• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
উইলিয়াম কেরি

উইলিয়াম কেরি

ইন্টারনেট

মতামত

স্মরণ

উইলিয়াম কেরি

  • প্রকাশিত ০৯ জুন ২০১৮

ভারতবর্ষের মানুষকে যে ক’জন বিদেশি প্রগতি ও উন্নয়নের পথ দেখিয়েছিলেন উইলিয়াম কেরি তাদের অন্যতম। ১৭৬১ সালের ১৭ আগস্ট কেরি ইংল্যান্ডের নর্দাম্পটনশায়ারের পলার্সপুরি নামক এক গ্রামের চার্চের পাদরি এডমন্ড ও তার স্ত্রী এলিজাবেথ কেরির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৭৯৩ সালের ১৩ জুন স্বদেশ ত্যাগ করে তিনি সপরিবারে ওই বছরের ১১ নভেম্বর কলকাতায় পৌঁছান। উইলিয়াম কেরির বড় পরিচয় তিনি ছিলেন একজন সমাজ-সংস্কারক। ধর্মতত্ত্ব প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে মানবপ্রেমিক কেরি তার বৈচিত্র্যময় কর্মতৎপরতা দিয়ে দরিদ্র মানুষের উন্নতির জন্য সমাজ-সংস্কার, শিক্ষা, কৃষিকর্ম, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বড় ধরনের অবদান রেখে গেছেন।

কলকাতায় পৌঁছে উইলিয়াম কেরি পরিবেশ ও স্থানীয় জনজীবন সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য নদীয়া, মানিকতলা ও সুন্দরবনসহ বঙ্গদেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেন। তিনি বাঙালি পণ্ডিত রামরাম বসুর নিকট বাংলা শিখতে শুরু করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে বাংলা ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন।  একই সঙ্গে তিনি রামরাম বসুকে মুন্সি নিয়োগ করে তার সহায়তায় বাইবেলকে বাংলায় অনুবাদের কাজ শুরু করেন।  ১৭৯৪ সালে তিনি মালদহের মদনবাটি নীলকুঠিতে তত্ত্বাবধায়ক অফিসারের কাজ নেন। সেখানে তিনি প্রজাদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এদেশীয় ইংরেজ কর্মচারীদের সুবিধার্থে তিনি বাংলা ভাষায় একটি শব্দকোষ প্রণয়ন করেন। ১৮০০ সালে তার প্রচেষ্টায় শ্রীরামপুর মিশন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই মিশনে একটি প্রেস স্থাপন করা হয়। উইলিয়াম কেরি পঞ্চানন কর্মকারের সহায়তায় বাইবেলের অংশ বিশেষ বাংলায় অনুবাদ ও মুদ্রণ করেন।

কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে তাকে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার অধীনে মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার ও রামনাথ বাচস্পতি নামক দুজনকে পণ্ডিত এবং শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়, আনন্দ চন্দ্র, রাজীবলোচন মুখোপাধ্যায়, কাশীনাথ, পদ্মলোচন চূড়ামণি ও রামরাম বসুকে সহকারী পণ্ডিত নিযুক্ত করা হয়। উইলিয়াম কেরি ১৮০১ সালে ‘বাংলা ব্যাকরণ’ ও বাংলা গদ্যে ‘কথোপকথন’ গ্রন্থ প্রকাশ করেন।  ১৮১২ সালে তার বিখ্যাত ‘ইতিহাসমালা’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে তার বইগুলো অনবদ্য অবদান রেখে চলেছে। ১৮৩৪ সালের ৯ জুন শ্রীরামপুরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলা ভাষা ও বাঙালির জীবনমান উন্নয়নে তিনি কাজ করে গেছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads