• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
বিপিন চন্দ্র পাল  

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনায়ক বিপিন চন্দ্র পাল  

সংরক্ষিত ছবি

মতামত

স্মরণ

বিপিন চন্দ্র পাল  

  • প্রকাশিত ২০ মে ২০১৮

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনায়ক, বাঙালি নেতা বিপিন চন্দ্র পালকে বহুবিধ পরিচয়সূচক বিশেষণে বিশেষায়িত করা যায়। দেশপ্রেমিক, রাজনীতিবিদ, বাগ্মী, সাংবাদিক, লেখক বিপিন চন্দ্র পাল ১৮৫৮ সালের ৭ নভেম্বর বৃহত্তর সিলেটের (বর্তমান হবিগঞ্জ) পইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা রামচন্দ্র পালের হাতেই বিপিনের লেখাপড়ার হাতেখড়ি। তারপর সিলেটের প্রাইজ স্কুল, হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি কলেজে ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। বৈষ্ণব মতানুসারী হলেও তিনি হিন্দু আচার-অনুষ্ঠান এবং ইসলামি চিন্তা-চেতনায় প্রভাবান্বিত ছিলেন।

বিপিন চন্দ্র পাল বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ রোধে এবং নারীশিক্ষার প্রচলনে তৎকালে ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি করেন। কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি আমৃত্যু লড়েছেন। তার প্রচেষ্টায় ১৮৭৭ সালে কলকাতায় শ্রীহট্ট সম্মিলনী স্থাপিত হয়। তিনি ১৮৮০ সালে সিলেটের মুফতি স্কুলের ভগ্নাংশ নিয়ে সিলেট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। সেই বছরই প্রকাশ করেন সিলেটের প্রথম বাংলা সংবাদপত্র ‘পরিদর্শন’। এ ছাড়া তিনি বেঙ্গল পাবলিক অপিনিয়ন, ট্রিবিউন, স্বরাজ, হিন্দু রিভিউ, সোনার বাংলা, ইনডিপেনডেন্ট, ডেমোক্রেটসহ অনেক পত্রিকায় সাংবাদিক ও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

বিপিন চন্দ্র পালের প্রথম উপন্যাস ‘শোভনা’ প্রকাশিত হয় ১৮৮৪ সালে। এ উপন্যাসে তিনি ছদ্মনাম ‘হরিদাস ভারতী’ ব্যবহার করেন। এর আখ্যাপত্রে লেখা আছে : ‘জীবন সংগ্রামে ভারতের নামে/যত রক্তবিন্দু গড়িবে এবার/শতপুত্র হবে বীর অবতার;/ভারত আধার ভারতের ভাব/ঘুচাই তারা/না জাগিলে সব ভারত ললনা/এ ভারত আর জাগে জাগে না।’

তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি ছিলেন অখণ্ড ভারত আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা। উপমহাদেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে বিপিন পালই একমাত্র বিরল প্রতিভার অধিকারী— যিনি একাধারে রাজনীতিবিদ, লেখক, সাংবাদিক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি অসাধারণ বাগ্মী ছিলেন। অনলবর্শী বক্তা হিসেবে তাকে ‘বাগ্মী বিপিন’ বলে অভিহিত করা হয়। বাংলা সাহিত্যাজ্ঞনে তার সৃষ্টির মধ্যে প্রবন্ধের সংখ্যাই বেশি। তা ছাড়া তিনি উপন্যাস, জীবনী, আত্মজীবনী, ইতিহাস রচনা করেছেন। তার ‘সত্তর বছর’ বইটি সেকালের সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসের দলিল হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৩২ সালের ২০ মে কলকাতায় তার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads