• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ইতিকাফ কেন করবেন, কীভাবে করবেন

ইতিকাফ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

ইতিকাফ কেন করবেন, কীভাবে করবেন

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ০৫ জুন ২০১৮

ইতিকাফ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ইতিকাফ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ অবস্থান করা, স্থির থাকা, কোনো স্থানে আটকে পড়া বা আবদ্ধ হয়ে থাকা। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় রমজান মাসের শেষ দশক বা অন্য কোনো সময় জাগতিক কাজকর্ম ও পরিবার-পরিজন থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে আল্লাহকে খুশি করার নিয়তে পুরুষের জন্য মসজিদে এবং নারীদের জন্য ঘরে নামাজের নির্দিষ্ট একটি স্থানে ইবাদত করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করা ও স্থির থাকাকে ইতিকাফ বলে।

পবিত্র কোরআনের আয়াতে সুরা বাকারার ১৮৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফকালে স্ত্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করো না। নবীজি (সা.) ইতিকাফকে খুব গুরুত্ব দিতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, রসুল (সা.) প্রতি রমজানের শেষ দশক (মসজিদে) ইতিকাফ করতেন। এ আমল তার ইন্তেকাল পর্যন্ত জারি ছিল (বোখারি ও মুসলিম)।

ইতিকাফ তিন ধরনের— ১. ওয়াজিব, ২. মুস্তাহাব, ৩. সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া। ইতিকাফ করার মানত করলে তা আদায় করা ওয়াজিব। রমজানের শেষ ১০ দিনে ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া। সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া মানে হলো— একটি মহল্লা বা এলাকার সবার পক্ষে অন্তত একজন আদায় করতে হবে। একজনও আদায় না করলে পুরো এলাকাবাসীর গুনাহ হবে। এ ছাড়া রমজানের শেষ ১০ দিন ছাড়া যত ইতিকাফ করা হবে, তা মুস্তাহাব বা নফল।

ইতিকাফ আদায় সহিহ হওয়ার জন্য চারটি শর্ত রয়েছে— ১. পুরুষের মসজিদে এবং নারীদের জন্য ঘরে অবস্থান করা। ২. ইতিকাফের নিয়ত করা। ৩. বড় নাপাক থেকে পবিত্রতা অর্জন করা। ৪. রোজা রাখা।

ইতিকাফের ফজিলত সম্পর্কে রসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রোজার শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করবে, সে ব্যক্তি দুটি হজ ও দুটি ওমরার সমপরিমাণ সওয়াব পাবে (বোখারি ও মুসলিম)। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইতিকাফ করবে, আল্লাহতায়ালা তার এবং জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তিনটি পরিখার দূরত্ব সৃষ্টি করবেন। প্রত্যেক পরিখার প্রশস্ততা দুই দিগন্তের চেয়েও বেশি (বায়হাকি)।

মসজিদুল হারামে আদায়কৃত ইতিকাফ ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ইতিকাফ। তারপর মসজিদে নববির ইতিকাফ এবং তারপর বায়তুল মুকাদ্দাস। তারপর উৎকৃষ্ট ইতিকাফ হলো কোনো জামে মসজিদে ইতিকাফ করা, যেখানে রীতিমতো জামাতে নামাজ হয়। এরপর মহল্লার মসজিদে।

একজন মুসলিম যেসব কারণে ইতিকাফ করতে পারেন— ১. ইসলামের বিধান মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে। ২. পাশবিক প্রবণতা ও অহেতুক কাজ থেকে দূরে থাকার চর্চা। ৩. শবেকদর তালাশ করার উদ্দেশ্যে। ৪. মসজিদে অবস্থানের অভ্যাস গড়ে তোলা। ৫. দুনিয়ামুখী মানসিকতা ত্যাগ ও বিলাসিতা থেকে দূরে থাকা এবং ইতিকাফ করার ফজিলত অর্জনের উদ্দেশ্যে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads