• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
রাজনীতিকদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা

হিংসা-বিদ্বেষ আজ সমাজে এক সংক্রামক ব্যাধির রূপ ধারণ করেছে

আর্ট : রাকিব

মতামত

রাজনীতিকদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা

  • মহিউদ্দিন খান মোহন
  • প্রকাশিত ২১ জুলাই ২০১৮

বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নানা-নাতি পর্বের কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। নানার ভূমিকায় অভিনয় করতেন প্রখ্যাত অভিনেতা অমল বোস (বর্তমানে প্রয়াত), আর নাতির ভূমিকায় থাকত খর্বাকৃতির এক যুবক। একটি সিকোয়েন্স ছিল এরকম— নানা-নাতি ঈদের নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরছে। পথে একজনকে দেখে নানা ‘আরে ভাই কেমন আছেন?’ ঈদ মোবারক বলে কোলাকুলি করলেন। লোকটি চলে যাওয়ার পর নাতি বলল— ‘নানা, এই লোকের সঙ্গে না তোমার জমি নিয়া ঝগড়া, সারা বছর তো কথা কও না। আইজ যে বড় কোলাকুলি করলা!’ নানা উত্তরে বললেন— ‘ওই একদিনই।’ এরপর আরো দুজনের সঙ্গে নানা ঈদের কোলাকুলি করলেন, যাদের সঙ্গে সারা বছর তার বিরোধ লেগেই থাকে। নাতি যতবার প্রশ্ন করে, নানার একই উত্তর— ‘ওই একদিনই।’

এরপর নাতি নানাকে প্রশ্ন করল— আচ্ছা নানা, এই যে তুমি মনের মধ্যে হিংসা রাইখা ঈদের কোলাকুলি করলা, এতে কী লাভ হইল? সারা বছর হিংসা, ঝগড়া-ফ্যাসাদ কইরা একদিন কোলাকুলি কইরা লাভ কী?

নানা রেগে গিয়ে নাতিকে ধরে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে বললেন, এই জন্যই তরে আমার দুই চক্ষে দেখতে ইচ্ছা করে না। খালি প্রশ্ন করস। অ্যাই, তুই এত কথা কস ক্যান?

নাতির ঝটপট উত্তর— আমারে দুই চক্ষে দেখতে না চাইলে এক চক্ষে দেইখো। কিন্তু এই যে তুমি মনে একরকম আর বাইরে আরেকরকম ব্যবহার করলা, এইডা কি ঠিক হইল? এডারে কী কয় জানো? এইডারে কয় ভণ্ডামি।

মুখে একরকম আর বাইরে আরেকরকম, এমন চরিত্রের মানুষের অভাব নেই আমাদের সমাজে। এরা সৌজন্যের খাতিরে কিংবা লোকদেখানো ভালো মানুষী আচরণ করলেও অন্তরে বহন করে ‘ভূজঙ্গবিষ’, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে সময়ে সময়ে নানা কাজকর্মে। এর ফলে সমাজে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকে। হিংসা-বিদ্বেষ আজ সমাজে এক সংক্রামক ব্যাধির রূপ ধারণ করেছে। সব মানুষ যদি ভেতরে-বাইরে এক হতো, মুখে মধু আর অন্তরে বিষ না রাখত, তাহলে আমাদের সমাজ হয়তো অনেক ঝামেলা থেকেই মুক্ত থাকত। বলা বাহুল্য, সেরকম সমাজ থেকে আমরা বঞ্চিত।

একটু বড় পরিসরে যাওয়া যাক। আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে কী ঘটতে দেখা যায়? এখানে যারা বিচরণ করেন, তারা সবাই কী ভেতরে বাইরে একরকম মনোভাব পোষণ করেন? অন্তরে যেটা লালন করেন, কাজকর্মে কী তার প্রতিফলন দেখা যায়? জনগণের কথা না হয় বাদই দিলাম। জনগণ তো তাদের হাতের পুতুল হয়েই আছে। তারা যখন যেভাবে নাচান, জনগণ সেভাবেই নাচতে বাধ্য হয়। কিন্তু তারা যারা সমগোত্রীয়, অর্থাৎ রাজনীতিকরা নিজেদের মধ্যে কি সঠিক আচরণ করেন? তারা কি নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যের সম্পর্ক বজায় রেখে চলেন? কিংবা একে অপরের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখান? এসব প্রশ্নের উত্তর নেতিবাচক হবে সন্দেহ নেই।

তারপরও মাঝেমধ্যে এমন দু-একটি ঘটনা ঘটে, যেগুলো আলোচনায় স্থান পায়। যেমন সদ্যনির্বাচিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের তারই প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত ৪ জুলাই মেয়র জাহাঙ্গীর আলম হাসান উদ্দিন সরকারের সঙ্গে দেখা করেন। তারা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান। এ সময় নবনির্বাচিত মেয়র দায়িত্ব পালনে হাসান সরকারের সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করলে হাসান সরকার বলেন, সব ভালো কাজে আমি জাহাঙ্গীর আলমকে সাহায্য-সহযোগিতা করব। আমি আশা করি, নতুন মেয়র তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন। মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এ সময় বলেন, যেহেতু হাসান উদ্দিন সরকার একজন মুক্তিযোদ্ধা, তাই আমি তার নামে গাজীপুরের একটি রাস্তার নামকরণ করব।

হাসান উদ্দিন সরকারের নামে কোনো রাস্তার নামকরণ মেয়র জাহাঙ্গীর আলম করতে পারবেন কি-না, এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ যে বৈরিতার সাগরে আমাদের জাতীয় রাজনীতি হাবুডুবু খাচ্ছে, তাতে তার এ সদিচ্ছার সলিল সমাধির সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। কারণ সব কাজ মেয়র সাহেব তার ইচ্ছানুযায়ী করতে পারবেন- এমন আশা করা ঠিক নয়। জনগণ তাকে মেয়র বানালেও তাকে চলতে এবং কাজ করতে হবে তাকে যারা ওই পদে মনোনয়ন দিয়েছিল, তাদের ইশারা এবং নির্দেশে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপির একজন নেতার নামে রাস্তার নামকরণ করা সম্ভব হবে কি-না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে রাস্তার নাম হাসান সরকারের নামে হোক বা না হোক, মেয়র জাহাঙ্গীর আলম কৌশলে একটি কাজ সেরে ফেলেছেন। হাসান সরকারের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফলের স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ওই নির্বাচনে কারচুপি-ভোট ডাকাতির যে অভিযোগ বিএনপি তুলেছিল, তা অনেকাংশেই নড়বড়ে হয়ে গেল।

তারপরও এটা একটা ভালো দৃষ্টান্ত। পরাজিতের কাছে বিজয়ীর শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যাওয়াকে অনেকেই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন। তাদের কথা হলো— আমাদের জাতীয় নেতারাও যদি এমন সৌজন্য, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন, তাহলে আমাদের রাজনীতির অনেক সমস্যারই সহজ সমাধান সহজে হয়ে যেতে পারে।

কিন্তু বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা। আমাদের রাজনীতিকরা এ ধরনের উদারতা দেখাতে ব্যর্থ। মাঝেমধ্যে এরকম ব্যতিক্রমী ঘটনা অবশ্য ঘটে থাকে। তবে তার প্রভাব রাজনীতিতে খুব একটা পড়ে বলে মনে হয় না। অনেকেরই স্মরণ থাকার কথা, ১৯৯৪ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস বিজয়ী মেয়র মোহাম্মদ হানিফের বাসায় ফুল ও মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলেন শুভেচ্ছা জানাতে। ওই ঘটনাও তখন বেশ আলোড়ন তুলেছিল। অনেকেই আশা প্রকাশ করেছিলেন, এরপর হয়তো আমাদের রাজনীতিতে সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যের সুবাতাস বইতে শুরু করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেল সুবাতাসের পরিবর্তে সংঘাত-সংঘর্ষের লু-হাওয়া আমাদের রাজনীতিকে গ্রাস করে ফেলল।

নির্বাচনে পরাজয় সহজে মেনে নেওয়ার নজির আমাদের দেশের ইতিহাসে খুব কমই আছে। পরাজিত দলের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনা যেন আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী পরাজিত প্রার্থীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ বা পরাজিত প্রার্থী নির্বাচিত প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাতে দেখা গেলেও জাতীয় নির্বাচনে থাকে তা একেবারেই অনুপস্থিত। জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী দলকে পরাজিত দল অভিনন্দন জানিয়েছে এমন একটি দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যাবে না। যতদূর মনে পড়ে, ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর পরাজিত প্রার্থী জেনারেল এমএজি ওসমানী (অব.) বিজয়ী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। অভিনন্দনবার্তায় অবশ্য তিনি লিখেছিলেন— নির্বাচনে কিছু অনিয়ম হয়েছে, তবে কারচুপি হয়েছে এ কথা তিনি বলতে চান না। জেনারেল ওসমানী ওই নির্বাচনে তার পরাজয়কে সহজভাবেই মেনে নিয়েছিলেন।

বস্তুত একটি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ তখনই স্বস্তিদায়ক ও স্থিতিশীল হয়, যখন সে দেশের রাজনীতিকরা ইতিবাচক মনোভাবের হন। তারা যদি পরমতসহিষ্ণু না হন, প্রতিপক্ষকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে শত্রু ভাবেন, তাহলে পরিস্থিতি ধারণ করে ভিন্ন রূপ, যা আজ আমাদের দেশে বিদ্যমান। আমাদের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ যে স্বস্তিদায়ক নয়, বরং ভীষণ রকম অস্বস্তিকর তা নিয়ে কারো দ্বিমত আছে বলে মনে হয় না। রাজনীতিবিদরা একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে অত্যন্ত কৃপণ। অপরকে সম্মান দেখালে যে নিজেও সম্মানিত হওয়া যায়, এটা যেন তারা বিস্মৃত হয়েছেন। আর সেজন্যই দেখা যায় প্রায়ই তারা পরস্পরকে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করে কথা বলেন, কুৎসা রটনায় প্রবৃত্ত হন। এর দ্বারা যে তারা নিজেদেরই জনসমক্ষে হেয়প্রতিপন্ন করে চলেছেন, সেটা তারা খেয়াল করছেন না। এই আমাদেরই দেশে একটি সময় ছিল, যখন রাজনীতিকরা একে অপরকে অত্যন্ত সম্মান করতেন, সমীহ করতেন। কথা বলতেন, সমালোচনা করতেন সম্মান সহকারে। বক্তৃতা-বিবৃতিতে ‘অমুক সাহেব’ বা ‘ওই দলের নেতা’ সম্বোধন করে তীব্র সমালোচনা করতেন। তারা কাউকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলতেন না। রাজনৈতিক সমালোচনা করতে গিয়ে কারো চরিত্র হননের চেষ্টা করতেন না। তাই বলে কি তাদের বক্তৃতার ধার কমে যেত, নাকি পাবলিক তা শুনত না? বরং জনগণের মধ্যে সেসব বরেণ্য রাজনীতিকের বক্তৃতার আবেদন ছিল অপরিমেয়। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের কথাই ধরা যাক। জীবদ্দশায় তারা হাজার হাজার বক্তৃতা করেছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের কারো সম্পর্কে একটি অশালীন শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করেছেন এমন উদাহরণ কি কেউ দিতে পারবেন? অথচ তাদের উত্তরসূরি হিসেবে যারা নিজেদের দাবি করেন, তাদের কারো কারো কথা শুনলে কানে আঙুল দিতে হয়। অনেকে বলেন, আমাদের রাজনীতির অভিধান থেকে ‘সৌজন্যবোধ’ ও ‘সম্মান’ শব্দ দুটি মুছে গেছে। যার ফলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর রকম অবক্ষয় বাসা বেঁধেছে।

আমাদের দুই শীর্ষনেত্রী ঈদ কিংবা নতুন বছর উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন। ঈদকার্ড বা নববর্ষের কার্ডই তাদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের একমাত্র মাধ্যম। তাদের পক্ষে পত্রবাহকরা তা পৌঁছে দিয়ে আসেন। অবশ্য কারাগারে থাকার কারণে গত ঈদুল ফিতরে বিএনপি চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে পারেননি। তাদের এ শুভেচ্ছা বিনিময় আমাদের রাজনীতিতে তেমন কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পেরেছে বলে মনে হয় না। রাজনৈতিক নানা ইস্যুতে তারা এমন বিপরীতমুখী অবস্থানে পৌঁছেছেন যে, বছরে তাদের দু-চারটি শুভেচ্ছা কার্ড বিনিময় জনগণের মধ্যে আর আশার আলো সঞ্চারিত করে না।

সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব দেখতে চায়। খেলার মাঠে দুই পক্ষ জয় করায়ত্ত করতে প্রাণপণ লড়াই করে, কেউ কাউকে চুল পরিমাণ ছাড় দেয় না, মনোভাব থাকে যুদ্ধংদেহী; কিন্তু খেলা শেষে জয়-পরাজয় যা-ই হোক, তারা মাঠ ত্যাগ করে হাসিমুখে পরস্পর করমর্দন করে। তেমনি জনগণ চায় তাদের নেতারা খেলোয়াড়দের মতো হোন। তারা একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাববেন, দুশমন নয়। নির্বাচনে (নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হতে হবে) পরাজয় হলে তা মেনে নিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরবেন। তারা চায় তাদের নেতারা হবেন উদার, সংকীর্ণতাহীন মনের অধিকারী। তারা পরস্পরকে শ্রদ্ধার চোখে দেখবেন, নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতি সৌহার্দ্য বজায় রাখবেন। তাহলে তাদের অনুসারীরাও একই মনোবৃত্তি পোষণ করবে। তাতে রাজনৈতিক সংঘাত-সংঘর্ষ কমে আসবে। রাজনীতি থেকে হানাহানি দূর হবে, সমাজে শান্তি ফিরে আসবে। তারা চায় তাদের নেতা-নেত্রীরা কোনো বিশেষ উপলক্ষে নয়, সব সময় একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাবেন, শুভ কামনা করবেন এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা সম্মান বজায় রাখবেন। তারা নেতা-নেত্রীদের অনুসরণযোগ্য আদর্শ হিসেবে দেখতে চায়। তারা চায় রাজনীতিকরা ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থে নয়, নিজেদের সব সময় নিয়োজিত রাখবেন দেশ ও জাতির সেবায়। জনগণের এ ঐকান্তিক চাওয়া কখনো পূরণ হবে কি-না, একমাত্র ভবিতব্যই বলতে পারে।

লেখক : সাংবাদিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads