• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

ছবি : ইন্টারনেট

শারীরিক বিজ্ঞান

ঋতুভেদে বদলে যায় মস্তিষ্কের সক্রিয়তা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৭ এপ্রিল ২০১৮

বেড়ানোর জন্য সবাই সাধারণত শীতকালকেই বেছে নেন, আবার অনেকে বাড়ির কোনো অনুষ্ঠান দেন শরত বা হেমন্তে। কিন্তু কেন? এর একটি জবাব হতে পারে পরিবেশ ও আবহাওয়ার কারণেই মানুষ ঋতুভেদে কিছু বিশেষ কাজ করে।

তবে গবেষকরা বলছেন, ঋতুভেদে মানুষের মস্তিষ্কের কাজের মাত্রা ও ক্ষমতার তফাৎ হয় বলেই তাদের কাজের ধরন ও সক্ষমতা ভিন্ন হয়। শুধু তাই নয়, মানুষের জিনের সক্রিয়তাও ঋতুর সঙ্গে পরিবর্তিত হয়।

সম্প্রতি বেলজিয়ামের কয়েকজন গবেষক ২৮ জন স্বেচ্ছাসেবীকে নিয়ে বিভিন্ন ঋতুতে একটি পরীক্ষাটি করেন। তাতে তারা দেখেন, মস্তিষ্কের কার্যকলাপের চলমান প্রক্রিয়া ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন। এই নতুন গবেষণাটির প্রবন্ধ সম্প্রতি ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়।

পরীক্ষায় প্রতিবার একজন ব্যক্তি টানা চার থেকে পাঁচ দিনে একটি গবেষণাগারে কাজ করেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকেন। এরপর প্রত্যেকের মস্তিষ্ক স্ক্যান করে তাদের কর্মদক্ষতা, কাজের প্রতি মনোযোগ বজায় রাখা, তথ্য সংগ্রহ ও তুলনা করার দক্ষতা, স্মৃতিতে তথ্য ধারণ করার ক্ষমতা ইত্যাদি পরীক্ষা করে দেখা হয়।

গবেষকরা দেখতে পান বিভিন্ন সময় মানুষের কর্মদক্ষতার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। তবে কাজ সম্পাদন করতে ‘নিউরাল কস্ট ও মস্তিষ্কের কার্যাবলির প্রক্রিয়ার পরিবর্তন হয়। এটি বছরের বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন রকম হয়।

শুধু তাই নয়, তারা দেখতে পান কার্যক্ষমতার পর্যায় স্মৃতিতে ধারণক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত। তাদের হিসাবে মস্তিষ্কের কাজের মাত্রা মনোযোগ বজায় রাখার সমানুপাতিক।

গবেষকরা দেখেন, শীতকালে মস্তিষ্কের কাজের মাত্রা থাকে উপরে। অন্যদিকে ডিসেম্বর মাসে গ্রীষ্মের সময়ে মস্তিষ্কের কাজের মাত্রা থাকে নিচের দিকে। আর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা শরতে থাকে শীর্ষে এবং বসন্তে থাকে সর্বনিম্নে।

এর আগে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ঋতুর পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের দৈনন্দিন কাজের সম্পর্ক রয়েছে। গবেষকরা মনে করেন, শীতকালে মানুষের ক্যালরি গ্রাস করার ঝোঁক গ্রীষ্মকালের তুলনায় বেশি। ২০১৫ সালে নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের জিনের সক্রিয়তা ঋতুর সঙ্গে পরিবর্তিত হয়।

গবেষণায় আরো দেখা গেছে, মানুষের মেজাজ এবং ঋতুর মধ্যে একটা যোগসূত্র আছে। শীতকালে মস্তিষ্কের সিজনেবল অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডারের (এসএডি) লক্ষণ দেখা যায়।

গবেষক ভেনডেওয়ালে বলেন, যদিও গবেষকরা মস্তিষ্কের সক্রিয়তা এবং ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের মেজাজ পরিবর্তনের সম্ভাব্য সম্পর্ক এই নতুন গবেষণায় পরীক্ষা করেননি, কিন্তু যারা এসএডিতে ভুগছেন, তাদের ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত মস্তিষ্কের জ্ঞান সম্বন্ধীয় কার্যাবলির প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

গবেষকরা আরো বলেন, নতুন গবেষণায় পাওয়া ঋতু পার্থক্যের সঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যকলাপের পরিবর্তনের পেছনে দায়ী মূল কারণ ও প্রক্রিয়া এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আগের গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু নিউরোট্রান্সমিটার যেমন সেরোটোনিনের মাত্রা এবং সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় জড়িত প্রোটিনের মাত্রা ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়।

গবেষকরা এই নতুন গবেষণা থেকে উপনীত হন যে, ঋতুর পরিবর্তনের সঙ্গে মস্তিষ্কের সক্রিয়তার বৈচিত্র্যময় পরিবর্তন হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads