• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
নগরীর পানি নিষ্কাশনে সুষ্ঠু ব্যবস্থা দরকার

নগরীর পানি নিষ্কাশনে সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকালে মানুষের ভোগান্তি যেভাবে বৃদ্ধি পায়

ছবি : বাংলাদেশের খবর

মতামত

নগরীর পানি নিষ্কাশনে সুষ্ঠু ব্যবস্থা দরকার

  • ইউসুফ শরীফ
  • প্রকাশিত ২৫ জুলাই ২০১৮

নগরীতে গত ক’বছরে ভাঙাচুরা অনেক রাস্তা পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। প্রশংসনীয় এই উদ্যোগ নগরবাসীর জন্য স্বস্তিদায়ক এতে সন্দেহ নেই। তবে নগরীর পানি নিষ্কাশনে সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকালে এসব কাজে মানুষের ভোগান্তি যেভাবে বৃদ্ধি পায়, তাতে এ প্রশ্নও ওঠে যে, বর্ষাকালেই কেন বেশি করে চলে রাস্তাঘাট তৈরি-মেরামত-সংস্কার বা উন্নয়ন কাজ— এসব কাজের জন্য বর্ষার সময়টা কেন বাদ দেওয়া যায় না। এর কারণ হিসেবে জুন মাসে অর্থবছর শেষ হয় বলে এ-সময়টায় কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদের কথা যতই বলা হোক না কেন, জনদুর্ভোগের বিষয়টি সর্বোচ্চ বিবেচনা না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। এছাড়া বর্ষাকালে রাস্তা-ড্রেন ও ফুটপাতের কোনোরকম সংস্কার কিংবা কোনো সংস্থার পাইপলাইনের কাজ মানসম্মত হওয়ারও কোনো সুযোগ থাকে না। কেন থাকে না তা সংশ্লিষ্টরাই ভালো জানেন। উন্নয়ন পূর্বাপর সুচিন্তিত, সুপরিকল্পিত এবং সর্বোপরি সমন্বিত হবে, এটাই যৌক্তিক এবং নগরবাসীর আকাঙ্ক্ষিত।

রাজধানীর কোনো কোনো এলাকায় বৃষ্টি হলে পানি জমে, যানজট লেগে থাকে এবং পথচারীদের যাতায়াতে অসুবিধা হয়— এসব অজানা কোনো বিষয় নয়। অল্প বৃষ্টিপাতেও রাজধানীর নানা এলাকা রাস্তাসহ পানিতে তলিয়ে যেতে পারে এটা প্রায় অবিশ্বাস্য হলেও বর্ষায় হরদম ঘটছে এবং দুর্ভোগময় অভিজ্ঞতাও অর্জিত হচ্ছে নগরবাসীর। বৃষ্টি থামার বেশ পর থেকে পানি কমতে শুরু করলেও তা এতটাই ধীরগতিতে যে, জলজট আর যানজটে নগরবাসীকে দীর্ঘ সময় চরম নাকাল-দশায় থাকতে হয়। গত সোমবার মাত্র ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিতেই জলজট-যানজটে মানুষের কী চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছিল, তার সচিত্র খবর গতকালের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। মতিঝিল থেকে মিরপুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় মানুষকে অসহনীয় ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। নগরী হিসেবে রাজধানীর আরো সমস্যা আছে। তবে নগরীর বিভিন্ন এলাকা পানিতে ডুবে যাওয়া এক জটিল সমস্যা— যা তাৎক্ষণিকভাবে মহানগরীর জীবনযাত্রায় স্থবিরতা ডেকে আনে। মারাত্মক এই সমস্যা এখন আর শুধু বন্যার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকছে না, বরং বৃষ্টিপাতের সঙ্গেও সম্পর্কযুক্ত হয়ে পড়ছে। অল্প বৃষ্টিপাতেও অনেক জায়গায় রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যাওয়া রাজধানী নগরীর জন্য মোটেই কাঙ্ক্ষিত হতে পারে না।

বর্ষায়-বন্যায় মহানগরীর চারপাশের বিরাট অংশ তলিয়ে যাওয়ার কারণগুলোর সঙ্গে দুই-একদিনের বৃষ্টিপাতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার কারণগুলোর একটা বড় মিল রয়েছে। আর তা হলো, অতীতে নগরীর অতি অপরিহার্য ড্রেনেজ অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং চারপাশের নদ-নদীর বন্যার পানি ঠেকানোর ব্যবস্থা গ্রহণে রয়েছে কর্তৃপক্ষীয় অমনোযোগিতা, অবহেলা। গত কয়েক দশকে এই নগরীর ফুটপাত ও আইল্যান্ড কতবার ভাঙা ও নির্মাণ করা হয়েছে এবং তাতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে, তার হিসাব নিলে হয়তো দেখা যাবে- সেই টাকা দিয়ে বর্তমানে যে পরিমাণ রাস্তা আছে, সেই রাস্তা প্রশস্ত ও মানোন্নত করাসহ প্রায় দ্বিগুণ করা যেতে পারত। রাজধানীতে যানজটের কারণ যানবাহনের তুলনায় রাস্তার পরিমাণ কম। বিভিন্ন সময়ে নগরীর ফুটপাত ও আইল্যান্ড ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করতে গিয়ে এমন বহু ফুটপাত এবং আইল্যান্ডও ভেঙে ফেলা হয়েছে ও হচ্ছে, যা আরো দশ বছর পর মেরামত করলেও সৌন্দর্যের বা প্রয়োজনীয়তার কোনো ক্ষতি হতো না। বরং অনেক জায়গায় গাছপালাসমৃদ্ধ দৃষ্টিনন্দন আইল্যান্ডও ভেঙে ফেলা হয়েছে। একদিনের বৃষ্টিতে যে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে, সেই নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনের আগে স্যুয়ারেজ ও ড্রেনেজ সিস্টেম গড়ে তোলা যে অপরিহার্য— এটা অতীতে ভাবা হয়নি। এরকম কত অসঙ্গতির নজির যে এই নগরীতে ছড়িয়ে আছে তার ইয়ত্তা নেই। এই মহানগরীর নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ও সৌন্দর্যময়তার পেছনে কোনো সুষ্ঠু বিবেচনা ও পরিকল্পনা কাজ করেনি। এই নগরী পরিকল্পিতভাবে বিল্ডআপ হয়নি। ফলে এক জায়গায় যানজট হলে কয়েক মিনিটের মধ্যে তা সারা নগরীতে ছড়িয়ে পড়ে।

ঢাকা নগরীর অভ্যন্তরে যেসব খাল-নালা ছিল, তার অনেকগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি চারপাশে ছোটবড় নদ-নদীতে নেমে যাওয়ার পথ বহুলাংশে রুদ্ধ হয়ে গেছে। জমে থাকা বৃষ্টির পানি এবং এসব নদীর জোয়ারের পানি স্বাভাবিকভাবেই নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করে। এটা ঢাকা মহানগরীর পুরনো সমস্যা। পাঁচ শতাব্দীরও বেশি বয়সী এই নগরী শুরু থেকেই ছিল চারপাশে নদ-নদী-খাল, জলাভূমিবেষ্টিত। অতীতে নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত অসংখ্য খাল-নালা ছিল নগরীর বর্জ্য পানি, বৃষ্টির পানি বয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রাকৃতিক ড্রেনবিশেষ। খাল-নালা বেয়ে পানি গিয়ে পড়ত চারপাশের নিচু জলাশয়ে ও নদ-নদীতে। গত  প্রায় ৬০ বছরে নগরীর আয়তন ও জনসংখ্যা বেড়েছে বহু-বহুগুণ। নির্বিচারে ভরাট হয়েছে খাল-নালা, কিন্তু গড়ে তোলা হয়নি বর্জ্য পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। স্যুয়ারেজ সিস্টেম যেটুকুও বা আছে, তাও যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে অকেজো হয়ে থাকে। ফলে নগরীর বর্জ্য পানি, বৃষ্টির পানি সহজে বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে না, আবার বন্যার পানি সহজেই নগরীতে প্রবেশ করে অধিকাংশ এলাকাকে উপদ্রুত করে তোলে। এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে এর কোনো সুষ্ঠু প্রতিকার হয়নি।

মহানগরীর পানিবদ্ধতা বর্তমানে কোন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে, তার নজিরও অল্প বৃষ্টিপাতেই পানি জমে নগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার মধ্যে পাওয়া গেছে। এটা হতে পেরেছে মূলত দুটি কারণে। প্রথমত প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা হিসেবে যেসব খাল-নালা ছিল, সেসবের অধিকাংশই ভরাট করে ফেলা হয়েছে আর যেগুলোর অস্তিত্ব কোনোমতে টিকে আছে, সেগুলোও সংরক্ষণের অভাবে প্রায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে আগের মতো পানি বহন করতে পারে না। বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত তথ্যাদি থেকে জানা যায়, ষাটের দশকেও ঢাকা মহানগরীতে প্রায় ৫০টি খাল ছিল এবং এসব খালের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ২৫৬ কিলোমিটার। বর্তমানে কাগজে-কলমে খালের সংখ্যা ২৬টি এবং এগুলোর দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ১২৫ কিলোমিটার। বাকি ১৩১ কিলোমিটার খাল বেদখল হয়ে গেছে। এ হিসাবও প্রায় এক দশক আগের। খাল-নালা ভরাট করে নির্মিত হয়েছে অবৈধ মার্কেট, রাস্তা, বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা। বিভিন্ন সময়ে বেদখল হয়ে যাওয়া খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত বা পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পাকিস্তান আমলের সিএস জরিপ অনুযায়ী ঢাকার যেখানে যে খাল যে আয়তনে প্রবহমান ছিল, ঠিক সেভাবেই চিহ্নিত করে তা উদ্ধার করা হবে। আমলাতন্ত্রের গ্যাঁড়াকলে পড়ে এই খাল পুনরুদ্ধার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হতে দেখা গেছে যথাযথ তত্ত্বাবধান না থাকায়। এক দশক আগেও সম্পূর্ণ ও আংশিক সচল যেসব খাল ছিল, এসবের বর্তমান অবস্থা কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবেন। বাকিগুলোর কোনো কোনোটির প্রবাহ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে, আবার কোনো কোনোটির উপরে বক্স কালভার্ট তৈরি করে রাস্তা বানানো হয়েছে। ঢাকার জেলা প্রশাসনের জরিপে বাকি যে ১৬টি খাল চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— এগুলো অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও পুনঃখননের সুপারিশ করেছিল সেই জরিপ কমিটি। এই ৩৫টি খালের মধ্যে ৮টির ওপর দিয়ে পিচঢালা সড়কও নির্মিত হয়েছে।

ঢাকার ড্রেনেজ সিস্টেমের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে, প্রায় দেড় কোটি লোক নিয়ে এই মহানগরী কী ভয়ংকর অবস্থায় রয়েছে। এখনো অনেক এলাকা ওয়াসার ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ব্যাসার্ধের ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজ লাইন, স্টর্ম স্যুয়ারেজ লাইন ও বক্স কালভার্ট লাইনের মধ্যে আন্তঃসংযোগ গড়ে তুলতে না পারায় নগরীর অসংখ্য স্থানে ম্যানহোল উপচে ড্রেন ও স্যুয়ারেজের পানি রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। নগরীর সব ড্রেন, স্যুয়ারেজ লাইন ও বক্স কালভার্টে হাজার হাজার টন কঠিন ও তরল বর্জ্য জমা হয়। এতে ড্রেনগুলোর এক-তৃতীয়াংশ সরু পথে দীর্ঘ সময় নিয়ে পানি ও বর্জ্য নির্গত হতে পারছে মাত্র। মহানগরীর ড্রেনেজ সিস্টেমের এই দশায় বৃষ্টির পানি দ্রুত নামতে না পেরে স্যুয়ারেজের পানি উপরে উঠে আসবে, এই বাস্তবতা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হতে হয় না।

এই পরিস্থিতিতে ড্রেন, স্টর্ম স্যুয়ারেজ লাইন অর্থাৎ পুরো ড্রেনেজ সিস্টেম নিয়ে ভাবতে হবে জরুরিভিত্তিতে এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কার্যকর পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে। স্যুয়ারেজ লাইনে আটকে থাকা কঠিন ও গৃহস্থালি বর্জ্য, নির্মাণসামগ্রী, বালি, কাদা, পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, পুরনো কাপড়, কাগজ, গাছের ডাল-পাতা, ভাঙা দালানকোঠার রাবিশ, ময়লা-আবর্জনা ইত্যাদি যা কিছুতেই ভরাট হয়ে থাকুক, সেসব পরিষ্কার করতে হবে এবং পরিষ্কার রাখার সার্বক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত মহানগরীর যেসব এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই, সেখানে সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থাহীনতা যে কোনো মুহূর্তে নগরীর কর্মচাঞ্চল্য স্তব্ধ করে দিতে পারে। প্রতি বর্ষায় এর নজির বেশ ভালোভাবেই পাওয়া যায়। নগরীর পূর্বাঞ্চলে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের অপরিহার্যতা আবার নতুন করে দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, এক হিসাবে দেখা যায়, ভয়াবহ বন্যা ছাড়াও প্রতি বর্ষা মৌসুমে মহানগরীর ১২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয় ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে ৪০ লাখেরও বেশি লোক চরম ভোগান্তির শিকার হয়। উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালের প্রলয়ংকরী বন্যার পর শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। প্রথম পর্যায়ে টঙ্গীর আবদুল্লাহপুর থেকে লালবাগ কেল্লার মোড় পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর ফলে নগরীর পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি থেকে বহুলাংশে মুক্ত থাকতে পারছে। একইভাবে নগরীর পূর্বাঞ্চলেও ২ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা সমন্বিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম ইস্টার্ন বাইপাস সড়ক বহুমুখী প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল ১৯৯৮-৯৯ থেকে ২০০৩-০৪ সাল পর্যন্ত। নিজস্ব অর্থায়ন ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা এবং বিদেশি প্রকল্প সাহায্য ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। কাঁচপুর ব্রিজ থেকে টঙ্গী রেলওয়ে ব্রিজ পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার বাঁধ এবং টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এই প্রকল্পের আওতায় রাখা হয়েছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না, এতে বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি থেকে শহর রক্ষা ছাড়াও নগরীর যানজট বহুলাংশে হ্রাস পাওয়ার কথা।

রাজধানী নগরীর অপরিহার্য অবকাঠামো সংস্কার-নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণে দূরদৃষ্টিহীনতার আশু অবসান জরুরি। একসময় ঢাকা মহানগরীকে ‘তিলোত্তমা নগরী’ করে তোলার কথাও আমরা শুনেছি। তারপর প্রায় তিন দশক পার হয়ে গেছে। আজ মহানগরীর বিরাট এলাকার রাস্তায় যখন অল্প পরিমাণ বৃষ্টিতেও পানি জমে যায়, ত্রিশ মিনিটের রাস্তা পার হতে যখন তিন ঘণ্টা অসহায় হয়ে যানবাহনে বসে থাকতে হয়, যখন নগরীর কর্মচাঞ্চল্য স্তব্ধ হয়ে যায়, এখনো অনেক জায়গায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে যখন নাক চেপে পথ চলতে হয়, মানুষের দুর্ভোগ যখন চরমে পৌঁছে তখন কি বলার অপেক্ষা রাখে— এসবই রাজধানী নগরীর জন্য অস্বাভাবিক! রাজধানীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির দরকার নেই, এই নগরীকে একটি স্বাভাবিক বসবাসযোগ্য নগরী হিসেবে রক্ষার জন্য মানসম্পন্ন রাস্তা নির্মাণ, সুষ্ঠু ড্রেনেজ সিস্টেম গড়ে তোলা এবং যানজট নিরসনে ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ের পাশাপাশি কোস্টার জাতীয় পুরনো বাসগুলো রাস্তা থেকে তুলে দিয়ে আধুনিক বড় বাস চালু এবং সর্বোপরি সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হোক। নাগরিক সুযোগ-সুবিধার জন্য সবক্ষেত্রে আধুনিক অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং সুষ্ঠু সিস্টেম কার্যকর করার বিকল্প নেই। এই নগরীর মানুষও এর চেয়ে বেশি কিছু কামনা করেন না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads