হজরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহ.) একজন বিখ্যাত ইরানি সুফিসাধক। ৮০৪ সালে ইরানের বোস্তাম শহরে তার জন্ম। হজরত বায়েজিদের দাদা একজন পার্সি ধর্মাবলম্বী ছিলেন, যিনি পরবর্তী সময়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার দাদার তিন ছেলে ছিল। তারা হলেন— আদম, তায়ফুর এবং আলী। তারা সবাই কঠোর তপস্বী ছিলেন। তায়ফুরের ছেলে হলেন বায়েজিদ। তার শৈশব সম্পর্কে বেশি কিছু জানা যায় না, তবে অধিকাংশ সময়েই তিনি নিজবাড়ির নিভৃতে অথবা মসজিদে কাটিয়েছেন। নিভৃতচারী হওয়া সত্ত্বেও সুফি জগৎ থেকে তিনি কখনই আলাদা থাকেননি। বায়েজিদ সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভের আশায় দুনিয়ার সব আনন্দ-ফুর্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। বায়েজিদই প্রথম উন্মত্ত সুফি হিসেবে পরিচিতি পান, কেননা তিনি সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিজের অনুভূতিগুলো খোলাখুলি প্রকাশ করতেন। বায়েজিদকে একজন অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু তিনি তার সময়ে বেশ বিতর্কিতও ছিলেন।
উল্লেখ আছে যে, একদা বায়েজিদ বোস্তামীর মা অসুস্থ ছিলেন। তিনি পানি পান করার জন্য বায়জিদ বোস্তামীকে পানি আনতে বললেন। বায়েজিদ ঘরে পানি না পেয়ে অন্ধকার রাতে নদী থেকে পানি নিয়ে আসেন। এসে দেখলেন মা ঘুমিয়ে আছেন। তিনি ভাবলেন মাকে জাগালে তার ঘুম ভেঙে যাবে। তাই তিনি পানি হাতে সারা রাত দাঁড়িয়ে থাকলেন। সকালে মায়ের ঘুম ভাঙার পর দেখলেন তার ছেলে পানি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি অবাক হলেন এবং খুশি হলেন। মা প্রাণভরে ছেলের জন্য দোয়া করেন। পরে পৃথিবী খ্যাত ওলি হিসেবে বায়েজিদ বোস্তামী পরিচিত হলেন। এই সুফিসাধক ৮৭৪ সালের আজকের দিনে, ৯ জুলাই ইন্তেকাল করেন।