• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা

নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা

প্রতীকী ছবি

মতামত

নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা

  • সোলায়মান মোহাম্মদ
  • প্রকাশিত ১২ জানুয়ারি ২০১৯

শুরু হলো ২০১৯ সাল। বিগত দিনের ব্যর্থতাকে পর্যালোচনা করে একরকম হিসাব-নিকাশ করেই সামনের দিকে এগুতে হবে। ভুলগুলো শনাক্ত করে তা সমাধানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। সামনের দিনগুলোতে কী হবে না হবে, সেটা বলা মুশকিল হলেও অতীতের কৃতকর্মগুলোর ভালোমন্দ ঠিকই বের হয়ে আসে। সুতরাং বলা যায় পুরনো দিনের ভুলগুলোও শিক্ষকের ভূমিকাই পালন করে।

এবারের নতুন বছর অন্যান্য বছর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটি প্রত্যাশার বছর। একদিকে নতুন বছর আর অন্যদিকে সরকারের নতুন আর পুরনো মিশ্রিত সুদক্ষ মন্ত্রিপরিষদ। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে সমূহ উন্নয়নের চিন্তা করাটাই খুব স্বাভাবিক। বিগত ১০ বছর যারা দেশের অভিভাবকত্ব করেছেন তারাই আবার নতুন করে আগামী পাঁচ বছরের জন্য অভিভাবকত্বের দায়িত্ব পালন করবেন। বিগত দিনগুলোতে দেশের প্রতিটি বিভাগের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যাদের বিচরণ ছিল, ঠিক তারাই যখন আবার দেশের ক্ষমতায় তখন ভালো কিছু বা উন্নয়নের স্বর্ণশিখরে পৌঁছার আশা করা যেতেই পারে।

একটি বাড়ির অভিভাবক যদি একজনই হয় এবং দীর্ঘদিন থাকেন, তাহলে তিনি খুব ভালোভাবেই বোঝেন বাড়ির কার কী সমস্যা এবং কার কী লাগবে। অন্যদিকে অভিভাবক যদি কিছুদিন পরপর পরিবর্তন হয়, সেক্ষেত্রে কোথায় কী সমস্যা তা খুঁজে বের করতেই সময় এবং শ্রম ব্যয় করতে হয়। এ কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন এ প্রত্যাশার বিরাট একটি জায়গা তৈরি করেছে। বিগত দিনে এ সরকারের বেশকিছু সাড়া জাগানো প্রকল্প জনমনে আস্থার জায়গাটিও বেশ শক্তভাবে দখল করেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়াও মহাকাশ জয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ছিল আমাদের জন্য সময়োপযোগী অর্জন। অন্যদিকে কিছু কাজ নিয়ে যে একেবারে বেকায়দায় ছিল না তা কিন্তু নয়। বিশেষ করে সরকারের শেষ সময়ে এসে কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং সর্বশেষ নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থান ও আন্দোলনে সরকারকে অনেকটাই বেগ পেতে হয়েছে। সড়ক খাতে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে বলেই মনে করি। কিন্তু সড়কে যারা দাবড়ে বেড়ায়, সেই গাড়ি চালকদের সচেতনতা ও দায়িত্ববোধের কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে, সেটিই কিন্তু দেখার বিষয়। সরকারের আরো একটি মন্ত্রণালয় নিয়ে শিক্ষাবোদ্ধা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মনেও অসন্তুষ্টির ছায়া লক্ষণীয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শতভাগ পাশের চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। চারদিকে জিপিএ-৫ পাওয়ার যে প্রতিযোগিতা, তাতে মৌলিক লেখাপড়ার মান যে একেবারে নিচে নামিয়ে এনেছে তা আর বলার অবকাশ রাখে না। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আরো সচেতন হতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষকদের বেতনাদি বাড়িয়ে কোচিং থেকে সম্পূর্ণরূপে ফিরিয়ে রাখতে হবে। অন্যদিকে দেশের দুর্নীতির বড় একটি জায়গা দখল করে আছে ভূমি অফিসগুলো। এখানে সত্যিকারার্থে উৎকোচ ছাড়া কোনো ফাইলই নড়ে না। ইউনিয়ন পর্যায়ের ভূমি অফিসগুলোতেও ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এনে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থা করা দরকার। পাশাপাশি সাধারণ জনগণ মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও পুলিশি মিথ্যা হয়রানি থেকে যেমন নিরাপদে থাকতে চায়, ঠিক তেমনি চায় কর্মসংস্থানের সঠিক ব্যবস্থা। আর এই বিষয়গুলোর যথাযথ সমাধান করাই হোক বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য।

 

লেখক : নিবন্ধকার

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads