০ মিলিয়ন ডলারের বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রীয় তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে হবে। মাহাথির মোহাম্মদকে ওই বিষয়টির ফয়সালা করতেই হবে। কেননা তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় ওই দুর্নীতির বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। এমনকি আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তার সম্পর্ক কোন পর্যায়ে উন্নীত হয়, সেটাও দেখার বিষয়। আনোয়ার ইব্রাহিমকে জেল থেকে মুক্তি, তার জন্য সংসদে একটি আসন দেওয়া, অর্থাৎ একটি উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদে আসা- এসবই এখন মাহাথিরকে করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, সংসদে মাহাথিরের নিজ দলের আসন সংখ্যা কম, মাত্র ১২টি। তাকে সরকার পরিচালনায় আনোয়ার ইব্রাহিমের দলের ওপর নির্ভর করতে হবে, যাদের আসন সংখ্যা ৪৯। চূড়ান্ত বিচারে আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তিনি যদি কোনো বিষয়ে ‘বিবাদে’ জড়িয়ে যান, তাহলে তা তার জন্য ভালো কোনো সংবাদ বয়ে আনবে না। তার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। আগের মতো কর্মক্ষম নন তিনি। তিনি নিজে বলেছেন তিনি আনোয়ার ইব্রাহিমের হাতে ক্ষমতা দিয়ে পুনরায় ‘অবসরে’ যাবেন! তিনি যদি এদিকে অগ্রসর হন, তার নিজের জন্যও তা ভালো। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, তৃতীয় বিশ্বের অনেক নেতাই ক্ষমতা ধরে রাখতে চান শেষ বয়সে এসেও (জিম্বাবুয়ের রবার্ট মুগাবে)। এখন মাহাথির এটি করবেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়। সংসদের বর্তমান বিরোধী জোট হচ্ছে বারিসান ন্যাসিওনাল। সুষ্ঠু সরকার পরিচালনার জন্য মাহাথিরকে বড় দল ৪২ আসন পাওয়া ডেমোক্র্যাটিক অ্যাকশন পার্টি (জোট সদস্য) এবং তার পূর্বের দল উমনোর সঙ্গে একটা আস্থার সম্পর্কে যেতে হবে। এই দুটি বড় জোটের সঙ্গে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক না থাকলে, তিনি সরকার পরিচালনা করতে পারবেন না। বলা ভালো, দীর্ঘ ৬০ বছর যে দলটি অথবা জোট রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, প্রশাসনের সর্বত্র তার একটি সমর্থক শ্রেণি তৈরি হয়েছে। মাহাথিরকে এদের আস্থা অর্জন করতে হবে। কাজটি মাহাথিরের জন্য খুব সহজ নয় এবং মালয়েশিয়ার অর্থনীতি আর আগের অবস্থানে নেই। অর্থনীতিকে আগের জায়গায় নিয়ে যেতে হলে সেখানে একটি সুষ্ঠু নীতি ও স্থিতিশীলতা দরকার। মাহাথিরের একটা প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে, তিনি তার সঙ্গে পুরনো অনেক সহকর্মীকে পেয়েছেন, যারা যোগ্য। ফলে সরকার পরিচালনায় নতুনদের পাশাপাশি পুরনোদের সহযোগিতাও তিনি পাবেন। নিশ্চিত করেই বলা যায়, মালয়েশিয়ার এই নির্বাচন প্রমাণ করল নেতৃত্ব যদি সৎ হয়, তাহলে পরিবর্তন সম্ভব। এক্ষেত্রে বয়স কোনো ফ্যাক্টর নয়। মাহাথির সেটা দেখিয়ে দিলেন।

মাহাথির যেমন সম্মান কুড়িয়েছেন, ঠিক তেমনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগও আছে। তিনি একধরনের কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন। তার দীর্ঘ ২২ বছরের শাসনামলে বিরোধী দলের কার্যক্রম অত্যন্ত কঠোর হস্তে মোকাবেলা করেছিলেন। যে কারণে দেখা যায়, ওই সময় বিরোধী দলের কার্যক্রম তেমন একটা ছিল না। এখন যদি তিনি তা-ই করেন, তাহলে তিনি তার নামের প্রতি সুবিচার করবেন না। মালয়েশিয়ার রাজনীতির একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বিভিন্ন জাতি, উপজাতি, সংস্কৃতিতে বিভক্ত মানুষকে নিয়েই দেশটিতে একটি জোট রাজনীতি শুরু হয়েছিল। বারিসান ন্যাসিওনাল ছিল তারই ফলশ্রুতি। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই জোট রাজনীতিরই অনেকটা পতন ঘটেছে। বারিসান ন্যাসিওনালের সঙ্গে যে ১০টি দল ছিল, তাদের প্রায় সবারই (বড় দল উমনো বাদে) ভরাডুবি ঘটেছে। মাহাথির একটি জোট রাজনীতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বটে, কিন্তু সেখানে চীন ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের তেমন কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। মাত্র ১০ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভা তিনি গঠন করেছেন। এতে করে তার জোটবদ্ধরা কতটুকু খুশি হবেন, সেটাও একটা প্রশ্ন।

ডালাস, যুক্তরাষ্ট্র

লেখক : প্রফেসর ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

tsrahman09@gmail.com

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads