• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
নিকোলাস কোপারনিকাস

নিকোলাস কোপারনিকাস

ইন্টারনেট

মতামত

স্মরণ

নিকোলাস কোপারনিকাস

  • প্রকাশিত ২৪ মে ২০১৮

অন্ধকার, অজ্ঞতার যুগে আলো হয়ে জন্ম নেওয়া এক বিজ্ঞানীর নাম নিকোলাস কোপারনিকাস। নিতান্ত সত্য কথা যখন মুখ ফুটে বলা যেত না, সেই সময়ের সন্তান তিনি। জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসেবে তিনি পর্যবেক্ষণ করে গেছেন আকাশের গ্রহ, তারার গতিবিধি। শেষে লিখে গেছেন তৎকালীন ভুল ধারণার বিরুদ্ধে। কিন্তু এত সহজ ছিল না তথাকথিত জ্ঞানীদের বিরুদ্ধে কথা বলা। কোপারনিকাসের জন্ম ১৪৭৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি— পোল্যান্ডের ভিশ্চুলা নগরীর বন্দর এলাকা থর্নে। তিনি জ্যোতির্বিদ্যা, গণিতশাস্ত্র ও আইনশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেন। অধ্যয়ন শেষে বাল্টিক সাগরের ধারে এক গির্জায় যাজকের পদ লাভ করেন।

১৫৩১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তিনি চন্দ্র, সূর্য ও গ্রহের গতিপথ পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারেন, পৃথিবী নয়- সূর্যই সমগ্র বিশ্বের কেন্দ্র আর পৃথিবী সূর্য ও মঙ্গলের মাঝখানের একটি অবস্থান থেকে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। কোপারনিকাস ধর্মযাজক হওয়ায় এ ধর্মবিরোধী মতবাদ ১৩ বছর দেরিতে প্রকাশ করেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলোড়ন সৃষ্টিকারী এ গ্রন্থের নাম ‘দ্য রেভিলিউশনিবাস অরবিয়াম কোয়েলেসটিয়াম’ (De Revolutionibus Orbium Coelestium)। এ গ্রন্থে তিনি সৌরজগতের নানা বিষয়ে নিজস্ব ধারণা ব্যক্ত করেন। তিনি তার ধারণার ওপর প্রায় ৪০ বছর কাজ করেন। তার ধারণাকে ল্যাটিন ভাষায় দ্য রেভিলিউশনার্স বলা হয়। ছয় খণ্ডে রচিত গ্রন্থটি তৃতীয় পোপের সম্মানে উৎসর্গ করে তিনি বলেন, গণিতশাস্ত্র বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকলে কেউ যেন গ্রন্থটির সমালোচনা না করেন। কোপারনিকাস তার গ্রন্থে বলেন, পৃথিবী থেকে গ্রহ-নক্ষত্রের গতিপথ অনেক বেশি জটিল হওয়ার কারণ পৃথিবীর নিজের ঘূর্ণন। তাই সূর্য থেকে দেখলে পৃথিবীকে অপেক্ষাকৃত সরল ও একটি সাধারণ গ্রহ বলে মনে হবে। তিনি আরো বলেন, ঋতু পরিবর্তন ঘটে সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর আবর্তনের কারণে। গ্রহ-নক্ষত্রের আকার-অবস্থান-গতিবিষয়ক বৈজ্ঞানিক পাঠের ভিত্তি তারই হাতে গড়া।  

কোপারনিকাস শেষ বয়সে পক্ষাঘাত ও মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ১৫৪৩ সালের ২৪ মে ৭০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। সূর্য ও পৃথিবী সম্পর্কে নতুন সত্যটি প্রচারের জন্য কোপারনিকাস ক্যাথলিক চার্চের তীব্র সমালোচনা ও অবজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছিলেন। মৃত্যুর পর তাকে নাম-পরিচয়হীনভাবে অবহেলার সঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়। কোপারনিকাসের মতবাদের বৈজ্ঞানিক সত্যটি উন্মোচিত হওয়ায় মৃত্যুর পাঁচ শ বছর পর পোলিশ ক্যাথলিক চার্চ তার দেহাবশেষ পুনরায় বীরের মর্যাদায় সমাহিত করে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads