• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
সংসদ নির্বাচন : ১৯৭৩ থেকে ২০১৮

জাতীয় সংসদ

মতামত

সংসদ নির্বাচন : ১৯৭৩ থেকে ২০১৮

  • তারেক শামসুর রেহমান
  • প্রকাশিত ০১ জানুয়ারি ২০১৯

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত ৩০ ডিসেম্বর। একাধিক কারণে এই নির্বাচনটি ছিল বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। নির্বাচনের আগে ব্যাপক সহিংসতা, বেগম জিয়ার জেল ও নির্বাচনে অংশগ্রহণে আইনগত বাধা, বিএনপির পরিবর্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া কিংবা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপারে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোভাব— সব মিলিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অন্যান্য নির্বাচনের সঙ্গে কিছুটা পার্থক্য তৈরি করেছে। এর আগে বাংলাদেশে যে দশটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তার মাঝে চতুর্থ (১৯৮৮), ষষ্ঠ (১৯৯৬) এবং দশম (২০১৪) জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অংশ নেয়নি। ফলে ওই সংসদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। ১৯৯৬ সালের নির্বাচন (ষষ্ঠ সংসদ) আওয়ামী লীগ বয়কট করেছিল। ওই সংসদের বয়স ছিল মাত্র ১৩ দিন। আর ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বয়কট করলেও, ওই সংসদ পাঁচ বছর পূর্ণ করেছে। ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচন সংসদীয় রাজনীতির আওতায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয়, ১৯৮৬ সালে তৃতীয়, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ ও ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যাবস্থায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সপ্তম, অষ্টম, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ায়, দশম জাতীয় সংসদ ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংসদীয় ব্যবস্থায় অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ১১টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিল। বাকি ২৮৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৮২ আসনে, জাসদ ১টি, জাতীয় লীগ (আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে) ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৫টি আসন পেয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে সদ্যগঠিত বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২০৭টি আসন পায়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ (মিজান) পায় ২টি আসন ও আওয়ামী লীগ (মালেক) পায় ৩৯টি আসন। মুসলিম লীগ ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ ঐক্য করে পায় ২০ আসন। জাসদ পায় ৮ আসন। ন্যাপ (মো.) ও একতা পার্টি (সুরঞ্জিত) ১টি করে আসন পেয়েছিল। আর স্বতন্ত্র সদস্যরা পেয়েছিলেন ১৬ আসন। এরশাদের শাসনামলে দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে। ১৯৮৬ সালের নির্বাচন বিএনপি বয়কট করেছিল। এরশাদ জাতীয় পার্টি গঠন করেন ক্ষমতা নিয়মসিদ্ধ করার জন্য। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১৫৩, আওয়ামী লীগ ৭৬, জামায়াত ১০, কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ৫, ন্যাপ (মো.) ২, বাকশাল ৩, জাসদ ৪, জাসদ (সিরাজ) ৩, মুসলিম লীগ ৪, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩ ও স্বতন্ত্র সদস্যরা ৩২ আসন পেয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধী দলের আন্দোলনের মুখে ওই সংসদ ভেঙে দিয়ে ১৯৮৮ সালে আরেকটি নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নির্বাচন বয়কট করায় আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে একটি বিরোধী দল গঠিত হয়েছিল (আসন ২৫)। জাতীয় পার্টি ২৫১ আসন, ফ্রিডম পার্টি ২, জাসদ (সিরাজ) ৩ আসন পেয়েছিল বলে দেখানো হয়েছিল। গণঅভ্যুত্থানে এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তাতে বিএনপি ১৪০, আওয়ামী লীগ ৮৮, জাতীয় পার্টি ৩৫, জামায়াত ১৮, সিপিবি ৫, বাকশাল ৫, স্বতন্ত্র ৩, ন্যাপ (মো.) ১, গণতন্ত্রী পার্টি ১, ওয়ার্কার্স পার্টি ১, জাসদ (সিরাজ) ১, ইসলামী ঐক্যজোট ১ এবং এনডিপি ১ আসন পেয়েছিল। বিএনপি জামায়াতের সহযোগিতা নিয়ে সরকার গঠন করে। দু’বছরের মাথায় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। বিএনপি নিয়ম রক্ষার্থে ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে, যাতে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দল অংশ নিতে বিরত থাকে। ওই সংসদ গঠিত হয়েছিল এবং তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪৬ আসনে বিজয়ী হয়েছিল। অন্যদিকে বিএনপি ১১৬, জাতীয় পার্টি ৩২, জামায়াত ৩টি আসন পেয়েছিল। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হয়ে ওঠে রাজনীতির দুটি ধারা— বিএনপির নেতৃত্বে একটি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী শক্তি, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ধর্মনিরপেক্ষ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী শক্তি। জাতীয় পার্টি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী আদর্শ অনুসরণ করলেও এই দুই ধারার বাইরে গিয়ে তৃতীয় একটি ধারার সূচনা করে। পরবর্তীকালে ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট গঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি ১৯৩ আসন লাভ করে। আর আওয়ামী লীগ ৬২, জাতীয় পার্টি ১৪, জামায়াত ১৭ আসন লাভ করে। বিএনপির নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। ওই সরকার তার টার্ম নির্ধারিত সময় শেষ করলেও, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ফলে নির্ধারিত সময়ে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। ওই সময় মানুষ প্রত্যক্ষ করে সেনা সমর্থিত এক শাসন ব্যবস্থা। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু ওই ‘বিশেষ সরকারের’ কোনো গ্রহণযোগ্যতা না থাকায় এবং দুই নেত্রী জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ২০০৮ সালে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৫৯ আসনে বিজয়ী হয়। বিএনপির আসন কমে এসে দাঁড়ায় মাত্র ৩০টিতে। জাতীয় পার্টির আসন ২৭ আর জামায়াতের আসন মাত্র ২। জাসদ (ইনু) ৩টি আসন পেয়েছিল। এই সংসদেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল ঘোষিত হয়। এরপর থেকেই সঙ্কট বাড়তে থাকে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। এমনি এক পরিস্থিতিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংসদের দশম নির্বাচন আয়োজন করা হয়। কিন্তু নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করার দাবিতে বিএনপি, জামায়াতসহ বেশ কয়েকটি দল নির্বাচন বয়কট করে। কিন্তু তাতে নির্বাচন বন্ধ থাকেনি।

সংসদীয় রাজনীতির চিত্রই আমাদের বলে দেয় যে এ দেশের জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে দুটি বড় দল- বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। তুলনামূলক বিচারে আওয়ামী লীগের সমর্থক সংখ্যা বেশি। অন্যদিকে শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ সমর্থক রয়েছে বিএনপির। তবে এবারে পার্থক্যটা হলো বিএনপির পরিবর্তে ঐক্যফ্রন্ট বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তুলনামূলক বিচারে এবার সহিংসতা বেশি হয়েছে। প্রায় ১৬ জন বিএনপি প্রার্থী জেলে ছিলেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে অনেক প্রার্থীকে উচ্চ আদালত থেকে তাদের প্রার্থীপদ নিশ্চিত করতে হয়েছে। অন্যান্যবারের চাইতে এবার নির্বাচন কমিশন বেশি বিতর্কিত হয়েছে। ভোটের এক সপ্তাহ আগেও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সিইসির পদত্যাগের দাবি উঠেছিল। জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অন্যতম শক্তি। নির্বাচনী রাজনীতির ইতিহাস তা প্রমাণ করে। কিন্তু গত দশ বছরে জাতীয় পার্টির ভূমিকা দলটিকে বিতর্কিত করেছে। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পার্টি এই ‘তৃতীয় শক্তির গ্রহণযোগ্যতা’ হারিয়েছে। দলটির আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভরতা তার গ্রহণযোগ্যতা হ্রাসের অন্যতম কারণ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে এরশাদের ব্যক্তিগত ইমেজ। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘তার অসুস্থতা’, সিএমএইচে থাকার সঙ্গে আর যোগ হয়েছিল তার সিঙ্গাপুরে ‘চিকিৎসাগত কারণে অবস্থান’।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দল পরিচালনার ক্ষমতা এরশাদ অনেকটাই হারিয়েছেন! এর ফলে দল বড় ধরনের অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে। দেশে ইসলামিক শক্তিগুলো শক্তিশালী হয়েছে। ইসলামী শাসনতান্ত্রিক আন্দোলনের ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেওয়া, ক্ষমতাসীন জোটে তরীকত ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্তি ও নির্বাচনে ২টি আসন দেওয়া, জামায়াতে ইসলামীর বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ২৬ আসনে অংশ নেওয়া এ কথারই প্রতিধ্বনি। উপরন্তু হেফাজতে ইসলামীর মতো একটি ধর্মীয় সংগঠনের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া, দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান মর্যাদা দেওয়া কিংবা একটি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসলামপন্থিদের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। বর্তমানে নির্বাচনে অবৈধ টাকা লেনদেনের ‘খবর’ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদঘাটন করেছে। অভিযোগ করা হয়েছে, ১৫০ কোটি টাকা নির্বাচনের আগে সহিংসতা সৃষ্টির জন্য বিদেশ থেকে এসেছে! এর সত্য-মিথ্যা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা র্যাব উদ্ধার করেছে। বিদেশ থেকে টাকা এসেছে, এ দাবিটি র্যাবের। নিঃসন্দেহে এ ধরনের ঘটনা সাধারণ মানুষকে উদ্বিগ্ন করেছে। এবার সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল কি-না, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ‘ইন এইড টু সিভিলিয়ান পাওয়ার’-এর আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলেও সহিংসতা বন্ধে সেনাবাহিনীকে হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়নি। তবে সেনাবাহিনীর ওপর সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। চলতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বহির্বিশ্বে কিছু উদ্যোগ আমরা লক্ষ্য করেছি। ‘বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিস্থিতিতে ঘনিষ্ঠ নজর রাখছে জাতিসংঘ’— জাতিসংঘ মহাসচিবের বক্তব্য এভাবেই ছাপা হয়েছে বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায়। নির্বাচনে ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এবং ভোটারদের বাধাহীন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দল ও বিচারিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল মার্কিন কংগ্রেস। কংগ্রেসে গৃহীত একটি সিদ্ধান্তের খবরও দিয়েছিল কাগজগুলো। এ ধরনের বক্তব্য প্রমাণ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে বহিঃশক্তি, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ রয়েছে। তবে এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় একরকম ‘হস্তক্ষেপ কিনা— এ প্রশ্নও তোলা যেতে পারে। দুটি বড় দলই একাধিকবার ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের দ্বারস্থ হয়েছে পরস্পরবিরোধী অভিযোগ করার জন্য। জাতিসংঘ মহাসচিবও বাংলাদেশের নির্বাচনে ভীতিহীন পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছিলেন। আমরাও এমনটা চেয়েছিলাম। সহিংসতা কোনো ভালো খবর নয়। মানুষ যেন ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে কোনো ভয়ভীতি ছাড়াই— আমাদের প্রত্যাশা এটাই। আমরা চাই দুটি বড় দলের মাঝে যে বৈরিতা, যে আস্থাহীনতা- এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তার অবসান হোক। আমরা বার বার রাজনীতিবিদদের কাছে ফিরে যাই। এরাই আমাদের নেতৃত্ব দেবেন। এক্ষেত্রে একটি আস্থার সম্পর্ক সৃষ্টি করা জরুরি। দুটি বড় দলকেই এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে আস্থার সম্পর্ক কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়। সহিংসতার মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না, ভোটারদের আস্থাও পাওয়া যায় না। ২০১৪-পরবর্তী রাজনীতি এর বড় প্রমাণ। নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে একটি দলের পরাজয় যেমন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে পারে না, ঠিক তেমনি একটি দলের জয়ও গণতন্ত্রকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে না। জয়-পরাজয় নিয়েই গণতন্ত্র। বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি দল বা জোটের জয় হবে, অপর দলের/জোটের পরাজয় হবে। এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র বিকশিত হবে-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

লেখক : প্রফেসর ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads