• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী

রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী

সংরক্ষিত ছবি

মতামত

স্মরণ

রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী

  • প্রকাশিত ০৬ জুন ২০১৮

রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ও দর্শনবিষয়ক প্রবন্ধ রচনার পথিকৃৎ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক। ১৮৬৪ সালের ২০ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জেমোকান্দিতে তার জন্ম। তার শিক্ষাজীবন ছিল অত্যন্ত কৃতিত্বপূর্ণ। প্রতিটি পরীক্ষায় তিনি অসাধারণ ফল অর্জন করেন। তিনি কান্দি ইংরেজি স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, কলকাতার  প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নশাস্ত্রে অনার্সসহ বিএ এবং পদার্থবিদ্যায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৮৮৮ সালে তিনি প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি অর্জন করেন। রামেন্দ্রসুন্দর ১৮৯২ সালে কলকাতা রিপন কলেজের বিজ্ঞানশাস্ত্রের অধ্যাপক নিযুক্ত হন এবং ১৯০৩ সালে কলেজের অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত হন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি এ পদেই কর্মরত ছিলেন। সাধনা, নবজীবন ও ভারতী পত্রিকায় প্রবন্ধ প্রকাশের মধ্য দিয়ে রামেন্দ্রসুন্দরের সাহিত্যিক জীবনের সূচনা। তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন এবং ১৮৯৯-১৯০৩ এবং ১৯১৭-১৮ সাল পর্যন্ত দুবার তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ভাষাতত্ত্ব, প্রাচ্য-প্রতীচ্য দর্শন, বিজ্ঞান, বেদবিদ্যা, লোকসাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে তার অসাধারণ জ্ঞান ছিল। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও দর্শনের জটিল তত্ত্ব প্রাঞ্জল ভাষায় তিনি বিশ্লেষণ করেছেন। মাতৃভাষার মাধ্যমে জ্ঞানচর্চাকে তিনি প্রাধান্য দিতেন।

রামেন্দ্রসুন্দর ছিলেন উগ্র স্বদেশপ্রেমিক ও জাতিভেদ প্রথার বিরোধী। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের তিনি ঘোর বিরোধী ছিলেন। বঙ্গভঙ্গের বিরোধী প্রতিক্রিয়ায় এ সময় তিনি রচনা করেন ‘বঙ্গলক্ষ্মীর ব্রতকথা’ গ্রন্থটি। তার রচনা মুক্তচিন্তার আলোকে দীপ্ত ও সাহিত্যরসে সমৃদ্ধ। তার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে প্রকৃতি, জিজ্ঞাসা, কর্মকথা, চরিতকথা, শব্দকথা, বিচিত্র জগৎ, নানাকথা প্রভৃতি। ‘শব্দকথা’য় বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ ও পরিভাষা সংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে। আর ‘নানাকথা’য় স্থান পেয়েছে যুগ ও জীবন, ব্যক্তি ও সমাজ, শিক্ষানীতি ও সমাজধর্মের কিছু প্রচলিত সমস্যা সম্পর্কে নিজস্ব অভিমত। বাঙালিদের মধ্যে বেদচর্চার ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেন, যার প্রমাণ পাওয়া যায় ‘তৎকৃত ঐতরেয় ব্রাহ্মণ’-এর  বঙ্গানুবাদ ও ‘যজ্ঞকথা’ গ্রন্থ রচনার মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া তিনি কয়েকটি পাঠ্যপুস্তকও রচনা করেন। সেগুলোর মধ্যে Aids to Natural Philosophy বইটি বিখ্যাত। ১৯১৯ সালের আজকের দিনে অর্থাৎ ৬ জুন রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী পরলোকগমন করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads