• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
চিকিৎসকের শূন্যপদ ১১ হাজার

সংগৃহীত ছবি

সংসদ

চিকিৎসকের শূন্যপদ ১১ হাজার

সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ নভেম্বর ২০২০

সারা দেশে চিকিৎসকের ১১ হাজার ৩৬৪টি পদ শূন্য রয়েছে। ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে ২৯০ জন, ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে ২৬০ জন, ৪১তম বিসিএসের মাধ্যমে ১০০ জন, ৪২তম বিসিএসের মাধ্যমে ২ হাজার চিকিৎসকের শূন্যপদ পূরণের কার্যক্রম চলমান আছে। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশ্নোত্তরে সরকারি দলের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় সংসদে জেলাওয়ারি শূন্য পদের পরিসংখ্যান দিয়েছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, দেশের ৬৪ জেলার সবকটিতেই চিকিৎসকের পদ ফাঁকা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি পদ ফাঁকা ঢাকায় ৩ হাজার ১৮৫টি। মন্ত্রী বলেছেন, ওএসডি চিকিৎসকের সংখ্যা বেশি থাকায় ঢাকায় বাড়তি চিকিৎসক দেখানো হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় তিন হাজার ১৮৫টি পদ, ফরিদপুরে ২৭৮, গাজীপুরে ১২৫, গোপালগঞ্জে ২৮৩, কিশোরগঞ্জে ২৩৭, মাদারীপুরে ৪২, মানিকগঞ্জে ২১৪, মুন্সীগঞ্জে ৯১, নারায়ণগঞ্জে ৫৩, নারসিংদী ৫২, রাজবাড়ীতে ৭৪, শরীয়তপুরে ৭৮, টাঙ্গাইলে ৯০, জামালপুরে ১৫৬, ময়মনসিংহে ৩১১, নেত্রকোনায় ১২০, শেরপুরে ৪৭, বান্দরবানে ৪২, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৭৫, চাঁদপুরে ৫৬, চট্টগ্রামে ৩৪৬, কুমিল্লায় ২২৬, কক্সবাজারে ১৩৪, ফেনীতে ৪৮, খাগড়াছড়িতে চিকিৎসকের শূন্যপদ ১১ হাজার ৩৭, লক্ষ্মীপুরে ৩৪, নোয়াখালীতে ৯৮, রাঙ্গামাটিতে ৬০, বগুড়ায় ২৬৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫০, দিনাজপুরে ৩৩৩, গাইবান্ধায় ৭৬, জয়পুরহাটে ৬১, কুড়িগ্রামে ৯০, লালমনিরহাটে ৬৪, নওগাঁয় ১১৯, নাটোরে ৪৯, নীলফামারীতে ১২৫, পাবনায় ১২৪, পঞ্চগড়ে ৭৬, রাজশাহীতে ২৩৩, রংপুরে ২৬১, সিরাজগঞ্জে ১৬১, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭৩, বাগেরহাটে ১২৪, চুয়াডাঙ্গায় ২১, যশোরে ১২৩, ঝিনাইদহে ৭৭, খুলনায় ৩৯৬, কুষ্টিয়ায় ১০৭, মাগুড়ায় ৫০, মেহেরপুরে ৪৫, নড়াইলে ৪৯, সাতক্ষীরায় ১৬৫, বরগুনায় ৯৪, বরিশালে ৪৩৮, ভোলায় ৯২, ঝালকাঠীতে ৩৭, পটুয়াখালীতে ১৮৭, পিরোজপুরে ৭৮, হবিগঞ্জে ৫৫, মৌলভীবাজারে ৬৩, সুনামগঞ্জে ১৩১ এবং সিলেটে  চিকিৎসকের ৩৩১টি  পদ শূন্য রয়েছে।

সরকারি দলের হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ৩৯তম বিসিএসে (২য় পর্যায়) নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের বিশেষ ক্ষেত্রে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করার জন্য সংযুক্তির মাধ্যমে পদায়ন করা হচ্ছে। উপজেলার চেয়ে নিম্ন কোনো প্রতিষ্ঠানে ৩৯তম বিসিএস (২য় পর্যায়) নিয়োগপ্রাপ্ত কাউকে পদায়ন করা হচ্ছে না। তবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রয়োজনে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য সংযুক্তির আদেশ বাতিল করে এই চিকিৎসকদের কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে পদায়ন করা হবে।

বিএনপির জিএম সিরাজের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশে অনুমোদনহীন বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান আছে। প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া সাপেক্ষে অনুমোদনবিহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জিএম সিরাজের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা দূর করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের আলোকে দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ শৃঙ্খলামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে কোভিড-১৯ বিভিন্ন কার্যক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। এর পরিপেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কয়েকজন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে ওএসডি করা হয়েছে। এছাড়া সরকারিভাবে বিভিন্ন নির্দেশনার ভিত্তিতে শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।

দ্রুত সময়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষা পদ্ধতির উদ্যোগ :

দ্রুত সময়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার পদ্ধতি আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

 

সরকার কোভিড পরীক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধি ও এ সংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে পিসিআর পরীক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য আধুনিক ও দ্রুত সময়ে পরীক্ষার পদ্ধতি দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কম হওয়ার কারণে দেশের মানুষের বেশি বেশি পরীক্ষা করতে চাচ্ছে না। এ কারণে দেশে সর্বোচ্চ সক্ষমতার চেয়েও দৈনিক কম সংখ্যক নমুনা সংগ্রহীত হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও যুগোপযোগী নেতৃত্বে বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি দেশের মতো বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারীকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে সংক্রমণ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১১৫টি পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা সক্ষম হয়েছে। এ সব ল্যাবে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ হাজার পিসিআর পরীক্ষা করা সম্ভব। প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরো বাড়ানো যেতে পারে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১৩ থেকে ১৫ হাজার পরীক্ষা সম্পন্ন হচ্ছে।

মন্ত্রী জানান, কোভিড-১৯ পরীক্ষার হার দৈনিক চাহিদার ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে দেশের উপসর্গ ও উপসর্গহীন যে কোনো নাগরিক ও দেশে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের চাহিদামাত্র কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে পারেন।  পরীক্ষার হার বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার সব রকমের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads