• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ধর্মীয় জ্ঞান বনাম জাগতিক জ্ঞান

আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জ্ঞানকে বলা হয় ইলম বা ধর্মীয় শিক্ষা

ছবি : ইন্টারনেট

ধর্ম

ধর্মীয় জ্ঞান বনাম জাগতিক জ্ঞান

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ১৯ জুলাই ২০১৮

পবিত্র কোরআনের সুরা আলাকের প্রথম আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করলেন, ‘পড়ো! তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ আবার সুরা বাকারার ৩১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহ আদমকে সব বস্তুর নাম শিক্ষা দিলেন।’ উল্লিখিত আয়াত ছাড়াও পবিত্র কোরআনের যেসব স্থানে জ্ঞান ও শিক্ষা নিয়ে আলোচনা এসেছে কোনো স্থানেই জ্ঞান বা শিক্ষাকে কোনো ভাগে বিভক্ত করা হয়নি। কোথাও জ্ঞান বা শিক্ষার মাঝে ধর্মীয় ও জাগতিক শিরোনামের বিভক্তিরেখা টানা হয়নি। প্রশ্ন হলো- ধর্মীয় ও জাগতিক শিক্ষার নামে জ্ঞানের ভূখণ্ডে এই বিভেদরেখা তাহলে টানল কে?

আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জ্ঞানকে বলা হয় ইলম বা ধর্মীয় শিক্ষা। আর জাগতিক প্রয়োজন পূরণের উপযোগী জ্ঞান-বিদ্যাকে বলা হয় জাগতিক শিক্ষা। কোনো জ্ঞানকেই অবহেলা করার উপায় নেই। সুরা বাকারার ২০১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে প্রভু! আমাদের দুনিয়াতে ‘হাসানা’ দান করুন এবং আখিরাতে ‘হাসানা’ দান করুন।’ সুতরাং দুনিয়া এবং আখিরাত- উভয় জগতের সফলতা ও কামিয়াবির কথা চিন্তা করে সমানভাবে ধর্মীয় ও জাগতিক জ্ঞানকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, দুনিয়াকে আল্লাহ উপকরণের জগৎ বানিয়েছেন। এখানে মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজন রয়েছে। আর প্রয়োজন পূরণের জন্য এবং অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে আঞ্জাম দেওয়ার জন্য জাগতিক জ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই। ইমাম গাজ্জালীর (র.) মতে, পার্থিব জীবনযাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় ও কল্যাণকর জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে ইসলামের অনুমতি রয়েছে (ইহইয়াউ উলুমিদ দ্বীন)।

মুসলিম হিসেবে ধর্মীয় ও জাগতিক জ্ঞানের বিকল্প কল্পনা করা অসম্ভব। পরকালে বিশ্বাসী কোনো মুসলমানের পক্ষে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মানসিকতা ত্যাগ করা সম্ভব নয় এবং জগতের প্রয়োজন ও নিয়মকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। সুতরাং যার পক্ষে উল্লিখিত দুটি বিষয় অস্বীকার করা সম্ভব নয়; তার পক্ষে ধর্মীয় ও জাগতিক জ্ঞান অর্জনের প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করাও অসম্ভব। সব জ্ঞানই জ্ঞান। হোক সেটা ধর্মীয় বা জাগতিক। কোনো জ্ঞানকেই অবহেলা করা যাবে না। তবে যে জ্ঞান বা কৌশল মানুষকে অকল্যাণ বা ক্ষতির দিকে ধাবিত করে, তা শিক্ষাগ্রহণ বা চর্চা করা হারাম। মূল কথা হলো- জ্ঞানের বিভক্তি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে এমন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত, যেখানে ধর্মীয় ও জাগতিক জ্ঞানের সুসমন্বয় ঘটবে।

লেখক : সাংবাদিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads