• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
২৫ গ্রাম মাদক সঙ্গে থাকলে মৃত্যুদণ্ড

জাতীয় সংসদ

সংগৃহীত ছবি

সংসদ

সংসদে বিল পাস

২৫ গ্রাম মাদক সঙ্গে থাকলে মৃত্যুদণ্ড

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ অক্টোবর ২০১৮

ইয়াবা (অ্যামফিটামিন), কোকেন, হেরোইন পরিবহন, কেনাবেচা, ব্যবসা, সংরক্ষণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, হস্তান্তর, সরবরাহ ইত্যাদি অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সংসদে পাস হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৮। ইয়াবা, কোকেন, হেরোইন ও প্যাথেড্রিন জাতীয় মাদকের ব্যবহার, পরিবহন, চাষাবাদ, উৎপাদন, আমদানি-রফতানি বা বাজারজাত করার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড। মাদকের পরিমাণ ২৫ গ্রাম বা তার বেশি হলেই এই সাজা দেওয়া যাবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২৩তম অধিবেশনে গতকাল শনিবারের অধিবেশনে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এর আগে বিলের ওপর আনীত সংশোধনী, যাচাই ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ২২ অক্টোবর সম্পূরক কর্মসূচিতে বিলটি উত্থাপন করা হয়।

আইনে মাদকদ্রব্যের অপরাধের ৩৪টি ধরন একটি তফসিলে বর্ণনা করা হয়েছে। এজন্য আইনে সর্বনিম্ন এক বছর থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। তফসিলের ৭ থেকে ১৫ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত নয়টি ক্ষেত্রে ক শ্রেণিভুক্ত মাদকের বিভিন্ন পরিমাণ উল্লেখ করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনের বিধান রাখা হয়েছে। আইনে অপরাধ সংঘটনে অর্থ বিনিয়োগ, সরবরাহ, মদত ও পৃষ্ঠপোষকতা দিলেও একই ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কোনো গৃহে মাদকদ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য কোনো যন্ত্রপাতি, ওয়াশ অথবা অন্যান্য উপকরণ পাওয়া গেলে তাকে সর্বনিম্ন ২ বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

আইনে কোকেন, কোকো মাদক চাষাবাদ, উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে ২৫ গ্রাম মাদক থাকলেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আর ২৫ গ্রামের নিচে হলে কমপক্ষে দুই বছর ও সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। ইয়াবা বহনের ক্ষেত্রে ২০০ গ্রামের বেশি হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। তবে ১০০ গ্রাম বা মিলিলিটার হলে সর্বনিম্ন ৫ বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তির ডোপ টেস্টে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেলে কমপক্ষে ৬ মাস ও সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হবে।

আইনে দেশি মদ, মিথাইল অ্যালকোহল, অ্যাবসিলিউট অ্যালকোহল, রেক্টিফায়েড স্পিরিট, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জন্য ৪০ লিটার প্রুফ, এক্সট্রা নিউট্রাল অ্যালকোহল ইথানল (ওষুধে ব্যবহারের জন্য), বাংলাদেশে প্রস্তুত বিলাতি মদ, ডিনেচারড স্পিরিট ও টলুইন এই আট প্রকার মাদক ব্যবহারে শুল্ক আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যক্তি অ্যালকোহল পান করতে পারবেন না।

আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণীত হয়। এরপর ২০০০, ২০০২ ও ২০০৪ সনে আইনটি সংশোধিত হয়। এরপর আইনে আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী সকল মাদকদ্রব্য অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। সাম্প্রতিককালে ইয়াবার ভয়াবহ আগ্রাসন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। মাদক মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন। মাদক ব্যবসায়ীর পাশাপাশি মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক, অর্থ লগ্নিকারীদেরও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। সেজন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ প্রণয়নের প্রয়োজন। বিলের সঙ্গে সরকারি অর্থ ব্যয়ের প্রসঙ্গ জড়িত থাকায় বিলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন রয়েছে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads