• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ইসমাইল হোসেন সিরাজী

কবি, বাগ্মী এবং কৃষক নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী

সংরক্ষিত ছবি

মতামত

স্মরণ

ইসমাইল হোসেন সিরাজী

  • প্রকাশিত ১৩ জুলাই ২০১৮

ইসমাইল হোসেন সিরাজী কেবল কবিই ছিলেন না, তিনি একাধারে ছিলেন বাগ্মী এবং কৃষক নেতা। তিনি ১৮৮০ সালের আজকের দিনে অর্থাৎ ১৩ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন বিধায় নিজের নামের সঙ্গে ‘সিরাজী’ উপাধি যুক্ত করেন। পিতা আবদুল করিম খন্দকার ইউনানি (ভেষজ ওষুধ) চিকিৎসক ছিলেন। আর্থিকভাবে তেমন সচ্ছল না থাকায় যথেষ্ট মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও সিরাজীর কলেজে পড়া সম্ভব হয়নি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ করতে না পারলেও তিনি মেধা চর্চা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেননি। সিরাজী লেখালেখি এবং সভা সমিতিতে বক্তৃতা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার লেখা ও বক্তৃতার প্রধান বিষয়বস্তু ছিল বাংলার অনগ্রসর মুসলিম সমাজকে জাগিয়ে তোলা। বাগ্মী হিসেবে তিনি যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিলেন। মুসলমানদের স্বার্থের পক্ষে কথা বললেও তিনি সাম্প্রদায়িক ছিলেন না। তিনি মনে করতেন, সম্পদের সুষম বণ্টনের মধ্যেই হিন্দু-মুসলমানের সৌহার্দ্য নির্ভর করছে।

ইসমাইল হোসেন সিরাজী একই সঙ্গে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস,  মুসলিম লীগ, আঞ্জুমান-ই-উলামা-ই-বাঙ্গালা, জামিয়াত-ই-উলামা-ই-হিন্দ, স্বরাজ পার্টি ও কৃষক সমিতির সদস্য ছিলেন। তিনি অনুভব করেছিলেন যে, ধর্মীয় ও সেক্যুলার চিন্তার মধ্যে সমন্বয় সাধন করে একদিকে ভারতীয় মুসলমান সম্প্রদায়কে জাগিয়ে তোলা সম্ভব, আর একদিকে অবনতিশীল হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের উন্নয়নও সম্ভব। সমসাময়িক পত্রিকা আল-এসলাম, প্রবাসী, কোহিনূর, সোলতান, মোহাম্মদী, সওগাত, নবযুগ ও নবনূর প্রভৃতিতে সিরাজীর লেখা প্রকাশিত হতো। তার অধিকাংশ লেখাতেই ইসলামী ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকারকে উদ্দীপ্ত করে তোলার প্রয়াস ছিল। তিনি আধুনিক শিক্ষা ও সত্যিকার ইসলামী শিক্ষার পক্ষে বক্তব্য রেখেছিলেন। ইসমাইল হোসেন সিরাজী সিরাজগঞ্জে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি জমিদার ও মহাজনবিরোধী আন্দোলনে কৃষকদের সংগঠিত করেন।

অনল প্রবাহ, আকাঙ্ক্ষা, উচ্ছ্বাস, উদ্বোধন, নব উদ্দীপনা, স্পেন বিজয় কাব্য, সঙ্গীত সঞ্জীবনী এবং প্রেমাঞ্জলি তার উল্লেখযোগ্য কাব্য। এ ছাড়াও তিনি রায়নন্দিনী, তারাবাঈ, ফিরোজা বেগম ও নূরুদ্দীন নামক বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাসও রচনা করেন। ১৯৩১ সালে মাত্র ৫১ বছর বয়সে ইসমাইল হোসেন সিরাজী ইহধাম ত্যাগ করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads