• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষকে  মোকাবেলা করা হবে

সংসদে প্রধানমন্ত্রী

ছবি : সংগৃহীত

সংসদ

সংসদে নৌকার জন্য ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষকে  মোকাবেলা করা হবে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ অক্টোবর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে আমরা পিছপা হই না, রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করি। তবে কেউ যদি জঙ্গি-সন্ত্রাস বা মাদক কারবার অথবা কেউ অশালীন উক্তি করে, আর মানুষ যদি বিচার চায়, সেই বিচার করাটাও রাষ্ট্রের কর্তব্য। রাষ্ট্র সে বিচার করবে এবং করে যাচ্ছে। সেটা দেশবাসী দেখতে পাচ্ছেন। গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই, ভোটও চাই। যাতে পুনরায় ক্ষমতায় এসে এই অন্যায় অবিচারের বিচার করতে পারি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ দেন, যাতে ২১ আগস্টের মতো সকল অন্যায়-অবিচার, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-মাদকমুক্ত করে দেশের মানুষের শান্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি।

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যা ও মানুষের ওপর অত্যাচার করা এটা তাদের (বিএনপি) স্বভাব। জিয়াউর রহমান যেমন ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তার স্ত্রী (খালেদা জিয়া) ও পুত্র (তারেক রহমান) ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। ওই মামলার রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শাস্তি যখন পেয়েছে, যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন, আল্লাহর ওপর আমার ভরসা আছে, মানুষের ওপর আমার বিশ্বাস আছে- নিশ্চয়ই একটা দিন আসবে। যারা (তারেক রহমান) এত বড় জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে, প্রকাশ্য দিবালোকে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহূত গ্রেনেড রাজপথে ব্যবহার করে যারা ২২ জন মানুষকে হত্যা করেছে, সেই মামলার বিচার ও রায় যখন হয়েছে, একদিন না একদিন সাজা তারেক রহমানকে পেতেই হবে এবং সাজা ভোগও করতে হবে। তিনি আরো বলেন, তারেক রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি। আগামী নির্বাচনে আবার আমরা ক্ষমতায় আসতে পারলে অবশ্যই আমরা তাকে ফিরিয়ে আনতে পারব, শাস্তি দিতে পারব। সাজাটা কার্যকর করার জন্যও দেশবাসীর দোয়া চাই।

জাতীয় পার্টির বেগম রওশন আরা মান্নানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় আসতে জনগণের ভোট-সমর্থন যেমন প্রয়োজন, তেমনি আল্লাহর ইচ্ছাটাও বড়। ১৫ আগস্ট আমার ১০ বছরের ছোট ভাইকেও কিন্তু রেহাই দেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধুর কোনো রক্ত যাতে বেঁচে থাকতে না পারে সেজন্য এমন ভয়াল হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। মাত্র ১৫ দিন আগে বিদেশে যাওয়ায় আমরা দু’বোন প্রাণে বেঁচে যাই। আমার জীবনের এখন একটাই লক্ষ্য, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা। জীবনে নিজে কী পেলাম বা পেলাম না সেটা বড় কথা নয়, দেশের মানুষকে কী দিতে পারলাম, তাদের ভাগ্যের কতটুকু পরিবর্তন করলাম সেটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। তিনি আরো বলেন, গত ১০ বছর একটানা ক্ষমতায় রয়েছি বলেই দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো এখন দৃশ্যমান হচ্ছে, যার সুফল দেশের জনগণ পাচ্ছে। সরকারের ধারাবাহিকতা রয়েছে বলেই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেলসহ বড় বড় মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। ২০২১ সাল পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারব কি না জানি না, কেননা বয়স হয়েছে। তবে আমি চাই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে। আমরা দেশকে অবশ্যই দারিদ্র্যমুক্ত করব। জঙ্গি-সন্ত্রাস-মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ আমরা গড়ে তুলবই।

ড. কামালের জোটকে স্বাগত জানাই, তবে... : ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রসঙ্গে সরকারি দলের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলবে। তবে রাজনৈতিকভাবে যারা জোট করেছে তাদেরকে আমি স্বাগতই জানাই। কারণ আমি মনে করি সকলেরই রাজনীতি করার অধিকার আছে। রাজনৈতিকভাবে বিভিন্ন দল জোট করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে গণতন্ত্রের ভিত্তিটা আরো মজবুত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

তিনি আরো বলেন, এখানে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) যারা যুক্ত হয়েছেন তাদের যে কথাবার্তা, যা কিছু এখন মানুষ জানতে পারছে বা শুনতে পারছে, তাদের কেউ কেউ মানুষকে সম্মান রেখেই কথা বলতে পারছে না। বিশেষ করে একটা নারীবিদ্বেষী মনোভাব, মেয়েদের প্রতি অশালীন কথা বলা থেকে শুরু করে জোটের নেতাদের মুখে অনেক কিছুই শুনতে পাচ্ছি। তবে আমি আশা করি, তারা সংযত হবেন। তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মোকাবেলা করতে আমি পিছপা হই না, রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করি- এটাই বাস্তবতা।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ : অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে বর্তমান সরকার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যে মশাল বঙ্গবন্ধু জ্বালিয়ে রেখে গিয়েছিলেন ৪২ বছর আগে, তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে তা বহন করে চলেছি। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ৯৮তম জন্মদিনে বাংলাদেশ জাতিসংঘ কর্তৃক স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার প্রাথমিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। দেশের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক উন্নয়নেরই প্রতিফলন ও স্বীকৃতি এটি। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অবশ্যই একটি বড় অর্জন। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads