• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
আবদুল কাদির

কবি আবদুল কাদির

সংরক্ষিত ছবি

মতামত

স্মরণ

আবদুল কাদির

  • প্রকাশিত ০১ জুন ২০১৮

সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিচরণ করলেও কবি হিসেবেই আবদুল কাদির সর্বাধিক খ্যাতিমান। রবীন্দ্র-নজরুল-উত্তর যুগে তথা তিরিশের দশকের শক্তিমান কবি বলা হয় তাকে। ছান্দসিক কবি হিসেবেও তার বিশেষ পরিচিতি ও খ্যাতি রয়েছে। ১৯০৬ সালের ১ জুন কুমিল্লা জেলার আড়াইসিধা গ্রামে তার জন্ম। পিতা হাজী আফসারউদ্দীন ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। শৈশবে মাতৃহারা হওয়ায় পিতার তত্ত্বাবধানেই তিনি বড় হন।

আবদুল কাদির ১৯২৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অন্নদা মডেল হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯২৫ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ শ্রেণিতে অধ্যয়ন করেন। মুসলিম সাহিত্যসমাজের নেতৃত্বে ঢাকায় যে ‘বুদ্ধির মুক্তি’ আন্দোলন সূচিত হয়, কবি আবদুল কাদির সেটির নেতৃস্থানীয় উদ্যোক্তা। তিনি ছিলেন সাহিত্যসমাজের মুখপত্র ‘শিখা’ (১৯২৭) পত্রিকার প্রকাশক। ‘ছন্দসমীক্ষণ’ (১৯৭৯) নামে তার একটি বিখ্যাত বই রয়েছে, যাতে তিনি বাংলা ছন্দ সম্পর্কে মৌলিক বক্তব্য রেখেছেন। তার ছন্দ বিচারের ক্ষমতা ছিল অতুলনীয়। সাহিত্য সম্পাদক হিসেবেও তিনি পরিশ্রমী এবং একনিষ্ঠতার ছাপ রেখেছেন। ১৯২৯ সালে তিনি কলকাতার মাসিক ‘সওগাত’ পত্রিকার সম্পাদনা বিভাগে যোগদান করেন। তিনি শুধু কবি নন, একাধারে শক্তিমান সাহিত্য সমালোচক, প্রাবন্ধিক ও নজরুল-গবেষক। তাকে নজরুল-বিশেষজ্ঞ বলাই যথার্থ। কবি আবদুল কাদির একজন সাংবাদিক এবং সাময়িক পত্রের সম্পাদক হিসেবেও খ্যাতিমান।

আবদুল কাদির কিছুকাল কলকাতা করপোরেশনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে ঢাকায় এসে তিনি মাসিক ‘মাহে নও’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। পরবর্তীকালে তিনি কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের প্রকাশনা কর্মকর্তা (১৯৬৪-১৯৭০) পদে দায়িত্ব পালন করেন। আবদুল কাদির কবিতা ও প্রবন্ধ রচনায় সিদ্ধহস্ত। তার উল্লেখযোগ্য কবিতা ও প্রবন্ধগ্রন্থ— দিলরুবা, উত্তর বসন্ত, কবি নজরুল, ছন্দসমীক্ষণ, কাজী আবদুল ওদুদ, বাংলা ছন্দের ইতিবৃত্ত, যুগকবি নজরুল ইত্যাদি। সাহিত্য সাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ আবদুল কাদির বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৩), আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৭), একুশে পদক (১৯৭৬), নজরুল একাডেমি স্বর্ণপদকসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। ১৯৮৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads