• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
মার্টিন হাইডেগার

জার্মান দার্শনিক মার্টিন হাইডেগার

সংরক্ষিত ছবি

মতামত

স্মরণ

মার্টিন হাইডেগার

  • প্রকাশিত ২৬ মে ২০১৮

জার্মান দার্শনিক মার্টিন হাইডেগার ১৮৮৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ জার্মানির এক ক্যাথলিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা গির্জার বাদক দলে সেক্সটন বাজাতেন। ছোটবেলায় তিনি যাজক হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ভর্তি হন ফয়েরবার্গ ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে তিনি ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে পড়াশোনা করেন। অবশ্য ১৭ বছর বয়সে হাইস্কুলে পড়াকালে ফ্রাঙ্ক ব্রানটানোর ‘অন দ্য মেনিফোল্ড মিনিং অব বিয়িং অ্যাকর্ডিং টু এরিস্টটল’ পড়ে দর্শনের প্রতি তার আগ্রহ তৈরি হয়। এই বই তাকে ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করে, যে কথা তিনি নিজেই স্বীকার করে গেছেন। ধর্মতত্ত্ব ছাড়াও তিনি দর্শন, গণিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। বলা হয়ে থাকে, তিনি পড়াশোনা ও গবেষণায় এতই মনোযোগী ছিলেন যে, ঠিকমতো খাবার গ্রহণ করতে ভুলে যেতেন। যে কারণে তিনি স্বাস্থ্যগতভাবে খুবই দুর্বল ছিলেন।

দর্শন বিষয়ে পড়াশোনার সময় ফেনমেনলজি বা অবভাসবিদ্যার জনক হিসেবে খ্যাত এডমন্ড হুর্সাল তাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেন। তিনি হুর্সালের ‘লজিক্যাল ইনভেস্টিগেশন’ পড়েন। একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার আগ্রহ জন্মে। সে বাসনায় থিসিসও করেন। থিসিসের শিরোনাম, ‘ডানস স্কটাস ডকট্রিন অব ক্যাটাগরিজ অ্যান্ড মিনিং’। ১৯২৩ সালে তিনি মার্বার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে তার জীবনে নানা উত্থান-পতন দেখা যায়। দার্শনিক হাইডেগার অস্তিত্ববাদ এবং অবভাসবিদ্যায় খ্যাতিমান ও স্মরণীয় হয়েছেন। দার্শনিক নৃতত্ত্ব, সাহিত্য, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সে তার ভূমিকা আছে। তার উল্লেখযোগ্য বই হলো- ‘বিয়িং অ্যান্ড টাইম’, ‘কান্ট অ্যান্ড প্রোব্লেম অব মেটাফিজিকস’, ‘এন ইন্ট্রোডাকশন টু মেটাফিজিকস’, ‘দ্য কোশ্চেন কনসার্নিং টেকনোলজি’ প্রভৃতি। এর মধ্যে ১৯২৭ সালে প্রকাশিত ‘বিয়িং অ্যান্ড টাইম’ মার্টিন হাইডেগারের সবচেয়ে বিখ্যাত বই।

হাইডেগারকে কন্টিনেন্টাল দর্শনের অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার প্রবর্তিত দার্শনিক তত্ত্ব ও ধারণা সাহিত্য, রাজনৈতিক তত্ত্ব, শিল্প ও স্থাপত্য, সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ব, মনঃসমীক্ষা বিদ্যাকে প্রভাবিত করেছে। হাইডেগার মনে করেন, বাস্তব জীবনে আমরা যেসব জিনিসের ব্যাপারে অভিজ্ঞতা অর্জন করি; সেগুলোর শুধু বাহ্যিকভাবে যা দেখি, তার চেয়েও বেশি কিছু থাকতে হবে। তিনি বিশ্বাস করতেন, কোনো স্বাধীন সত্তার প্রকৃত বৈশিষ্ট্য হলো তার প্রত্যাহার করার/হওয়ার ক্ষমতা। সত্তার নিগূঢ় বাস্তবতার মধ্যে বিদ্যমান পারস্পরিক ক্রিয়া হাইডেগারের দর্শনের মূল বিষয়। ১৯৭৬ সালের ২৬ মে দার্শনিক মার্টিন হাইডেগারের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads