• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
রমজানের শেষ দশক কীভাবে কাটাবেন

রমজানের শেষ দশ দিনে প্রবেশ করে রসুল (সা.) রাত জাগরণ করতেন

সংরক্ষিত ছবি

ধর্ম

রমজানের শেষ দশক কীভাবে কাটাবেন

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ০৯ জুন ২০১৮

রমজান— রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস। আমল-ইবাদতের স্বর্ণমৌসুম। রমজানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গোটা সময়টি প্রত্যেক মুসলমানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র এ মাসের শেষ দশক বা শেষ দশ দিনকে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করতেন রসুল (সা.)। তিনি এ সময় ইতিকাফসহ বিভিন্ন ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকতেন। একটি হাদিসে হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, রসুল (সা.) অন্য সময়ের তুলনায় রমজানের শেষ দশ দিনে আমল-ইবাদতে অধিক পরিশ্রম করতেন। (মুসলিম) অপর বর্ণনায় হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রমজানের শেষ দশ দিনে প্রবেশ করে রসুল (সা.) রাত জাগরণ করতেন। পরিবারের সবাইকে জাগিয়ে দিতেন এবং পূর্ণভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। (মুসলিম) ‘রমজানের শেষ দশ দিনে রসুল (সা.) রাত জাগরণ করতেন’— হাদিসের এ অংশ দ্বারা প্রমাণিত হয় বা বোঝা যায়, প্রথম বিশ দিনে রসুল (সা.) পূর্ণ রাত জাগরণ করতেন না; বরং রাতের কিছু সময় ইবাদত করতেন এবং কিছু সময় ঘুমিয়ে কাটাতেন। শেষ দশ দিনে এমনকি তিনি বিছানায়ও গমন করতেন না। রাতের পুরোটা সময় ইবাদতে কাটাতেন। একটি হাদিসে এসেছে, রসুল (সা.) রমজানের শেষ দশকে এত বেশি চেষ্টা-সাধনা করতেন, যা অন্য মাসে করতেন না। (মুসলিম) আরো বর্ণিত আছে, শেষ দশক চলে এলে রসুল (সা.) কোমর বেঁধে লাগতেন। নিজে রাত জেগে ইবাদত করতেন। পরিবারের লোকদের জাগাতেন। (বোখারি ও মুসলিম) এ ছাড়া হজরত আয়েশা (রা.) থেকে আরো বর্ণিত রয়েছে— প্রথম বিশ দিনে রসুল (সা.) ঘুম ও ইবাদতে কাটাতেন। শেষ দশ দিনে পূর্ণভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ইবাদতে নিমগ্ন হতেন। (মুসনাদে আহমদ)

রমজানের শেষ দশকটি যেসব কারণে গুরুত্বপূর্ণ, তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো— রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর রয়েছে। আর এটি এমন একটি রাত, যাকে হাজার মাসের তুলনায় শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে। রমজানের শেষ দশকের কোন রাতটি ‘লাইলাতুল কদর’ তা নির্দিষ্ট নয়। এজন্য শেষ দশক জুড়ে মুমিন বান্দারা এ রাতের খোঁজে থাকেন। রসুল (সা.) বলেছেন, রমজানের শেষ দশকে বা শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে তোমরা লাইলাতুল কদর তালাশ করো। (বোখারি ও মুসলিম) হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ রাতটিতে আমল-ইবাদতে কাটানোর মাধ্যমে পারলৌকিক সফলতা অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের উচিত রমজানের শেষ দশককে গুরুত্ব দেওয়া। হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ এ রাত ইবাদতে কাটানো বিরাট বড় একটি সুযোগ। এ ছাড়া রমজানের শেষ দশকে আরো গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত রয়েছে, আর তা হলো— ইতিকাফ। পাপমোচন ও পুণ্য বৃদ্ধির অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল হলো ইতিকাফ। রসুল (সা.) রমজানের শেষ দশকে আমৃত্যু ইতিকাফ করেছেন। (বোখারি ও মুসলিম) সুতরাং পবিত্র রমজান মাসের বিদায়লগ্ন শেষ দশকে প্রত্যেক মুসলমানের উচিত বেশি থেকে বেশি আমল-ইবাদতে সময় কাটানোর মাধ্যমে জীবনের কৃত পাপ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্তির চেষ্টা চালানো এবং পারলৌকিক সফলতা অর্জনের পথকে সহজ করার প্রার্থনায় মনোযোগী হওয়া।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads