• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
গণতন্ত্রের জয় হোক

স্বাধীনতার পর ক্ষমতার হাতবদল জনগণ বার বার দেখেছে

সংরক্ষিত ছবি

মতামত

গণতন্ত্রের জয় হোক

  • মাহমুদুল হক আনসারী
  • প্রকাশিত ১৩ আগস্ট ২০১৮

জুলুম নিপীড়ন নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই গণতন্ত্র। মানুষের কথা বলার অধিকার আর অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান পাওয়াই হলো গণতন্ত্র। গণতন্ত্র অর্থ কয়েক বছরের মাথায় গতানুগতিক নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতার হাতবদল নয়। গণতন্ত্রের উদ্দেশ্য হলো জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব স্বাধীনভাবে রক্ষা করা। দেশের স্বাধীন মানচিত্র সংরক্ষণ করা। পররাষ্ট্রনীতির সব নিয়মনীতি মেনে দেশকে সার্বিকভাবে এগিয়ে নেওয়া। কারো সঙ্গে শত্রুতা নয় বন্ধুত্বের মাধ্যমে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। দেশের সীমান্তে বসবাসরত সব শ্রেণির ও পেশার জনগণের সুরক্ষা প্রতিষ্ঠা করা। গণতন্ত্র অর্থ দেশের সর্বস্তরের মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে থেকে সব ধরনের পেশা ও মানুষের কল্যাণে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। জনগণের কল্যাণে যারাই দেশ ও জনগণকে ভালোবাসবে তাদের নির্বাচন করাই জনগণের দায়িত্ব। যারা দেশকে উন্নয়নে অগ্রগতিতে এগিয়ে নেবে তাদের বিজয়ী করাই ভোটারদের নৈতিক দায়িত্ব। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব জনগণের মৌলিক অধিকার, কর্মসংস্থান, ঘরে ঘরে শিক্ষিত বেকারদের চাকরির দাবি যারা পূরণ করতে পারবে তাদেরকেই জয়ী করা দরকার।

স্বাধীনতার পর ক্ষমতার হাতবদল জনগণ বার বার দেখেছে। জনগণ দেখেছে যারাই ক্ষমতায় ছিল তারাই অবৈধ অর্থের পাহাড় গড়েছে। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে ক্ষুধার্ত মানুষদের কাঙ্গাল করার দৃশ্য জনগণ এখনো ভুলতে পারেনি। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে স্বাধীনভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রাখতে হলে গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক জনবান্ধব সরকার দরকার। আর এ সরকার আসতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং পেশিশক্তিমুক্ত। কালো টাকার দাপট ও ব্যবহার চিরতরে বন্ধ করতে হবে। যখন তখন কতিপয় আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর অবৈধ নাক গলানো প্রতিরোধ করতে হবে। বাংলাদেশের সমস্যা এ দেশের মানুষই সমাধান করবে। নির্বাচিত সরকারের পরিকল্পনায় সব কিছুর বাস্তবায়ন চায় জনগণ। উন্নয়নের সঙ্গে দুর্নীতির কোনো তুলনা হয় না। উন্নয়ন হতে হবে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত। উন্নয়নের সুফল শহর গ্রাম সবখানে সমানতালে জনগণের নাগালে পৌঁছাতে হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রাখতে হলে অবশ্যই উন্নয়ন প্রত্যাশী দলকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। স্বাধীনতার ৪৭ বছরে যে পরিমাণ উন্নয়নের সুফল পাওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। বর্তমানে দেশ যেভাবে এগিয়ে চলছে, এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সারা দেশে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দফতর এবং সরকার কঠোর অবস্থানে আছে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়িত হচ্ছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স দেখতে চায় দেশের মানুষ। যেমনটি শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে গোটা জাতিকে জাগিয়ে দিয়েছে।

মানুষ এখন যার যার অধিকার সম্পর্কে অনেক সচেতন। এটা সম্ভব হয়েছে শিক্ষা কর্মসূচি ঘরে ঘরে সম্প্রসারণ হওয়ার কারণে। তথ্যপ্রযুক্তির ইন্টারনেট মোবাইল কম্পিউটার এখন জনগণের হাতের নাগালে। অতীতের একটি সরকার একটি সিম ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। আর তখন তো ইন্টারনেট তথ্যপ্রযুক্তি ভাবায় মুশকিল ছিল। এখন ৫৫ হাজার টাকার একটি সিম বিনা পয়সায় পাওয়া যায়। এক মিনিটের কথা বলা তখন ছিল দশ টাকায়, এখন এক মিনিট কথা বলতে মাত্র দশ পয়সা লাগে। ইন্টারনেট মোবাইল কম্পিউটার তথ্যপ্রযুক্তি দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের সবকটি সেন্টারে গ্রামের মানুষগুলো সব রাষ্ট্রীয় তথ্যের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। গ্রামের স্কুল কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থীরা গ্রামে বসেই তথ্যপ্রযুক্তির সুফল ভোগ করতে পারছে। সব পরীক্ষার ফল মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে ঘরে বসেই পাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় খবরাখবর তথ্য-উপাত্ত ইন্টারনেটের মাধ্যেমে সঙ্গে সঙ্গেই পেয়ে যাচ্ছে। আবেদন অভিযোগ যেকোনো সমস্যার জন্য জনগণের সুবিধার্থে মোবাইল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, পুলিশপ্রধানসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে জনগণের ডাকে দৌড়ে আসে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে কতিপয় অভিযোগ থাকলেও গোটা বাহিনীকে নিয়ে নেতিবাচক সমালোচনার পক্ষপাতী নই। এভাবে বর্তমানে দেশ সব সেক্টরে উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত রাখতে এগিয়ে নেওয়ার দল ও ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে হবে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো লাখো কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশকে যারা তলাবিহীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে ও দেখাতে চায় তাদের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে বাংলাদেশ এখন আপন মহিমায় নিজস্ব শক্তিতে স্বাধীনভাবে দণ্ডায়মান। কেউ ইচ্ছে করে ধাক্কা মেরে বাংলাদেশকে পেছনে নিয়ে যাওয়ার দিন শেষ। তাই গণতান্ত্রিক ধারায় গণতন্ত্রকে উন্নয়নের স্বার্থে এগিয়ে নিতে হবে।

লেখক : প্র্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads