• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বিসমিল্লাহর বিকল্প হিসাবে ‘৭৮৬’ ব্যবহার ঠিক নয়

আরবি বর্ণ ‘বা’, ‘সিন’ ও ‘মীম’-এর সংখ্যা মানের যোগফল হলো ‘৭৮৬’

সংরক্ষিত ছবি

ধর্ম

বিসমিল্লাহর বিকল্প হিসাবে ‘৭৮৬’ ব্যবহার ঠিক নয়

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ১৬ জুলাই ২০১৮

কোরআন-হাদিসের ভাষ্য ও রসুল (সা.)-এর আমলের আলোকে এ কথা স্বীকৃত যে, ‘বিসমিল্লাহ’ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ইসলামী বিধানে ‘বিসমিল্লাহ’র ব্যবহারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করা হয়নি এমন কাজকে অসম্পূর্ণ ও বরকতশূন্য বলা হয়েছে। তাই মুসলমানদের উচিত প্রত্যেক ভালো কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করা। এতে কাজে বরকত আসার সম্ভাবনা যেমনিভাবে ত্বরাান্বিত হয়; তেমনিভাবে আল্লাহর আদেশ ও রসুল (সা.)-এর সুন্নতও পালন হয়।

ইসলামের বিধান ও ‘বিসমিল্লাহ’র গুরুত্ব বিবেচনায় রসুল (সা.)-এর যুগ থেকে সাহাবা আজমাইন, তাবেঈন ও তাবে-তাবেঈনদের আমল হয়ে বুজুর্গানে দ্বীনগণ সব কাজের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলেছেন। এক্ষেত্রে কোনো যুগে কাউকে ‘বিসমিল্লাহ’র কোনো সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। ‘বিসমিল্লাহ’র এই বরকতময় ব্যবহারের ধারাবাহিকতায় হঠাৎ করেই একটি সূক্ষ্ম বিভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয়, আর তা হলো—‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’-এর পরিবর্তে ‘৭৮৬’ সংখ্যার ব্যবহার। ঠিক কবে থেকে এবং কীভাবে ‘বিসমিল্লাহ’র বিকল্প হিসেবে এই সংখ্যার ব্যবহার শুরু হয় তার সঠিক ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় না। বলা হয়ে থাকে, আরবি বর্ণ ‘বা’, ‘সিন’ ও ‘মীম’-এর সংখ্যা মানের যোগফল হলো ‘৭৮৬’। আরবি বর্ণ ‘বা’, ‘সিন’ ও ‘মীম’ দ্বারা যেহেতু ‘বিসমিল্লাহ’ নির্মিত, সুতরাং ‘বিসমিল্লাহ’র বদলে ‘৭৮৬’ ব্যবহার বৈধ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই বৈধতার শরীয়তগত কোনো বৈধতা নেই। কোরআন-হাদিস-ইজমা-কিয়াসের কোনো মূলনীতির আলোকেও এ ব্যবহারের কোনো বৈধতার স্বীকৃতি পাওয়া যায় না। সুতরাং যে বা যারা ‘বিসমিল্লাহ’র বদলে ‘৭৮৬’ ব্যবহারে অভ্যস্ত এবং এটাকেই সুন্নাহ ভাবেন ও বরকত লাভের আশা করেন; তাদের উচিত এই মুহূর্ত থেকে তওবা করে সম্পূর্ণরূপে ‘বিসমিল্লাহ’ ব্যবহার করা। 

‘বিসমিল্লাহ’র বদলে ‘৭৮৬’ সংখ্যার ব্যবহারে ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠের সওয়াব অর্জিত হবে না এবং ‘বিসমিল্লাহ’ দ্বারা কাজ শুরু করার সুন্নতও আদায় হবে না, যদিও ‘বিসমিল্লাহ’র সংখ্যা মান ‘৭৮৬’ হয় (আহসানুল ফতোয়া)। এ ছাড়া ভালো বা শুভ কাজ ছাড়া নিষিদ্ধ কোনো কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করা হারাম। ইসলামী শরিয়তের মূলনীতি হলো— যে স্থানে শরিয়ত যে পদ্ধতিতে ইবাদত পালনের নির্দেশনা প্রদান করেছে, তার বিকল্প ব্যবহার বা বিকল্প পদ্ধতি অনুসরণ নিষিদ্ধ। সুতরাং ইসলাম যেভাবে এবং যে পদ্ধতিতে ‘বিসমিল্লাহ’ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে, সেভাবে ব্যবহার করাই হবে খাঁটি মুসলমানের পরিচয়। 

লেখক : সাংবাদিক

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads