• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
একনেকে ইভিএম প্রকল্প অনুমোদন

ইভিএম মেশিন

সংরক্ষিত ছবি

সংসদ

একনেকে ইভিএম প্রকল্প অনুমোদন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

অবশেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পেল বহুল আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্প। এর আওতায় দেড় লাখ ইভিএম সংগ্রহ, এ মেশিন ব্যবহারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও প্রচারণায় ব্যয় হবে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর শতভাগ অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। তিন ধাপে মেশিন কেনা হবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের এ সভা হয়। বিভিন্ন নির্বাচনে পর্যায়ক্রমে ইভিএম ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষার হার ও প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা বিবেচনায় শহরাঞ্চলে আগে এটি প্রচলনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মন্ত্রী জানান, গতকাল নতুন ও পুরনো মিলে ১৪ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এর মধ্যে ১১টি নতুন ও তিনটি চলমান। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫৪৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ৮ হাজার ৮৪২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো জোগাবে ২৫৭ কোটি ১ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ৩ হাজার ৪৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহ করতে চায় সরকার।

ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি নির্বাচিত সরকার কিছু বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে থাকে। বর্তমান সরকারের প্রাধান্য ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ও মধ্যম আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ। এ সরকারের আমলে লেনদেনসহ অনেক কিছুই ডিজিটাল হয়েছে। টেলিফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। তবে যেকোনো নির্বাচনে হেরে যাওয়া পক্ষ কারচুপির অভিযোগ করে থাকে। এ ধারা থেকে বের হয়ে আসতে ভোটগ্রহণে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে ইভিএম।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ মেশিন ব্যবহার সম্ভব হবে না বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি জানান, একনেক বৈঠকে ধীরে ধীরে ইভিএম ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, দেশের সব এলাকায় শিক্ষায় সমান অগ্রগতি হয়নি। গ্রামের মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতায় পিছিয়ে। প্রথম দিকে নগর অঞ্চলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।

সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই ইভিএম প্রকল্প অনুমোদনের যৌক্তিকতা বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে। এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। সে কারণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজন নেই।

দেশের নবম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। এর জন্য ১২০০ একর জমি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) থেকে বুঝে পেয়েছে রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। এ জমিতে আড়াইশ শিল্পপ্লট প্রতিষ্ঠায় ৭৫০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল, মিরসরাই- প্রথম পর্যায় শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এতে প্রায় দেড় লাখ কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

পল্লী এলাকায় ১০০ মিটারের কম দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ ও সংস্কারে ৪ হাজার ৯৭১ কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এতে ৩ হাজার ৪৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। প্রকল্পের আওতায় উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কের রক্ষণাবেক্ষণ, ২৫ কিলোমিটার সেতুতে বড় ধরনের সংস্কার, ২৪ কিলোমিটার সেতুর পুনর্বাসন, ৫ সেতুর সক্ষমতা বৃদ্ধি, ১০ কিলোমিটার সেতুর পুনর্স্থাপন, ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নতুন সেতু নির্মাণ ও ২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।

একনেকে অনুমোদন পাওয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি ও চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। ২৫৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয় ধরে শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। চট্টগ্রাম-রাঙামাটি জাতীয় মহাসড়কের হাটহাজারী থেকে রাউজান পর্যন্ত চার লেনে উন্নীত করতে খরচ হবে ৫২৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

গোপালগঞ্জ জেলায় বিএআরআইয়ের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন ও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ-প্রতিবেশ উপযোগী গবেষণা জোরদারে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৫৭ কোটি টাকা। বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হবে ১১১ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ৮২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরে গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। খুলনা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হবে ৮২৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

শাহবাগ থেকে বাংলাদেশ বেতারের কার্যক্রম আগারগাঁওয়ে স্থানান্তর ও আধুনিকায়ন প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা। ১২৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা খরচে জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়ক প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে বিসিএস ইকোনমিক একাডেমি প্রতিষ্ঠা প্রকল্পের সংশোধনীতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads