• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
স্বনির্ভরতার হাতিয়ার হতে পারে সমবায়

স্বনির্ভরতা অর্জন এখনো দূরবর্তী বিষয় হয়ে আছে

আর্ট : রাকিব

মতামত

স্বনির্ভরতার হাতিয়ার হতে পারে সমবায়

  • ইউসুফ শরীফ
  • প্রকাশিত ১৩ জুন ২০১৮

গ্রামের মানুষ আজ কিছুটা স্বস্তির সাক্ষাৎ পেয়েছে। সেটা সম্ভব হয়েছে গ্রামীণ উৎপাদক শ্রেণির কর্মকাণ্ড প্রসারিতকরণের মধ্য দিয়ে। এই শ্রেণির মানুষের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে গার্মেন্ট এবং জনশক্তি রফতানি আয়ের অংশবিশেষ ভাগীদার হওয়ায়। আসলে এর কোনোটাই সুপরিকল্পিতভাবে শুরু হয়নি এবং অনেকদূর এগিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে যতটুকু মেধা-মনন ও কর্ম-উদ্যোগ যুক্তকরণ অপরিহার্য ছিল তা হয়েছে, এ কথা সংশ্লিষ্টজনেরাও সম্ভবত বলবেন না। সর্বোপরি এই দুই খাত থেকে গ্রামীণ জনপদে যে অর্থাগম হচ্ছে, তা এখনো তেমন উৎপাদনশীল কোনো কর্মে প্রয়োগ বাস্তব কারণেই সম্ভব হচ্ছে না। কঠিন দারিদ্র্যের কষাঘাত আংশিকভাবে ঠেকানোর কাজটি তাদের হয়তো হচ্ছে, তবে স্বনির্ভরতা অর্জন এখনো দূরবর্তী বিষয় হয়ে আছে।

সমবায় হতে পারত গ্রামীণ জনগণের স্বনির্ভরতার একটি সফল মাধ্যম— কিন্তু তা হয়নি। অথচ দেশে এক যুগেরও বেশি আগে সমবায়ের শতবর্ষ পূর্তি হয়েছে। ১৯০৪ সালে লর্ড কার্জন সমবায় ঋণদান সমিতি আইন প্রণয়ন করেন। ‘ইংলিশ ফ্রেন্ডলি সোসাইটিজ অ্যাক্ট-১৭৯৩’ অনুযায়ী প্রণীত হয়েছিল এই আইন। গ্রামীণ দরিদ্র উৎপাদক শ্রেণির সঞ্চয়, আত্মনির্ভরতা ও পারস্পরিক সহযোগিতার চেতনা সঞ্চারের মাধ্যমে তাদের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নকে এই আইনের লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসকদের এ লক্ষ্য কতটা আন্তরিক ছিল— এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু ১৯৪৭ সলে ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পর থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এ দেশের গ্রামীণ জনগণের সঞ্চয় ও আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার এ মাধ্যমটিকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, এমন বলার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পরও কি এ ক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে? হলে এ দেশের দরিদ্র মানুষের দারিদ্র্য চিরস্থায়ী করে রাখার লক্ষ্যে কোনো তৎপরতার অবকাশ থাকত না।

জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে দেশে কৃষকসহ গ্রামীণ সকল উৎপাদক শ্রেণির আর্থিক সচ্ছলতার জন্য সমন্বিত কর্মকাণ্ড পরিচালনা ছিল জরুরি। এটা করা হলে প্রথমত দেশের দারিদ্র্য বিমোচন সহজ হতো এবং দ্বিতীয়ত অর্থনীতির চাকা কার্যকরভাবে সচল হতো এবং সুখ-সমৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষাও অনেকাংশে পূরণ হতে পারত। বাস্তবিকপক্ষে যারা উন্নয়ন ক্ষেত্রে কাজ করবেন কিংবা উন্নয়ন-অগ্রগতি সাধন যাদের দায়িত্ব, তাদের উন্নয়ন ধারণা ও উন্নয়ন-প্রক্রিয়ার মধ্যে দুর্বলতা বা সমস্যা থেকেই গেছে। এটা জ্ঞাতসারে কিংবা অজান্তে যেভাবেই হোক জনজীবনে দুর্ভোগের দায় তাদেরও বহন করতে হবে। বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ অর্থনীতির দেশ। এ দেশে ভূমির তুলনায় লোকসংখ্যা অধিক হওয়ায় কৃষি ও কৃষিবহির্ভূত উৎপাদন-ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য ভূমির দুষ্প্রাপ্যতাও রয়েছে। কৃষি, অকৃষি সকল প্রকার উৎপাদন খাতে পুঁজি ও প্রযুক্তির অভাবও যথেষ্ট। এরকম অবস্থায় দারিদ্র্য বিমোচন বা উন্নয়ন অগ্রগতি যাই বলা হোক, তার মোক্ষম বাহন হতে পারে সমবায়। সমবায়ই পারে কৃষি ও কৃষিবহির্ভূত উৎপাদন ব্যবস্থায় সহজে ও দ্রুত পুঁজি এবং প্রযুক্তির জোগান সম্ভব করতে।

বিগত শত বছরের বেশি সময়ে সমবায় এ দেশে কখনোই তেমন গুরুত্ব পায়নি। ব্যাপক আকারে গভীরভাবে সমবায়কে এ দেশের মাটিতে রোপণের কাজটি করা হয়নি। সমবায়ী চেতনা জাগ্রত করার মধ্য দিয়ে সৎ, নিষ্ঠাবান সংগঠন এবং কর্মীবাহিনী গড়ে তোলা হয়নি। এর ফলে সমবায়ের ইতিবাচক দিকগুলোও বিশেষভাবে বিকশিত ও প্রকাশিত হতে পারেনি। তারপরও আশির দশক পর্যন্ত সমবায় নানারকম সমস্যার মধ্যেও কৃষক ও কৃষির উন্নয়ন যতটা করেছে এবং এর দ্বারা দরিদ্র মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে যতটুকুই অবদান রাখতে পেরেছে তাতেও এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, যথাযথ তাৎপর্যে সমবায়ের সুষ্ঠু সম্প্রসারণ দেশের অর্থনীতিকে সহজেই আকাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে বিকশিত ও সমৃদ্ধ করতে পারে। দেশে দেশে সমবায়ের উজ্জ্বল সাফল্যের নজিরও কম নেই। বাংলাদেশের চেয়েও হতদরিদ্র ও খারাপ অর্থনীতির দেশেও সমবায়ের সফল প্রয়োগ লক্ষ করা গেছে— সমবায়কে অবলম্বন করে কৃষি ও গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য উৎকর্ষ সাধনের নজিরও রয়েছে। ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ডেনমার্কসহ স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো, পূর্ব ইউরোপের সাবেক সোভিয়েট ব্লকভুক্ত দেশগুলো এবং কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতেও বৃহৎ আকারে সমবায়ের সফল নজির রয়েছে।

সমবায়ের দর্শন প্রথম প্রকাশিত হয় রবার্ট ওয়েন, লুইস ব্ল্যাঙ্ক, চার্লস ফুরিয়ার প্রমুখের লেখায়। প্রথম সার্থক সমবায় গড়ে ওঠে ১৮৪৪ সালে ইংল্যান্ডের রচডেল শহরের তাঁতিদের নিয়ে। তারা পুঁজিপতিদের শোষণ-মুক্ত থেকে সমবায়ভিত্তিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের দ্বারা তাদের তাঁত শিল্পের পুঁজি গঠন করেন। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সমবায়ী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘কো-অপারেটিভ হোলসেল সোসাইটি’ও এভাবেই গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে সমবায়ীদের দ্বারা এরকম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যেসব প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিনজেন ইন্টারন্যাশনাল’, জার্মানির ‘ডিডিকে’, ফ্রান্সের ‘এফএনসিসি’, জাপানের ‘জেন্নো’, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘সেন্ট্রাসযুজ’— ইত্যাদি। যৌথভাবে বীজ, সারসহ সব ধরনের কৃষি উপকরণ ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্য ক্রয় এবং উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিক্রয়ের লক্ষ্যে ইউরোপ এবং এশিয়ারও কোনো কোনো দেশে গড়ে ওঠা গ্রামীণ সমবায়গুলোর পাশাপাশি কৃষিঋণ সমিতিগুলোও ব্যাপক প্রভাব রাখছে সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনীতিতে।

কৃষি ও গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থায় সমবায়ী উদ্যোগের ক্ষেত্রে ডেনমার্ক এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে। ডেনমার্কের অর্থনীতিতে সমবায় বিরাট ভূমিকা পালন করেছে এবং এখনো করছে। ডেনমার্কের দুধ ও দুধজাতপণ্য, গোশত ইত্যাদির শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি আসে সমবায় ডেয়ারি ও পোল্ট্রি ফার্মগুলো থেকে। খুচরা বিক্রির ক্ষেত্রে সমবায় স্টোরগুলোর অংশগ্রহণ হলো শতকরা ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ। ডেনমার্কে প্রথম সমবায় স্টোর স্থাপিত হয় ১৮৬৬ সালে এবং প্রথম সমবায় ডেয়ারি স্থাপিত হয় ১৮৮২ সালে। বিশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্তও ডেনমার্কে সমবায় আন্দোলন পরিচালিত হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে ছোট ছোট সমবায়ের মাধ্যমেই। ডেনমার্কে প্রথম বড় আকারের সমবায়ী প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয় ‘ডেনিশ এগ্রিকালচারাল ফিডিংস্টাফস অ্যান্ড ফার্টিলাইজার্স’ ১৯৬৯ সালে এবং ‘এমডি ফুডস’ স্থাপিত হয় ১৯৭০ মালে। ডেনমার্কে সমবায় পরিচালনার জন্য কোনো বিশেষ আইন নেই— তবে ১৮৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সমবায় আন্দোলন সদস্যদের প্রয়োজনীয়তা এবং সময়ের চাহিদা মেটানোর জন্য মূল নীতিমালায় অভিযোজন অব্যাহত রয়েছে। এখানে উল্লেখ করা যায়, উনিশ শতকের শেষদিকে ডেনমার্কের কৃষক, পশুপালক ও মৎস্যজীবীদের অবস্থা মোটেও ভালো ছিল না। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সমবায়ের মাধ্যমে তাদের পারস্পরিক সহযোগিতা একত্রিত করে অগ্রসর হওয়ার ফলেই ডেনমার্ক আজ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অন্যতম। ডেনমার্কের সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের মতো দেশগুলোরও দেন-দরবারের অন্ত নেই।

বর্তমান বাংলাদেশের কৃষি, পশুপালনসহ গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থা যতই পিছিয়ে থাকুক না কেন, এরপরও সমবায়কে প্রকৃত চেতনায় এবং সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আন্দোলন হিসেবে গ্রহণ করলে উন্নয়ন-অগ্রগতির পথে অগ্রসর হওয়া খুবই সম্ভব। কৃষি ও পশুপালনে উৎকর্ষ সাধনে বাংলাদেশের কোনো বাধা নেই— কোনো বাধা নেই শাকসবজি, প্রক্রিয়াজাত ফলমূল, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাতপণ্য, মৎস্য-ডিম-গোশত ইত্যাদি রফতানিতে। আর এ জন্য উৎপাদন বৃদ্ধি থেকে শুরু করে পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যন্ত যে উদ্যোগ-আয়োজন প্রয়োজন, সে সবই সম্ভব কৃষক, পশুপালক ও গ্রামীণ উৎপাদকদের পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে সমবায় সমিতি গড়ে তুলে নিজস্ব পুঁজি সংগঠনের দ্বারা। সম্ভাবনার এ কথাগুলো বহুবার বহুভাবে বলা হয়েছে। আর প্রতিবার সমবায় দিবস উদযাপনকালে দেশে সমবায়ের উপযোগিতা ও গুরুত্বসূচক রুটিন বক্তব্য তো আছেই।

জাতীয় সমবায় দিবসকে উদযাপন উপলক্ষ করে প্রতিবছর সরকারি বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, গ্রামের জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভর করতে সমবায় ব্যাপক অবদান রাখতে পারে। সমবায়ের মতো এই বিশাল ও ব্যাপক সম্ভাবনাময় সংগঠন থেকে প্রত্যাশিত সুফল পেতে প্রতিটি সমবায় সমিতির অভ্যন্তরে সৎ ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার ওপর যথার্থ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সমবায়ের সম্ভাবনার কথা বলার পাশাপাশি সমবায় নিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতির কথাও বলা হয়েছে— বলা হয়েছে, সরকার সমবায়ের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের দ্বারা দেশের দারিদ্র্য দূর করতে চায়। এসব বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তব উদ্যোগ-আয়োজন ও পরিস্থিতির সম্পর্ক কতটা স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে, তা সংশ্লিষ্ট মহলের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে খতিয়ে দেখা হয়েছে বলে মনে হয় না। বাস্তবতা তলিয়ে দেখলে এই অতি সম্ভাবনাময় সেক্টরটিতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হতো এবং পরিস্থিতিরও যথেষ্ট উন্নতি হতে পারত। সমবায়-সংক্রান্ত কথা এবং কাজের মধ্যে যেকোনো কারণেই হোক, একটা বড় ধরনের ফাঁক রয়ে গেছে— এটা হতে পারে সমবায়কে যথাযথ গুরুত্ব ও তাৎপর্যে গ্রহণ না করার জন্য অথবা সমবায়কে অবলম্বন করে সাফল্যের পথে অগ্রসর হওয়ার চেয়ে বিদেশি ঋণ বা দান-অনুদান এবং এনজিওর কথিত ক্ষুদ্রঋণ বা দারিদ্র্য বিমোচন তৎপরতাকে অধিক যুৎসই মনে করার কারণে কিংবা চলমান অবস্থা থেকে উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্য যে পরিমাণ শ্রম, মেধা, ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ব্যয় করা দরকার, তা বহন করতে না চাওয়ার জন্যও এটা হতে পারে। যা হোক, অনেকের মনে এমন প্রশ্নও রয়েছে যে, দেশে এনজিওদের উত্থানের সঙ্গে কি সমবায়ের প্রতি অবহেলার কোনো সম্পর্ক রয়েছে?

ইতোমধ্যে সমবায় সমিতি আইন সংশোধিত হয়েছে। তবে এর সুফল পাওয়ার জন্য সমবায়ের সুষ্ঠু অনুশীলনে মনোযোগী হতে হবে। সরকার যদি মনে করে যে, সমবায়ের মাধ্যমে স্বনির্ভর দেশ গড়ার বৃহত্তর অংশের কাজ সম্পন্ন করা যাবে এবং এ জন্য গোটা দেশের কৃষক ও গ্রামীণ উৎপাদকদের সমবায়ে যুক্ত করতে হবে, তাহলে সমবায় ব্যবস্থা কী কী কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও হচ্ছে, সেসব আগে খুঁজে বের করতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে বেশকিছু কারণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- সমবায় সংগঠনগুলোর কর্ম-প্রক্রিয়ায় যোগ্য-দক্ষ ব্যবস্থাপনা না থাকার কথা বলা হয়েছে; এই আন্দোলনে সততা ও নিষ্ঠা সংযোজনের কথা হয়েছে এবং বলা হয়েছে সমবায়ের সংগঠকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণদানের কথাও। এ ছাড়া, আরো যেসব কথা উঠেছে তার মধ্যে সমবায়ের প্রতি কিছু বিমাতাসুলভ আচরণের প্রসঙ্গও রয়েছে।

সমবায় ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হলে কর্ম ব্যবস্থায় দায়িত্বশীলতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সার্বিকভাবে মালিকানা প্রসঙ্গ নিয়েও কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। সমবায়ীদের অংশগ্রহণই এখানে প্রথম ও শেষ কথা— তারাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং বাস্তবায়নের দায়-দায়িত্বও তাদেরই। অন্যদিকে বেসরকারি সংস্থাগুলোয় সাধারণত এসব ক্ষেত্রে নানা জটিলতা দেখা দেয় এবং তাদের দায়িত্বশীলতা নিয়েও নানারকম প্রশ্নের জন্ম হয়। যা হোক, আমাদের বিষয় এনজিও নয়, সমবায় এবং আমরা মনে করি, সমবায় দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে উন্নয়ন ও স্বনির্ভরতার পথে সফলভাবে এগিয়ে নিতে পারে। সমবায় আন্দোলন জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহূত হলে, তা হবে দূরদর্শী ও সহজতর জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ।

লেখক : সাংবাদিক, কথাসাহিত্যিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads