• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বিবাহ সম্পর্কে শরিয়তের হুকুম

বিবাহ

সংগৃহীত ছবি

মতামত

বিবাহ সম্পর্কে শরিয়তের হুকুম

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮

বিয়ের হুকুম নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক অবস্থার ওপর। তাই বিয়ের হুকুম সকলের ক্ষেত্রে একই রকম নয়; বরং বিয়েশাদী ব্যক্তিভেদে ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, হারাম, মাকরূহ ও মুবাহ বলে বিবেচিত।

ফরজ : বিয়ে করা ফরজ হয় চার শর্তে ১. যদি কেউ বিয়ে না করলে ব্যভিচারে লিপ্ত হবে বলে নিশ্চিত আশঙ্কা থাকে, ২. ব্যভিচার থেকে বাঁচার জন্য রোজা রাখতেও সে অক্ষম, ৩. বাদী গ্রহণেরও সুযোগ নেই এবং ৪. সে বৈধ পন্থায় স্ত্রীর মোহর ও ভরণ-পোষণ করতেও সক্ষম, এমন ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা ফরজ। ওয়াজিব : বিয়ের প্রতি প্রবল আকর্ষণ আছে, ব্যভিচারে আক্রান্ত হওয়ারও ভয় আছে কিন্তু ব্যভিচারে পড়েই যাবে এমন বিশ্বাস নেই, অধিকন্তু হালাল অর্থে স্ত্রীর মোহর ও ভরণ-পোষণ করতে সক্ষম, এমন ব্যক্তির জন্যে বিয়ে করা ওয়াজিব।

সুন্নতে মুয়াক্কাদা : বিয়ের প্রতি আকর্ষণ আছে, তবে এ কারণে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশংকা নেই এমন ব্যক্তির জন্যে বিয়ে করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।

হারাম : যদি ইয়াকীন ও বদ্ধমূল বিশ্বাস থাকে যে, বিয়ে করলে তাকে অন্যায়ভাবে অন্যের প্রতি যুলুম ও নিপীড়ন করে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে, তাহলে এ ক্ষেত্রে বিবাহ করা হারাম। কেননা বিবাহের উদ্দেশ্য হলো নিজেকে পাপ থেকে বাঁচিয়ে রাখা ও পুণ্য অর্জন করা।

মাকরূহ : যদি বিবাহের কারণে অন্যের প্রতি জুলুম অত্যাচার করবে বলে ভয় হয় (ইয়াকীনের পর্যায়ে না হয়) তাহলে বিয়ে করা মাকরূহে তাহরীমী।

মুবাহ : বিয়ের প্রতি ঝোঁক আছে, তবে না করলে ব্যভিচারী হয়ে পড়বে এমন আশঙ্কা নেই, এটাই মুবাহ। এক্ষেত্রে যদি নিজেকে পাপমুক্ত রাখা কিংবা মানব বংশ বৃদ্ধির নিয়াত করে, তাহলে বিয়ে করা সুন্নাত বলে বিবেচিত হবে। এখানে মুবাহ ও সুন্নাতের পার্থক্য নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।

পাত্র-পাত্রী নির্বাচন বিয়েশাদীর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দাম্পত্য জীবনের পরিধি যেমন খুবই ব্যাপক, এর সমস্যাও অতি বিস্তৃত। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি স্পষ্ট বাহ্যিক-সামাজিক দৃষ্টিতে প্রকট কোন ব্যবধান ও অসামঞ্জস্য থাকে, অনেক ক্ষেত্রেই তা আর কাটিয়ে ওঠা সম্ভবপর হয় না। যে কারণে বিয়ের আগেই পাত্রপাত্রী নির্বাচনের সময় এসব বিষয় বিবেচনা করা উচিত। হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, আমি একজন আনসারী মেয়েকে বিয়ে করতে চাচ্ছি। রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন : মেয়েটিকে দেখে নাও। আনসারীদের চোখে আবার সমস্যা থাকে।

আলোচ্য হাদিসে রসুলুল্লাহ (সা.) পাত্রী নির্বাচনের আগে তাকে দেখে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, যেন পরবর্তীকালে সমস্যা না হয়। অধিকন্তু পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কী কী বিষয়ে লক্ষ করা বাঞ্ছনীয় সে কথাও অন্য হাদিসে অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় ইরশাদ করা হয়েছে,

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন : সাধারণত চারটি বৈশিষ্ট্যের কারণে কোনো মেয়েকে বিয়ে করা হয়। তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী! তবে তোমরা ধর্মপরায়ণতাকেই অগ্রাধিকার দিবে।

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads