• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

ডেঙ্গু ভাইরাস কোমলমতি শিশুদের বেশি আক্রমণ করে থাকে

সংগৃহীত ছবি

মতামত

জীবনধারা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

  • প্রকাশিত ১৪ অক্টোবর ২০১৮

সফিউল্লাহ আনসারী

ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত জ্বর। ডেঙ্গু ভাইরাস মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে জন থেকে জনে। এই মরণব্যাধি ডেঙ্গু আবারো আতংক, আবারো মৃত্যুভয় নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এই জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জনগণকে অজানা শংকা ভাবিয়ে তুলেছে। রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ।

তবে এই ডেঙ্গু ভাইরাস কোমলমতি শিশুদের বেশি আক্রমণ করে থাকে। ফলে এর তীব্র প্রকোপে শিশুরা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুযন্ত্রণায় পতিত হয়। অনেক সময় মৃত্যুরও কারণ হচ্ছে এই ডেঙ্গু জ্বর। তবে আতংকিত হয়ে ডেঙ্গুকে ভয়ের কারণ হিসেবে না নিয়ে আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। আর সচেতনতার পাশাপাশি দ্রুত সময়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ এ ভয়ানক জ্বর থেকে আমাদের সন্তান ও স্বজনদের রক্ষা করতে পারে।

ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত জ্বর হওয়ায়, ভাইরাসজনিত অন্যান্য রোগের মতো সরাসরি এর কোনো প্রতিষেধক নেই, নেই কোনো টিকা। আর এ কারণেই সাধারণের মাঝে আতংকের আরেক নাম ডেঙ্গু। ইদানীং ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুর সঙ্গে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে আক্রান্ত রোগীদের হঠাৎ অনেক জ্বর ও গায়ে প্রচুর ব্যথা দেখা দিচ্ছে। এই ডেঙ্গুতে ক’দিনের মধ্যে শিশু-নারীসহ কয়েকজনের মৃত্যুর খবরও পত্রিকায় এসেছে। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে হবে। ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ ও ভয়াবহতা থেকে জনগণের সুরক্ষার জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপও নিতে হবে।

সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য প্রধানত দায়ী বলে বিজ্ঞমহলের ধারণা। মাঝে-মধ্যে বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশিমাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা বাড়িয়ে এডিস মশার বিস্তার ঘটিয়ে মশার সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। জানা গেছে, এডিস মশার সংখ্যা যত বৃদ্ধি পাবে, ডেঙ্গু আক্রান্ত লোকের হারও বাড়বে। ডেঙ্গুর হাত থেকে বাঁচতে খুঁজে খুঁজে মশার উৎস বন্ধ করতে পারলেই ডেঙ্গুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।

ক্লাসিক্যাল ও হেমোরেজিক ডেঙ্গু নামে দুই ধরনের ডেঙ্গু জ্বর রয়েছে। এ জ্বরের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেন কামড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রাজধানীসহ দেশের সবখানে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে এরা ডিম পাড়ে— তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী এসব স্থানকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং পরিষ্কার রাখতে হবে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রকে এডিস মশা নিধন এবং এডিসের বংশবিস্তার রোধে জোরদার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে দীর্ঘ সময়ের জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া উচিত। ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। ডেঙ্গু হলে করণীয় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে, রাজধানী ও জেলা-উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালগুলোতেও ডেঙ্গু শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। সর্বোপরি এডিস মশা নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তবেই সম্ভব ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাওয়া ও প্রতিরোধ করা।

নগরবাসীর দাবি এবং প্রত্যাশা— যত দ্রুত সম্ভব এডিস মশার বিস্তার রোধ ও মশা ধ্বংস করা, আক্রান্তদের সঠিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মাধ্যমে ডেঙ্গু আতংক থেকে গোটা জাতিকে রক্ষা করা। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে সবার সচেতনতা সবার আগে প্রয়োজন। ডেঙ্গু যেন বৃদ্ধি পেতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

লেখক : গণমাধ্যমকর্মী

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads