• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
কতটুকু সফল পররাষ্ট্রনীতি

বাংলাদেশ ম্যাপ

মতামত

কতটুকু সফল পররাষ্ট্রনীতি

  • শাহ আহমদ রেজা
  • প্রকাশিত ০৭ নভেম্বর ২০১৮

বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে মাঝেমধ্যেই কথা উঠে থাকে। মাত্র ক’দিন আগেও একই বিষয়ে নতুন পর্যায়ে আলোচনার কারণ সৃষ্টি করেছিল মিয়ানমার। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর পর জাতিসংঘসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার বিরামহীন আহ্বানের প্রতি আজো পর্যন্ত চরম উপেক্ষা দেখিয়ে চলেছে দেশটি। মাঝখানে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে রোহিঙ্গা সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস। একদিকে তিনি মিয়ানমারের প্রতি রোহিঙ্গাদের সসম্মানে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, অন্যদিকে ভারতকে বলেছেন রোহিঙ্গা সঙ্কটে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য।

এমন এক অবস্থায় আশা করা হয়েছিল, ভারত এগিয়ে আসুক না আসুক, মিয়ানমার অন্তত জাতিসংঘ মহাসচিবের বক্তব্য ও আহ্বানকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেবে এবং রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটাবে। অন্যদিকে মিয়ানমার এগিয়েছে সম্পূর্ণ বিপরীত পথে। দেশটি নিয়েছে এক ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ। ইতোমধ্যে বহুল আলোচিত ওই পদক্ষেপ সম্পর্কে সংক্ষেপে বলা যায়, বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ সেন্ট মার্টিনস দ্বীপকে মিয়ানমার তার মানচিত্রে নিজের এলাকা হিসেবে দেখিয়েছে। এটা প্রকাশিত হয়েছে দেশটির ওয়েবসাইটে। এর অর্থ- সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ মিয়ানমারের অংশ, বাংলাদেশের নয়!

এই একটি বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। মিয়ানমারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হওয়ার পরপর গত ৬ অক্টোবর দেশটির রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে কঠোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মিয়ানমারের এ ধরনের কাজ ধৃষ্টতাপূর্ণ এবং এর ফলে দু’দেশের সম্পর্ক আরো তিক্ত হয়ে উঠবে। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, রাষ্ট্রদূত নাকি ‘ভুল’ স্বীকার করে সংশোধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

বলার অপেক্ষা রাখে না, মিয়ানমারের এ ধরনের ‘ভুল’কে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। পর্যবেক্ষকরা একে সরকারের পররাষ্ট্রনীতির দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এমন মন্তব্যের কারণ, এর মাত্র ক’দিন আগে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও রাজ্যসভার প্রবীণ সদস্য সুব্রামনিয়াম স্বামী বাংলাদেশ দখল করার হুমকি দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ সংলগ্ন রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ তুলে বলেছেন, বাংলাদেশের হিন্দুদের নাকি জোর করে ধর্মান্তর করিয়ে মুসলিম বানানো হচ্ছে! একই সঙ্গে বাংলাদেশে নাকি হিন্দুদের ওপর প্রচণ্ড দমন-নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি অসংখ্য মন্দিরও দখল করা হচ্ছে! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন থাকলেও অবিলম্বে হিন্দুবিরোধী এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ না করা হলে বাংলাদেশ দখল করার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন মিস্টার সুব্রামনিয়াম স্বামী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশকেই দখল করে নেবে ভারত। উল্লেখ্য, একই বিজেপি নেতা ২০১৪ সালে খুলনা থেকে সিলেট পর্যন্ত সমান্তরাল রেখা টেনে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড ভারতের দখলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।

সুব্রামনিয়াম স্বামীর আগে-পরে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ ও সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবসহ অন্য শীর্ষ নেতারাও কথিত অবৈধ বাংলাদেশি ধরনের নানা প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ববিরোধী এসব হুমকি ও বক্তব্যের কঠোর জবাব দেওয়ার পরিবর্তে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশ্নসাপেক্ষ নীরবতা পালন করা হয়েছে।

এরই পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রশ্নে সরকারের নীতি ও কার্যক্রমকে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, দরকার যেখানে ছিল আন্তর্জাতিক জনমত সৃষ্টি করার মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করা, সরকার সেখানে উল্টো রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার নামে দেশের বিরাট একটি অঞ্চলের ভবিষ্যৎকে চরম অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্র মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠলেও সরকার তাকিয়ে থেকেছে ভারতের দিকে। অন্যদিকে সঙ্কটের শুরু থেকেই ভারতের ভূমিকা বাংলাদেশকে শুধু নিরাশ করেনি, বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও গেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমনকি মিয়ানমারের প্রতি সমর্থনও ঘোষণা করেছিলেন। ২০১৭ সালের আগস্টে সরকারি সফরে রাজধানী ইয়াঙ্গুনে যাওয়ার এবং মিয়ানমারের প্রধান নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকের পর নেপিদোর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছিলেন, রাখাইন রাজ্যে ‘উগ্রপন্থি সহিংসতা’ নিয়ে মিয়ানমার সরকার যে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে তার সঙ্গে তিনি সহমত পোষণ করেন। মিস্টার মোদি এমনভাবে বক্তব্য রেখেছিলেন, যা শুনে মনে হয়েছে যেন কথিত মুসলিম উগ্রপন্থিরা সত্যিই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সহিংসতা চালাচ্ছে এবং এর ফলে সেনা সদস্যদের তো বটেই, সাধারণ মানুষের জীবনও বিপন্ন হয়ে পড়েছে!

পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রকারান্তরে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমবিরোধী হত্যা-নির্যাতন ও ধর্ষণসহ জাতিগত নির্মূল অভিযানের প্রতিই ভারতের সমর্থনের কথা জানিয়ে এসেছিলেন। তারপর অনেক সময় পার হয়েছে। কিন্তু ভারতের নীতি ও ভূমিকায় কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি। এখনো যাচ্ছে না। সে জন্যই জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান ও পরামর্শ কোনো সুফল বয়ে আনতে পারেনি। উল্লেখ্য, দিল্লিতে দেওয়া বক্তৃতায় মিস্টার অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছিলেন, তিনি তার জীবনে রোহিঙ্গাদের মতো বৈষম্য ও নির্যাতনের অসহায় শিকার কোনো সম্প্রদায় বা জনগোষ্ঠীকে দেখেননি। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাই কমিশনার হিসেবে মিয়ানমার সফরকালে মহাসচিব নিজেও দেখেছেন, দেশটিতে রোহিঙ্গাদের প্রতি কতটা নেতিবাচক ধারণা পোষণ করা হয়। এক শ্রেণির বৌদ্ধ ভিক্ষু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোহিঙ্গাবিরোধী ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্য ছড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে। রোহিঙ্গাদের পোড়ানো হয়েছে, রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনীর নৃশংসতাও ছিল ভয়াবহ। এসব কারণেই ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক প্রতিটি ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিচার ও কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। মিস্টার গুতেরেস আরো বলেছেন, এ ধরনের বৈষম্যমূলক পরিস্থিতির মধ্যে বিশাল সংখ্যক মানুষকে ধরে রাখার অর্থ হলো পরিস্থিতিকে আরো খারাপের দিকে ঠেলে দেওয়া এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো। এমন অবস্থায় ভবিষ্যতের বহুপক্ষীয় বিশ্ব ব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ হতে যাওয়া রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের উচিত মধ্যস্থতাকারীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা। ভারত দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ওপর নিজের প্রভাব খাটাতে পারে। ভারতকে বিশেষ করে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, দেশটি যাতে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে নেয় এবং তাদের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। 

সন্দেহ নেই, জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রসঙ্গে সঠিক ও বাস্তবসম্মত বক্তব্য রেখেছিলেন। একশ্রেণির উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষুই যে সুচিন্তিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে প্রচারণা চালিয়ে রোহিঙ্গাবিরোধী হত্যা-নির্যাতনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে এবং সাধারণ মানুষের পাশাপাশি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীও যে নির্যাতন ও গণহত্যা চালিয়েছে— এসব সত্যও মিস্টার গুতেরেসের বক্তব্যে যথোচিত গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে। বলা যায়, সব মিলিয়েই তিনি সত্যের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। হত্যা-নির্যাতন ও ধর্ষণসহ প্রতিটি অপরাধের জন্য দায়ী প্রত্যেকের বিচার ও কঠোর শাস্তির আহ্বান জানাতে গিয়ে তিনি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দায়ী সদস্য ও অফিসারদেরও বিচার করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এখানে বিশেষ করে ভারতের দিকে দৃষ্টি ফেরানো দরকার। কারণ, একদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব ভারতকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন, অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারও প্রধানত ভারতের ওপর ভরসা করেই মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের উদ্যোগে সাড়া দেয়নি। কিন্তু ভারত নিজেই যেহেতু প্রকারান্তরে মিয়ানমারের পক্ষাবলম্বন করে চলেছে সেহেতু রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়ে তো বটেই, মিয়ানমার এমনকি বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ সেন্ট মার্টিনস দ্বীপকেও নিজেদের দখলে নেওয়ার অপতৎপরতা শুরু করেছে। কথা শুধু সেন্ট মার্টিনস দ্বীপের কারণে ওঠেনি। দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় রাজনীতিকদের বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী হুমকি ও বক্তব্যের কঠোর জবাব দেওয়ার পরিবর্তে সরকারের পক্ষ থেকে যেমন প্রশ্নসাপেক্ষ নীরবতা অবলম্বন করা হচ্ছে, দেশের অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও তেমনি জনগণকে নিরাশই করে চলেছে। পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির কারণেই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। ভারতের আসামসহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করে মুসলিমদের বাংলাদেশে পাঠানোর হুমকি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা। বলেছেন, এসব বিষয়ে সরকার রহস্যময় নীরবতা অবলম্বন করছে এবং কোনো কোনো বিষয়ে লুকোচুরি করছে। এককথায় তারা বলেছেন, সবকিছুর মূলে রয়েছে সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি। সরকারের উচিত প্রতিটি বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য ও ব্যাখ্যা রাখা।

লক্ষণীয় যে, ভারতীয়দের উসকানি ও হুমকির পাশাপাশি মিয়ানমারের মানচিত্রে সেন্ট মার্টিনস দ্বীপকে অন্তর্ভুক্ত করার পরিপ্রেক্ষিতেও সরকারের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য কোনো রাজনৈতিক দলই প্রতিবাদ জানায়নি। কিছু বলেনি। দলগুলো কেবলই নির্বাচন এবং সরকারের পতন ঘটানোর জন্য ব্যস্ত রয়েছে। অথচ অন্য যে কোনো ইস্যুর চাইতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই বিশেষ করে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ববিরোধী বিভিন্ন প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা এবং সুব্রামনিয়াম স্বামীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানো সব রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রধান কর্তব্যে পরিণত হয়েছে। সেটা করা হয়নি বলেই সাহস বেড়ে গেছে মিয়ানমারের। দেশটি এখন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটিকেও গ্রাস করার ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে। সবশেষে উল্লেখ করা দরকার, অন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সেটাও আবার হাজারের অঙ্কে। সে অনুযায়ী চলতি মাস নভেম্বরের মাঝামাঝি দেশটি দু’হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেবে বলে জানা গেছে। যদিও তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনো পক্ষই নিশ্চিত হতে পারছে না।

এ প্রসঙ্গে আবারো সরকারের পররাষ্ট্রনীতি প্রাধান্যে এসেছে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে। পরারাষ্ট্রনীতির দুর্বলতা সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই ভালো। কারণ, সরকারের পররাষ্ট্রনীতি সব বিচারেই সম্পূর্ণরূপে এক দেশকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। অথচ দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া যেকোনো সরকারের প্রধান দায়িত্ব। বাংলাদেশকে দখল করার যে হুমকি দেওয়া হয়েছে, সে হুমকিসহ ভারতীয়দের বাংলাদেশবিরোধী সব বক্তব্য ও তৎপরতার বিরুদ্ধে তো বটেই, মিয়ানমারের ধৃষ্টতাপূর্ণ পদক্ষেপের বিরুদ্ধেও সরকারকে দেশপ্রেমিক ভূমিকা পালন করতে হবে। এসব বিষয়ে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সোচ্চার হওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও জোটেরও কর্তব্য।

 

লেখক : সাংবাদিক ও ইতিহাস গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads