• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

সংসদ

রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আসন ১৩৫ (টাঙ্গাইল-৬)

  • প্রকাশিত ১৮ মে ২০১৮

বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের সরকার— জনগণই যেখানে সকল ক্ষমতার উৎস। সংবিধান মতে, প্রতি পাঁচ বছর অন্তর জনগণই ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবে তাদের প্রতিনিধি। যিনি মহান সংসদে দাঁড়িয়ে নির্বাচিত এলাকার জনসাধারণের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কথা বলবেন এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। দেশের সাধারণ জনগণের নিজস্ব অনেক মতামত থাকে, যার সঠিক প্রতিফলন অনেক সময়ই নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাজেকর্মে প্রতিফলিত হয় না। সে কারণে সাধারণ জনগণ এবং বাংলাদেশের সকল মানুষের অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে আমাদের এক পাতা জুড়ে আয়োজন খবরের কাগজে সংসদ। এখানে রাজনৈতিক বিভিন্ন নেতাকর্মীর পাশাপাশি কথা বলবেন বাংলাদেশের তৃণমূল থেকে শুরু করে সংবিধান প্রণেতাসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ব্যক্তিরা, যাদের অনেকেই হয়তো কোনোদিনই মহান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে দেশ ও জনগণের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা বলার সুযোগ পাবেন না। তাদের কথা তুলে ধরার লক্ষ্যেই আমাদের এই আয়োজন। এবারের আয়োজন টাঙ্গাইল-৬ আসন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কথা সাজিয়েছেন আসিফ সোহান

regular_2221_news_1526572887

এক নজরে টাঙ্গাইল ৬ আসন

নাগরপুর উপজেলায় মোট ১২টি ইউনিয়ন ও ২৪৪টি গ্রাম রয়েছে। ইউনিয়নগুলো হলো— ১. ভারড়া ইউনিয়ন। ২. সহবতপুর ইউনিয়ন। ৩. গয়হাটা ইউনিয়ন। ৪. নাগরপুর ইউনিয়ন। ৫. সলিমাবাদ ইউনিয়ন। ৬. ধুবড়িয়া ইউনিয়ন। ৭. ভাদ্রা ইউনিয়ন। ৮. দাপ্তিয়র ইউনিয়ন। ৯. মামুদনগর ইউনিয়ন। ১০. মোকনা ইউনিয়ন। ১১. পাকুটিয়া ইউনিয়ন। ১২. বেকড়া ইউনিয়ন। এই উপজেলার লোকসংখ্যা ২,৫৮,৪৩১ জন (পুরুষ : ১,২৬,৮৮১জন ও নারী : ১,৩১,৫৫০জন)। এই উপজেলার আয়তন : ২৬৬.৭৭ বর্গকিলোমিটার।

দেলদুয়ার উপজেলা

দেলদুয়ার উপজেলায় মোট ৮টি ইউনিয়ন ও ১৬৮টি গ্রাম রয়েছে। ইউনিয়নগুলো হলো— ১. আটিয়া ইউনিয়ন। ২. এলাসিন ইউনিয়ন। ৩. ডুবাইল ইউনিয়ন। ৪. দেউলী ইউনিয়ন। ৫. দেলদুয়ার ইউনিয়ন। ৬. পাধরাইল ইউনিয়ন। ৭. ফাজিলহাট্টী ইউনিয়ন। ৮. লাউহাট্টী ইউনিয়ন। এই উপজেলার লোকসংখ্যা ১,৮৮,৪৪৯ জন (পুরুষ : ৯৪,৫০২জন ও নারী : ৯৩,৯৪৭জন)। এই উপজেলার আয়তন : ১৮৪.৫৪ বর্গকিলোমিটার।

2135

খন্দকার আবদুল বাতেন এমপি

(আওয়ামী লীগ)

এক সময় জাসদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বাতেন বাহিনীর প্রধান এই রাজনীতিবিদ ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রথমবার এমপি হন। এরপর আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ২য় মেয়াদে সাংসদ হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। টাঙ্গাইল-৬ আসনের রাজনীতিসহ দেশের হালচাল নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন আসিফ সোহান

বাংলাদেশের খবর : আপনি এখন নাগরপুর-দেলদুয়ার থেকে নির্বাচিত সাংসদ। বর্তমানে এই এলাকার মূল সমস্যাগুলো কি বলে আপনি মনে করেন?

খন্দকার বাতেন : আমি তো জানি আমার এলাকায় তেমন কোনো সমস্যা নেই, আগে কিছু সমস্যা ছিল, এখন তেমন কোনো সমস্যা নেই।

বাংলাদেশের খবর : নাগরপুর-দেলদুয়ারের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামগুলোতে মাদকের অবাধ বিস্তার লাভ করেছে, এলাকার সাংসদ হিসেবে আপনার মতামত কী? এটি কেন হচ্ছে?

খন্দকার বাতেন : এ এলাকায় এ রকম কোনো বিষয় আমার জানা নেই।

বাংলাদেশের খবর : আমরা সরেজমিন ঘুরে দেখেছি ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদক বিক্রি হচ্ছে গ্রামগুলোতে।

খন্দকার বাতেন : তা-ই যদি মনে করেন তাহলে এসে আমাকে দেখিয়ে দিয়ে যান কে বিক্রি করছে, এ রকম বললেই তো হবে না।

বাংলাদেশের খবর : থানায় কথা বললেই তো জানতে পারবেন, কখন কোথায় কে মাদকসহ গ্রেফতার হয়েছে, আমাদের কাছে তথ্যপ্রমাণসহ আছে।

খন্দকার বাতেন : ও, তাহলে সাংবাদিকদের সংবাদের সোর্স হচ্ছে থানার ওসি তাই তো?

বাংলাদেশের খবর : দেখুন সাংবাদিকদের কাজ হচ্ছে সঠিক তথ্যপ্রমাণ হাতে রেখে সমস্যাগুলোকে তুলে ধরা, আর প্রশাসনের কাজ হচ্ছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, থানা আইন প্রয়োগকারী হিসেবে তাদের কাজ করছে। আমাদের শুধু জানার বিষয় হচ্ছে, এ ধরনের মাদকের বিস্তার রোধে এলাকার সাংসদ হিসেবে আপনার বিষয়গুলো জানা আছে কি না।

খন্দকার বাতেন : সবকিছু সব সময় জানতে হবে এমন তো কথা নেই, যদি এ রকম কিছু সঠিক হয় আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিতে বলব।

বাংলাদেশের খবর : এলাকার জনগণের অভিযোগ এলাকার সঙ্গে আপনার যোগাযোগ অনেক কম, তারা আপনাকে একেবারেই পায় না যে, তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলবে। আপনার মতামত কী?

খন্দকার বাতেন : আমি এলাকার খোঁজখবর রাখি না এ কথা সত্যি নয়। আপনি কাল সন্ধ্যায় নাগরপুর আসেন দেখিয়ে দিই আমি এলাকায় যাই কি যাই না।

বাংলাদেশের খবর : আপনাকে যে সকল সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য নির্বাচিত করেছে। সে সকল সাধারণ মানুষগুলো যদি আপনাকে না পায় তবে তাদের দুর্দশা মেটাবে কে?

খন্দকার বাতেন : আমার এলাকায় বড় কোনো সমস্যাই তো নেই যে আমাকে তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে বা সমস্যা শুনতে হবে। যা আছে মাঝারি ধরনের সমস্যা, আপনি এসে দেখে যান।

বাংলাদেশের খবর : বর্তমান সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তার পৈতৃক বাড়ি নাগরপুরের ধুবড়িয়া গ্রামে। তিনি নিয়মিত এলাকায় যাচ্ছেন একেবারে অজপাড়াগাঁয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছেন। মানুষের সমস্যাগুলো শুনছেন এবং সাধ্যমতো সমাধানও করে দিচ্ছেন, তার সততা-আন্তরিকতার জন্য এলাকার মানুষই এখন তারানা হালিমকে নির্বাচন করার জন্য বলছে, তার বিষয়ে আপনার মতামত কী?

খন্দকার বাতেন : রাজনীতি তো আর আজকে থেকে করি না, রাজনীতি করতে করতে বুড়ো হয়ে গেলাম, তারানা হালিম নাগরপুর-দেলদুয়ারের রাজনীতিতে এখনো আসতেই পারেনি।

বাংলাদেশের খবর : কিন্তু তিনি তো নিয়মিত সকল সাংগঠনিক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন। থানা যুবলীগ, ইউনিয়ন যুবলীগের নেতাকর্মী, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সবাই তার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। আপনার এ কথাই কি প্রমাণ করে না যে, এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে আপনার বিশাল দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মীরা চায় তরুণ ও আন্তরিক নেতৃত্ব।

খন্দকার বাতেন : এত কথা বলে লাভ নেই, ইলেকশন আসুক দেখা যাবে।

বাংলাদেশের খবর : নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের কারণে দেশ এখন অনেক এগিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ- এসবই তরুণ, মেধাবী এবং আন্তরিক নেতৃত্বের জন্যই কি সম্ভব হয়েছে বলে আপনি মনে করেন না?

খন্দকার বাতেন : নতুন প্রজন্ম ভালো করছে আর প্রবীণরা ভালো করছে না এমনটা বলা কঠিন। সবাই মিলেমিশে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

 

NURMOHAMMAD KHAN

নূর মোহাম্মদ খান

সাবেক এমপি ও মন্ত্রী (বিএনপি)

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর টাঙ্গাইল-৬ আসনে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নূর মোহাম্মদ খান বিজয়ী হন। এ সময় তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির হয়ে পুনরায় সংসদ সদস্য হন। ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি জয়লাভ করেন। ১৯৮২-৮৩ সালে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নেতৃত্বে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনসহ সিনিয়র যেসব নেতার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় খালেদা জিয়া রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেন তাদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ খান অন্যতম। আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে নির্বাচন করার বিষয়ে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের খবরের বিশেষ প্রতিনিধি আসিফ সোহান  

আসিফ সোহান : দেশে নির্বাচনের হাওয়া বইছে, আবার বিভিন্ন রকম বৈরী দোলাচলের মধ্যে আছে রাজনৈতিক দল বিএনপি, নির্বাচনে যাওয়ার জন্য কি আপনারা প্রস্তুত? 

নূর মোহাম্মদ খান : জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আমরা মানসিকভাবে সবাই প্রস্তুত আছি। আমরা মনে করি একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে যেসব নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে কোনো কোনো নির্বাচন সঠিক হয়েছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিতর্কিত হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির যে নির্বাচন করা হয়েছে সেটি দেশে ও বিদেশে অত্যন্ত বিতর্কিত হয়েছে। এটি কোনো নির্বাচনই হয়নি। আমরা যেসব সুনির্দিষ্ট দাবি-দাওয়া পেশ করেছি, সেটিরও মূল্যায়ন হতে হবে। পার্লামেন্ট ডিজলভ্ করতে হবে এবং যে আকারে বা যে নামেই হোক বা যারাই থাকুক, নিরপেক্ষ একটি সরকারের অধীনে যেন নির্বাচনটি হয় এবং নির্বাচনটিকে সুষ্ঠু করার জন্য অবশ্যই সেনাবাহিনীকে মাঠে দায়িত্ব দিতে হবে। 

আসিফ সোহান : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুধাবন করে তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছেন। এ রকম অবস্থায় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে? 

নূর মোহাম্মদ খান : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। সব ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো মেধাবী তরুণ ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন রাজনীতিবিদ দলে বিদ্যমান। দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে, কাজেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি আমাদের সবাই আস্থাশীল। 

আসিফ সোহান : নাগরপুর-দেলদুয়ারের প্রত্যন্ত গ্রামে মাদকের ভয়াবহতা দেখা যাচ্ছে, কী কারণ? 

নূর মোহাম্মদ খান : মূল কারণ হচ্ছে সামাজিক অবক্ষয় আর এগুলোকে প্রেট্রোনাইজ করছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর একটি পক্ষ। যে কারণে এটি এখন সারা দেশের একটি বিরাট সমস্যা। এটা ব্যবসায়িক কারণে হোক কিংবা একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়ার কারণেই হোক এই কাজটা তারা সারা দেশেই করছে এবং সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এই মাদকের যে বিশাল বিশাল চালান আসছে সেটি কোনোভাবেই সম্ভব হতো না। স্কুল-কলেজের মেধাবী তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে এই মরণ নেশা। এমপি, সাংসদের ফ্ল্যাগ, স্টিকার লাগানো গাড়িতে করে আনা হচ্ছে মাদকের চালান। আমাদের এলাকাতে মাদকের যে অবাধ বিস্তার, সেটি এখনই থামানো দলমত নির্বিশেষে সবার দায়িত্ব। কাজেই আমরা যদি নির্বাচিত হই, তাহলে আমরা যেকোনো মূল্যে শুধু আমাদের এলাকা থেকে নয়, সারা দেশ থেকে এই মাদকের মূলোৎপাটন করব।  

আসিফ সোহান : টাঙ্গাইল-৬ আসনের দলীয় নমিনেশনের বিষয়ে আপনি কতটা আশাবাদী? 

নূর মোহাম্মদ খান : স্বাধীনতার পরবর্তী সময়গুলো থেকেই একাধিকবার মনোনীত হয়েছি, মন্ত্রীও ছিলাম। আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমাদের এলাকাটি এখন অবস্থানগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। যেমনটি বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক, তেমনি নাগরপুর-দেলদুয়ার অবস্থানগত দিক দিয়ে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান এমনিতেই এগিয়ে, আমাদের গ্রামটিও শিক্ষিত একটি গ্রাম। কাজেই উন্নয়ন প্রয়োজন- দল যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই মনোনয়ন দেবে। আমরা সবাই মিলেমিশে কাজ করব। নূর মোহাম্মদ খানের কাছে এলাকার উন্নয়নই বড় কথা।

Begum_Tarana_Halim_-_2017_(38080773052)_(cropped)_1

তারানা হালিম

তথ্য প্রতিমন্ত্রী (আ.লীগ)

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ছাত্রজীবন থেকে রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করে ১/১১ পরবর্তী দলীয় নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনসহ সকল সময়েই সরব ছিলেন রাজপথে, ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে সৎ ও প্রখর ব্যক্তিত্বের স্বীকৃতি রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনের সর্বোচ্চ মহলজুড়ে। বর্তমানে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকার জনসাধারণের পাশে আছেন দীর্ঘ ৯ বছর ধরে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পৈতৃক এলাকা টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনি। কথা বলেছেন আসিফ সোহান

বাংলাদেশের খবর : আপনি কবে থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন?

তারানা হালিম : আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২য় বর্ষে যুবলীগের মহিলা সম্পাদিকা হই। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সভাপতি হিসেবে রয়েছি। ছাত্র বয়স থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়। জনতার মঞ্চ, মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন বিরোধী আন্দোলন, নেত্রীর মুক্তির আন্দোলন ১/১১-তে, পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাজপথে ছিলাম। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে কখনো রাজপথ ছাড়িনি।

বাংলাদেশের খবর : নিজ এলাকার দিকে বিশেষভাবে কবে থেকে দৃষ্টি দিলেন?

তারানা হালিম : প্রধানমন্ত্রী যখন আমাকে প্রথমবার সংসদ সদস্য করলেন ২০০৯ সালে, তখন নিজের গ্রামের মানুষের খোঁজখবর নিতে এবং এলাকার উন্নয়নে সাধ্যমতো কাজ করতে শুরু করলাম। মানুষের চোখেমুখে আমার প্রতি অনেক বিশ্বাস আর ভালোবাসা দেখেছি। বয়স্ক মা-বোনরা আমাকে এসে জড়িয়ে ধরতেন, মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করতেন যেন নিজের ঘরের মেয়েকে পেয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ৯ বছর ধরে আমাকে ঘিরে সুসংগঠিত হয়েছে। আমিও একজন কর্মী, কাজেই কর্মীদের দুঃখ-বেদনা বুঝি। সম্মান আর একটু ভালোবাসা তাদের সুসংগঠিত করে। ওয়াদা পালন করা এবং সৎ মানুষ হিসেবে আমার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এটি আমি আজীবন ধরে রাখব।

বাংলাদেশের খবর : বর্তমানে টাঙ্গাইল-৬ আসনের নির্বাচিত সাংসদ খন্দকার আবদুল বাতেন, তিনিও মনোনয়ন চাইবেন, আপনি মনোনয়ন পাবেন- কেন এমনটি আশা করছেন?

তারানা হালিম : মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার সকলের আছে। নাগরপুর-দেলদুয়ারের সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে আমি তাদের দুঃখ-কষ্ট ও সমস্যা চিহ্নিত করলাম। জনসাধারণের সমস্যাগুলো সমাধানই আমার ব্রতী। এলাকার মানুষের সেবা করে তাদের অন্তরের মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার চেয়ে বড় কোনো প্রাপ্তি আর হতে পারে না। তাই এই মানুষগুলোর পাশে একটু শক্তভাবে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যার কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ, আমাকে তিনি এমপি ও প্রতিমন্ত্রী করেছেন। এই মানুষগুলোর ভালোবাসার প্রতিদান দেওয়ার কথা ভেবেই মনোনয়ন চাইব। নমিনেশন পাই বা না পাই আমি আমার গ্রাম ও বাবার ভিটেমাটির গন্ধমাখা মানুষের পাশে থাকব আজীবন। নৌকা মার্কা বিজয়ী হোক। নেত্রী আবার ক্ষমতায় আসুক- এটিই আমার কামনা। তবে সততার সঙ্গে যে পরিমাণ কাজ এলাকায় করেছি এবং মানুষ যেভাবে ভালোবাসে, তাতে মনোনয়ন পেলে নেত্রীর মুখ উজ্জ্বল করতে পারব, সে বিশ্বাস আমার আছে।

বাংলাদেশের খবর : দেলদুয়ার-নাগরপুর এলাকার মানুষের মূল সমস্যাগুলো কী?

তারানা হালিম : আমি সব সময় দেখেছি, গ্রামের সাধারণ মানুষের মনোবল বেশি থাকে। তাদের পাশে থেকে একটুখানি আশ্বাস ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিলে তারা নিজেরাই সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। মাদকসহ কিছু কমন সমস্যা তো আছেই, এগুলো আমি আমার মতো করে সমাধান করছি এবং করে যাব। ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে চৌহালি ও আগ দিঘুলিয়া বাঁধ নির্মাণ কাজ বরাদ্দ দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করতে পেরেছি। আমি যদি মনোনয়ন পাই আর জয়লাভ করতে পারি এই এলাকায় সন্ত্রাসীরা প্রশ্রয় পাবে না। দুর্নীতি উপড়ে ফেলতে কাজ করব। তালিকা করে কাজ শুরু ও শেষ করব। ভূমি দস্যুদের দমন করব। উন্নয়ন ও শান্তির একটি রোল মডেল এলাকা করার চেষ্টায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাব।

বাংলাদেশের খবর : নাগরপুর-দেলদুয়ারের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বহু ভাগে বিভক্ত, এক্ষেত্রে আগামী নির্বাচনে দলীয় কোন্দলে আসনটি বিএনপির দখলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না?

তারানা হালিম : আমি খুবই আশাবাদী একজন মানুষ, আওয়ামী লীগ একটি বহৎ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এখানে নানা ধরনের মতামত থাকবে। এটাই গণতন্ত্রের নিদর্শন। তবে বিভেদ শব্দটা বেমানান, দলীয় নেতৃত্ব যাকেই মনোনয়ন দান করবে তখন সবাই তার পক্ষে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। স্বতন্ত্র যারা নির্বাচন করেন মনোনয়ন না পেয়ে বা স্বতন্ত্র নির্বাচন করে দলীয় প্রার্থীর অবস্থান দুর্বল করেন তারা দলের চেয়ে নিজেকে বেশি ভালোবাসেন, যা ঠিক নয়। বিএনপির নেতিবাচক কর্মকাণ্ড মানুষ ভুলে যায়নি। তাই এই আসনে বিএনপির জয়লাভের সম্ভাবনা নেই। এই সরকারের সময় যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে তা কিন্তু আর কোনো সরকারের সময়ই হয়নি।

বাংলাদেশের খবর : রাজনীতিতে না নির্বাচনে টাকার খেলা চলে, এক্ষেত্রে আপনার মতামত কী?

তারানা হালিম : আমার এলাকার মানুষগুলো ‘সততা’ আর ‘কথা দিয়ে কথা রাখার’ বিষয়টাকে যে এতটা উপরে রাখে সেটি আমি আমার নিজের বেলায় দেখছি। টাকা দিয়ে ভোট  বা ভালোবাসা কেনা যায় এটি এলাকার মানুষ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং আমি বিশ্বাস করি না। যারা টাকা দিয়ে ভোট কেনে তারা পদে পদে উসুল করে নেয়। এটি আমাকে দিয়ে কখনো হবে না, আমার সততা এলাকার মানুষ পছন্দ করে। টাকার খেলা দেলদুয়ার-নাগরপুরবাসী নিজেরাই রুখে দেবে।  রাজনৈতিক সংস্কৃতির এই পরিবর্তন এখান থেকেই শুরু হোক। 

বাংলাদেশের খবর : আপনাকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ টিমের প্রধান করে প্রধানমন্ত্রী পাঠাচ্ছেন, আপনার অনুভূতি কেমন?

তারানা হালিম : নিজ হাতে নেত্রী আমার নাম লিখে দিয়ে আমার কাজের স্বীকৃতি দিয়েছেন, এটি অনেক বড় পাওয়া! স্যাটেলাইটের চুক্তি স্বাক্ষর থেকে শুরু করে স্যাটেলাইট তৈরি শেষ হওয়া, কোম্পানি গঠন গ্রাউন্ড স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন থেকে কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত আমি নিরলস পরিশ্রম করেছি দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ববোধ থেকেই প্রধানমন্ত্রী আমার আবেগের জায়গাটি বুঝেছেন। কারণ তিনি সহজ, সরল, আবেগী, মাতৃসম এক নেত্রী।

 

GOWTAM CHAKROBORTY

অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী

সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী (বিএনপি)

১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খন্দকার আবদুল বাতেনকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমোনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক তিনি। সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আসিফ সোহান

বাংলাদেশের খবর : আগামী সংসদ নির্বাচন হবে কি হবে না, এ নিয়ে আপনাদের মানে বিএনপির কোনো সংশয় আছে কি না যে, নির্বাচন হবে বা হলে কোন প্রক্রিয়ায় হবে?

অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী : আমরা সুনির্দিষ্ট দাবি-দাওয়া পেশ করেছি। সেই দাবি-দাওয়া মানা বা না মানার ওপর নির্ভর করে আমাদের ভূমিকা কী হবে। তাছাড়া আমাদের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে। তিনি কারাগারে থাকবেন আর আমরা নির্বাচন করব- এটা মেনে নেওয়া যায় না। আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যৎ বলে দেবে আমরা কোন পথে অগ্রসর হব।

বাংলাদেশের খবর : নাগরপুর-দেলদুয়ারের জনগণ কেন আপনাকে ভোট দেবেন বলে মনে করেন?

অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী : জনগণের কাছে আমার প্রত্যাশা যে, আমি সাংসদ বা মন্ত্রী থাকাকালে এলাকার মানুষের সঙ্গে এতটা ঘনিষ্ঠভাবে মিশেছি যে তারা আমাকে নিজেদেরই একজন মনে করেন। সরকারে থাকাকালে অনেক উন্নয়ন কাজ করেছি। আমার এলাকার মানুষ বিএনপির প্রতি, শহীদ জিয়ার প্রতি এবং ধানের শীষের প্রতি অসম্ভব রকমের দুর্বল। এলাকাটিকে ধানের শীষের ঘাঁটি বলা হতো। বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে তারা ভালোবাসেন আর তার সঙ্গে আমার কার্যক্রম যোগ হবে। সে কারণেই আমার এলাকার জনগণ অবশ্যই আমাকে ভোট দেবেন।

বাংলাদেশের খবর : বর্তমানে এই আসনের জনগণের মূল সমস্যাগুলো কী? আপনার প্রতিশ্রুতি কী হওয়া উচিত?

অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী : এখানে অনেক সমস্যা আছে, মাদকের সমস্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, যা কি না চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে একেবারেই ছিল না। আমাদের সময়ের সব রাস্তাঘাট একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে, নতুন কোনো রাস্তা তৈরি হয়নি। থানা সদর থেকে প্রতিটি গ্রামে রাস্তা তৈরির প্রয়োজন আছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন প্রয়োজন। নাগরপুরের সঙ্গে এখন কেন্দ্রের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো, সে কারণে এ অঞ্চলকে একটি শিল্পাঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে গড়ে তোলা যাবেই।

বাংলাদেশের খবর : এলাকার মূল সমস্যা এখন মাদকের অবাধ বিস্তার। গ্রামে গ্রামে ঢুকে পড়েছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ নানা ধরনের নেশার দ্রব্য। এর কারণ কী এবং এর প্রতিকার কী হতে পারে?

অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী : একাধিক কারণ আছে। দেশের শাসকগোষ্ঠী যেভাবে সমাজ পরিচালনা করবে, সেভাবেই দেশ ও আমাদের যুবসমাজ পরিচালিত হবে। সরকারের ওপর নির্ভর করে যুবসমাজ কীভাবে পরিচালিত হবে। নাগরপুর-দেলদুয়ারসহ দেশজুড়ে এখন এই মরণব্যাধি নেশা ছড়িয়ে পড়েছে। এই মরণ নেশার ছোবল থেকে যুবসমাজকে বাঁচানোর জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। জনগণের সচেতনতা প্রয়োজন আছে, তবে সর্বপ্রথম সরকার ও প্রশাসনের ভূমিকার ওপর নির্ভর করবে এ থেকে পরিত্রাণের পথ।

বাংলাদেশের খবর : আওয়ামী লীগের মধ্যে অনেক ধরনের দ্বিধাবিভক্তি রয়েছে এ এলাকায়। বিএনপির মধ্যে এ আসনে তেমন দ্বিধাবিভক্তি আছে কী?

অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী : বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাই বড় দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবেই। তবে কোনো দলীয় কোন্দল বা বিভেদ নেই। প্রতিযোগিতা থাকবেই। বিএনপির একটা ভালো দিক হচ্ছে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ যান না। দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান থাকে বলেই সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেন। সুতরাং দলে কোন্দল নেই, দল যাকেই মনোনয়ন দেবে, সবাই তার জন্যই কাজ করে যাবেন।

বাংলাদেশের খবর : আপনি একজন আইনবিদ। হঠাৎ দলের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন করা হয়েছে যে দণ্ডিত হলেও দলের শীর্ষ পদে থাকতে পারবেন, এটি কীভাবে দেখেন?

অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী : দেখুন, দলের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন ও পরিবর্ধনশীল। বিশেষ করে দেশের যে বর্তমান অবস্থা, সরকার যেভাবে বিএনপিকে নানা সমস্যায় ফেলার জন্য একের পর এক চেষ্টা করে যাচ্ছে, ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সাজা দিতে পারে এ ধরনের ধারণা যখন সরকারের সবার কথাবার্তায় প্রতীয়মান হয়েছে, বিশেষ করে সরকারের মন্ত্রীরা তো বক্তৃতাই দিয়েছেন খালেদা জিয়া জেলখানায় যাবেন। সে কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলের শীর্ষ পদে দেশনায়ক তারেক রহমান আসবেন এটাই স্বাভাবিক। সে কারণে দল ভাঙার চেষ্টাকে ব্যর্থ করতেই দলীয় সংবিধান বা গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করতে হয়েছে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

বাংলাদেশের খবর : তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রচারণার জবাবে আপনার মতামত কী?

অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী : প্রথমেই আমি বলব, এ ধরনের প্রপাগাণ্ডার কোনো ভিত্তি নেই। আমাদের প্রতিপক্ষ এবং তাদের সহযোগীরা এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণা প্রচার করার চেষ্টা করেছে, যা সব সময়ই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। যখন তারা দেখতে পেল দল ভাঙা তো দূরের কথা, তারেক রহমান সারা দেশের যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, সমগ্র দেশের মানুষকে সংঘবদ্ধ করেছেন এবং নেতৃত্ব তার হাতে চলে যাচ্ছে- ঠিক তখনোই তার বিরুদ্ধে একটা মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিএনপি এই যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে, সেটিও তারেক রহমানের নেতৃত্বে হচ্ছে এবং এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি রাজনৈতিক হার হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। অতএব বিভ্রান্তি ছড়িয়ে লাভ নেই। দেশের জনগণ এখন অনেক সচেতন।

Md Zakarial Hossain William

মো. জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম

(সভাপতি, উপজেলা আওয়ামী লীগ)

ধুবড়িয়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম। বাবা মো. সাইফুল ইসলাম (সেলিম) ছিলেন একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। গ্রামের অনেক অসহায় মানুষের উপকার যিনি করেছেন নিভৃতে। জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে পৈতৃক ব্যবসাকে নিয়ে গেছেন সাফল্যের উচ্চতায়। বহুদিন ধরে নানা সাংগঠনিক জটিলতায় বন্ধ থাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনের প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে তিনি এখন নাগরপুর উপজেলা কমিটির নির্বাচিত সভাপতি। গত সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন, এবারো চাইবেন। 

বাংলাদেশের খবর : আপনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবার সবকিছু ঢাকায় রেখে মাসের পর মাস গ্রামে থেকে তৃণমূল থেকে রাজনীতিতে কেন এলেন?

জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম : আমাদের পরিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের আদর্শ লালনকারী পরিবার। আমার মামা মো. রফিকুল ইসলাম রঙ্গু নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বাবা ও মামাদের যেমনভাবে মানুষের উপকার করতে দেখেছি আমরাও সেই আদর্শ অনুসরণ করে মানুষের উপকার করতে গিয়ে অনেক ধরনের অসুবিধার মুখোমুখি হয়েছি। সব সমস্যা সমাধানের জন্য আরো বৃহৎ পরিসরে সিস্টেমের অংশ হওয়া জরুরি। এ জন্য নিজেকে একটি সিস্টেমের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতিতে এসেছি।

বাংলাদেশের খবর : অনেক ব্যবসায়ীকে দেখা যায় কেন্দ্রীয়ভাবে মনোনয়ন নিয়ে এলাকার রাজনীতিতে জড়িত হন। আপনি সেটি না করে তৃণমূল থেকে রাজনীতিতে কেন নামলেন?

জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম : রাজনীতিতে আসার প্রথম কারণ সাধারণ মানুষগুলোর জন্য কিছু করার একটি দায়বদ্ধতা থেকে। নিজের এলাকার অসহায় মানুষগুলো আমার বাবার কাছ থেকে যেমন সহযোগিতা পেয়েছে, তার ছেলেদের কাছ থেকেও তেমনটাই আশা করে। তাই আমি গ্রামের তৃণমূলের মানুষগুলোকে সাথে নিয়েই কাজ শুরু করেছি। আমি চেয়েছি একেবারে মাঠপর্যায় থেকে দলীয় গঠনতন্ত্র মেনে নির্বাচনের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে নির্বাচিত হতে, এই চিন্তার ফলাফলস্বরূপ আমি এখন নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

বাংলাদেশের খবর : গ্রামে এখন মাদকের ব্যবসা হচ্ছে। ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক ছড়িয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?

জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম : মাদকের সমস্যার সমাধান কোনো একক ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা আর তার পাশাপাশি সঠিক নেতৃত্ব। মাদকের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রথমে গ্রামের অভিভাবকদের এগিয়ে আসতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই মাদকের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

বাংলাদেশের খবর : আওয়ামী লীগের সাংসদ খন্দকার আবদুল বাতেন আছেন, সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমও গ্রামে ব্যাপকভাবে গণসংযোগ করছেন। আপনি কাকে বেশি যোগ্য মনে করেন?

জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম : সাধারণ মানুষের কাছে যার গ্রহণযোগ্যতা বেশি হবে তিনিই যোগ্য। তা ছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন, আমরা সবাই তার হয়ে কাজ করব।

বাংলাদেশের খবর : আওয়ামী লীগের স্থানীয়ভাবে কোন্দলের কারণ কী?

জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম : আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একটি বৃহৎ রাজনৈদিক দল। এখানে প্রতিযোগিতা থাকবেই। সে কারণে বিভেদও কিছুটা রয়েছে। আমি যেহেতু নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সভাপতি- সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে আমি কাজ করে যাচ্ছি। নির্বাচনেও এক হয়ে কাজ করব এবং দলীয় প্রার্থীকেই বিজয়ী করতে চেষ্টা করব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads