• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
রোজার শুরু ও শেষ সময় জানা জরুরি

উত্তম হলো, আজান শুরু হওয়ার আগেই পানাহার শেষ করা

সংরক্ষিত ছবি

ধর্ম

রোজার শুরু ও শেষ সময় জানা জরুরি

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ০১ জুন ২০১৮

পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৮৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কালো রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো। আয়াতটিতে রোজার শুরু ও শেষ সময়ের ‘সীমানা’ স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। রমজানে সাহরির শেষ সময় তথা রোজা শুরুর সময় এবং ইফতার শুরুর সময় তথা রোজার শেষ সময় নিয়ে অনেক মুসলমান কিছুটা দ্বিধায় ভোগেন এবং একেক জন একেক রকম নিয়ম মোতাবেক সময় মেনে সাহরি ও ইফতার করেন। এটা নিতান্তই অজ্ঞতা ও অলসতার পরিচয়। একটু সচেতন হলেই সাহরি ও ইফতারের সঠিক সময় নির্ণয় করা এবং শুদ্ধভাবে সঠিক সময়ে সাহরি ও ইফতার করা সম্ভব।

রোজা শুরুর সময় : ফজরের সাদা রেখা কালো রেখা থেকে স্পষ্ট হওয়া অর্থাৎ সুবেহ সাদিক উদিত হওয়া। হজরত ইবনে উমর (রা.) বলেন, রসুলের (সা.) দুজন মুয়াজ্জিন ছিলেন। হজরত বিলাল (রা.) ও উম্মু মাকতুমের অন্ধ ছেলে। রসুল (সা.) বলেছেন, বিলাল (রা.) রাতেই আজান দেয়। অতএব ইবনে উম্মু মাকতুম আজান না দেওয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার করো (মুসলিম)। এ প্রসঙ্গে হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, বিলাল (রা.) রাতেই আজান দিত অর্থাৎ বিলালের (রা.) আজান ছিল মূলত সাহরি খাওয়া শুরু করার জন্য। তাই আল্লাহর রসুল (সা.) বলেছেন, ইবনে উম্মু মাকতুম (রা.) আজান না দেওয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার করো। কারণ ফজরের সময় না হওয়া পর্যন্ত সে আজান দেয় না (বোখারি)।

এ ছাড়া হজরত জায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) বলেন, আমরা রসুলের (সা.) সঙ্গে সাহরি খেয়েছি, এরপর সালাতের জন্য দাঁড়িয়েছি। বর্ণনাকারী জিজ্ঞেস করলেন, ফজরের আজান এবং সাহরির মধ্যে কতটুকু সময় ব্যবধান ছিল? তিনি বলেন, পঞ্চাশ আয়াত পাঠ করা পরিমাণ (বোখারি)। এখানে আয়াত বলতে মধ্যম ধরনের আয়াত গণ্য হবে। আর এই শ্রেণির ৫০টি আয়াত পড়তে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগে। সুতরাং সাহরির শেষ সময় তথা রোজা শুরুর সময় হলো সুবেহ সাদিক উদিত হওয়া বা ফজরের আজান শুরু হওয়া। ফজরের আজান শুরু হওয়ার পর আর সাহরি গ্রহণ করা ঠিক নয়। উত্তম হলো, আজান শুরু হওয়ার আগেই পানাহার শেষ করা।

রোজার শেষ সময় : রাত পর্যন্ত অর্থাৎ সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, লোকেরা যতদিন শিগগির ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে (বোখারি)। হজরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, যখন রাত সেদিক থেকে ঘনিয়ে আসে ও দিন এদিক থেকে চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায়, তখন রোজাদার ইফতার করবে (বোখারি)। এক সময় হজরত আয়েশাকে (রা.) জিজ্ঞেস করা হলো- রসুলের (সা.) দুজন সাহাবির একজন সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করেন এবং তাড়াতাড়ি (মাগরিবের) সালাত আদায় করেন। দ্বিতীয়জন বিলম্বে ইফতার করেন এবং বিলম্বে সালাত আদায় করেন। হজরত আয়েশা (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, কে ইফতার ও সালাত তাড়াতাড়ি আদায় করেন? বলা হলো, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)। আয়েশা (রা.) বললেন, রসুল (সা.) এমনটাই করতেন (আবু দাউদ)। সুতরাং ইফতার শুরুর সময় তথা রোজার শেষ সময় হলো রাত শুরু হওয়া বা মাগরিবের আজান হওয়া। মাগরিবের আজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা উত্তম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads