• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
জাহান্নামের পরিচয় ও সংখ্যা

জাহান্নামের আগুন

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

জাহান্নামের পরিচয় ও সংখ্যা

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ০৫ আগস্ট ২০১৮

বিচিত্র ধরনের অসহনীয় শাস্তি-কষ্ট-বেদনা ও যাতনার বিশাল কারাগারের নাম জাহান্নাম। জাহান্নামের আজাবের কারণে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এমনকি দেহের মধ্যে থাকা বিভিন্ন বস্তুর বিকৃতি ঘটবে; কিন্তু তীব্র যন্ত্রণাদায়ক কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার বা পালিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় থাকবে না। চিরস্থায়ী শাস্তির স্থান জাহান্নাম। সুখ-শান্তি, আরাম-আয়েশ নামের কোনো বিষয় থাকবে না জাহান্নামে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর তুমি কি জানো জাহান্নাম কী? তা শান্তিতে থাকতে দেয় না, আবার ছেড়েও দেয় না। চামড়া ঝলসে দেয়। উনিশজন ফেরেশতা তার প্রহরী হবে’ (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত ২৭-৩০)। এই মর্মে আরো ইরশাদ হয়েছে, জাহান্নামীরা যখন নিক্ষিপ্ত হবে, তখন তারা তর্জন-গর্জন শুনতে পাবে এবং জাহান্নাম উথাল-পাতাল করতে থাকবে, ক্রোধ-আক্রোশে এমন অবস্থা ধারণ করবে, মনে হবে তা গোস্বায় ফেটে পড়বে (সুরা মুলক, আয়াত ৭-৮)। সুরা নাবায়ে বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই জাহান্নাম একটি ঘাঁটি। আল্লাহদ্রোহীদের আশ্রয়স্থল। সেখানে তারা যুগ যুগ ধরে অবস্থান করবে (সুরা নাবা, আয়াত ২১-২৩)।

মহান আল্লাহ বলেন, জাহান্নামের সাতটি স্তর আছে। ভিন্ন ভিন্ন দলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন জাহান্নাম নির্ধারিত (সুরা আল-হিজর, আয়াত ৪)। জাহান্নাম পরলোকের এমন একটি বিশাল এলাকা, যেখানে বিভিন্ন ধরনের শাস্তির জন্য ভিন্ন ভিন্ন এলাকা নির্ধারিত থাকবে। সেগুলো হলো— ১. হাবিয়া, ২. জাহীম, ৩. সাকার, ৪. লাজা, ৫. সাঈর, ৬. হুতামাহ্. ৭. জাহান্নাম।

বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীরা শাস্তি ভোগ করবে। যেমন— কাফের, মুশরিক, ব্যভিচারী, সুদখোর, ঘুষখোর ইত্যাদি সবার জন্যই ভিন্ন ভিন্ন স্তরে শাস্তি নির্দিষ্ট আছে। আবার প্রতিটি স্তরের অনেকগুলো ঘাঁটি আছে। যথা— গাছ্ছাক হলো একটি হ্রদ যা জাহান্নামীদের রক্ত, ঘাম ও পুঁজ ইত্যাদি প্রবাহিত হয়ে সেখানে জমা হবে। গিসলিন— এটা হচ্ছে জাহান্নামীদের মল-মূত্র জমা হওয়ার স্থান। জাহান্নামীরা যখন খুব ক্ষুধা-তৃষ্ণা অনুভব করবে তখন উপরোক্ত দুই জায়গা থেকে পান করতে দেওয়া হবে। তাছাড়া ‘তিনাতুল খাবাল’ নামক বিষ ও পুঁজে পরিপূর্ণ আরেকটি কূপের কথাও হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। সাউদ— এটা তিনাতুল খাবালের পাড়ে অবস্থিত একটি বিশাল পাহাড়। একশ্রেণির জাহান্নামীকে ওই পাহাড়ের উপরে উঠিয়ে সজোরে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলা হবে, পুনরায় উঠানো হবে এবং ফেলা হবে। এভাবে শাস্তি দেওয়া হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সহসাই আমি তাকে সাউদ নামক পর্বতে চড়াবো’ (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত ১৭)। জুববুল হজন— এটা জাহান্নামীদের আরেকটি ঘাঁটি। এখানে রিয়াকার ও অহংকারী লোকদের শাস্তি দেওয়া হবে। গাই— এটা জাহান্নামের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর জায়গা। কেননা ‘গাই’য়ের ভীতিজনক হুংকার শ্রবণে জাহান্নামের অন্যান্য স্থান প্রতিদিন ‘গাই’ থেকে চারশ’ বার আশ্রয় প্রার্থনা করে।

মিরাজ রহমান

লেখক : আলেম ও সাংবাদিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads