• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

মতামত

নতুন বছরে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন

  • মাহমুদুল হক আনসারী
  • প্রকাশিত ০৩ জানুয়ারি ২০১৯

ইংরেজি নববর্ষ ২০১৯ এসে গেল। বিগত দিনের গ্লানি মুছে ফেলে নতুন বছরকে স্বাগত। বিগত দিনের পাওয়া না পাওয়ার অনেক কিছু আজ স্মৃতি হয়ে গেল। তবু দিন, মাস, বছর থেমে থাকে না। অনেক উন্নয়ন এবং নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে সরকার পরিচালিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের অনেক সফলতাও রয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্পখাতে ব্যাপক সফলতা দৃশ্যমান। শহর, নগর উন্নয়ন হয়েছে। লাখ লাখ রাস্তাঘাট, কালভার্ট, ব্রিজ হয়েছে। অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। হাটবাজার সম্প্রসারণ হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ঘরে ঘরে পৌঁছেছে। শহর নগরের জনগণের মৌলিক চাহিদা নাগালের মধ্যে। যাতায়াত ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের আয় বেড়েছে। দরিদ্র ছেলে-মেয়ের প্রাইমারি শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। খাদ্যদ্রব্য বাজারজাত ও প্রাপ্তি সহজলভ্য হয়েছে। মানুষের মৌলিক খাদ্য অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। নিত্যপণ্য জনগণের নাগালে রয়েছে। বিগত বছরে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিল, ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখায় জনগণ স্বস্তিতে ছিল।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা, ছাত্র-ধর্মঘট, সেশনজট ছিল না। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পেরেছে। দেশে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল না বলা যায়। রাজনৈতিক কিছু অস্থিরতা থাকলেও সরকার তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। সন্ত্রাস, জঙ্গি, মাদকের বিরুদ্ধে অব্যাহত অভিযান চলমান। জঙ্গি সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর মনোভাব অব্যাহত।

সরকারি অফিস-আদালতে জনগণের সেবা ডিজিটালাইজ হয়েছে। ঘরে বসেই সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সরকারি সেবা পাচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের তথ্য রেজাল্ট সবকিছু ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে। দেশে লাখ লাখ ছাত্রছাত্রীকে উপবৃত্তির আওতায় আনা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। প্রশ্নফাঁস, নকল প্রতিরোধে সরকারের সফলতা দৃশ্যমান। বলতে গেলে কৃষক থেকে শিল্পপতি পর্যন্ত সব শ্রেণি-পেশার অগ্রগতি লক্ষ্য করার মতো। ধর্মীয় হানাহানি, সংঘাত-সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির বাংলাদেশ। বাঙালি জাতির উন্নয়ন অগ্রগতির শরিক এদেশের সব মানুষ। সব মানুষের দেশ সব ধর্মের সোনার দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন দেশটি চেয়েছিলেন, যে দেশে সব ধর্মের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাসে অনেকেই ঈর্ষান্বিত। তবু এগিয়ে যাওয়াকে কেউ থামাতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে তাঁর নিরলস অব্যাহত প্রচেষ্টায় এদেশের মানুষ এবং এ দেশ বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। ক্ষুধা, দরিদ্রতাকে জয় চোখে পড়ার মতো ঘটনা।

বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় কৃষক, শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হয়েছে। শহর-নগরে সমান তালে উন্নয়ন হচ্ছে। ফলে কোনো দিনমজুরকে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় কাজের সন্ধানে যেতে হচ্ছে না। সারা দেশে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির অভূতপূর্ব সফলতায় দেশের সার্বিক অগ্রগতি এগিয়ে যাচ্ছে। তবে উন্নয়নের সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। জরিপে জানা যায়, দেশে প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার জমে যাচ্ছে। তারা তাদের যোগ্যতার মাপকাঠিতে কর্মসংস্থান পাচ্ছে না। আবার যে পরিমাণ সরকারি কর্মসংস্থান হয় সেখানেও দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির কারণে চাকরি পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। এ ধরনের অনৈতিক দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। মেধার ভিত্তিতে সব এলাকা থেকে সরকারের প্রতিশ্রুতির আলোকে প্রতিটি ঘরে চাকরি পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। কর্মসংস্থানগুলোতে দুর্নীতি, ঘুষ-বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।

আগামীর বাংলাদেশে তথ্য আদান-প্রদানে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা চাই না। সংবাদপত্র এবং মিডিয়াকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। সাংবাদিক, সংবাদকর্মী, প্রকাশক, মালিককে অযৌক্তিক হয়রানি করা চলবে না। কালোবাজারি, মজুতদারী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। দ্রব্যমূল্য এবং  খাদ্যপ্রাপ্তি সহজলভ্য ও নির্ভেজাল দেখতে চাই। আর এই বিষয়গুলো সম্পাদনের মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে নতুন বছরে, সেই প্রত্যাশা সবার।

 

লেখক : নিবন্ধকার

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads